× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধে সুবিধা আদায়ে অপ্রস্তুত বাংলাদেশ

শেষের পাতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৯ নভেম্বর ২০১৮, সোমবার

সাম্প্রতিককালে চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধে হুমকি-পাল্টা হুমকি চলছে। বৈশ্বিক এই বাণিজ্য যুদ্ধে সুবিধা আদায়ে অপ্রস্তুত বাংলাদেশ। তাই বিশ্ব বাণিজ্য যুদ্ধে যে সংকট সৃষ্টি হবে তা থেকে উত্তরণে মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি, অবকাঠামো এবং তথ্য-প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অডিটরিয়ামে ডিসিসিআই এবং বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট যৌথভাবে আয়োজিত ‘বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধ এবং বাংলাদেশে-এর প্রভাব’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শুভাশীষ বসু।

বিশেষ অতিথি ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য। ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশনের সিনিয়র ইকোনোমিস্ট ড. এম মাশরুর রিয়াজ, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সদস্য ড. মোস্তফা আবিদ খান, ঢাকা চেম্বারের পরিচালক ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশিদ আলোচনায় অংশ নেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটেরপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আহমেদ। বক্তারা যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের অন্য দেশগুলো একে অপরের পণ্যের ওপর ট্যারিফ ও পাল্টা ট্যারিফ আরোপের ফলে যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে তাতে বৈশ্বিক জিডিপির ০.৮১ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সম্ভাবনা রয়েছে দীর্ঘ বৈশ্বিক মন্দার। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন তারা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শুভাশীষ বসু বলেন, সমপ্রতি শুরু হওয়া বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। চীনের সানসেট ইন্ডাস্ট্রিকে স্থানান্তরের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে উপযোগী গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপনের জন্য বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন, মানবসম্পদের দক্ষতা বাড়ানো এবং তথ্য-প্রযুক্তি খাতের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বেসরকারি খাতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অতিদ্রুত এগুলোর বাস্তবায়ন সম্ভব হলে, আমরা আরো বেশি হারে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হব। তিনি বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন করা হলে দেশের শিল্প-কারখানার কাঁচামাল আমদানি নির্ভর হওয়ার কারণে পুরো ব্যবসায়িক কার্যক্রমে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এ থেকে আমাদের উত্তরণের জন্য উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর আরো বেশি হারে মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।

ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য বলেন, মূলত চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ব্যবধান কমানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র সমপ্রতি চীনের অ্যালুমিনিয়াম ও স্টল পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করে। যার ফলে দুটো বৃহৎ রাষ্ট্রের মধ্যে সৃষ্ট বাণিজ্য যুদ্ধ হতে বাংলাদেশকে সুবিধা নিতে হলে সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয়ে এখনই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, আশির দশকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলোর চীনে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্তের পেছনে তৎকালীন সময়ে চীনের অবকাঠামো, দক্ষ মানবসম্পদ ও তথ্য-প্রযুক্তি খাতের উদ্ভাবন প্রভৃতি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছিল এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে রয়েছে।
এর আগে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, চীনের সানসেট ইন্ডাস্ট্রিকে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উৎকৃষ্ট স্থান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এজন্য অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন, বাণিজ্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি এবং পরিকল্পিত বাজারজাতকরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

ডিসিসিআইর পরিচালক হুমায়ুন রশিদ বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিযোগিতার ফলে তেল ও ডলারের মূল্য বাড়ার সম্ভাবনা পাশাপাশি ব্যাংকঋণের উচ্চহারের ফলে আমাদের পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে এবং এর ফলে আমাদের ব্যবসায়ীরা বৈশ্বিক বাজারে সক্ষমতা হারাবে।
বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সদস্য ড. মোস্তফা আবিদ খান বলেন, বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে চীন হতে ইলেকট্রিকাল ও ইলেকট্রনিক্স খাতের কারখানা স্থানান্তরের সম্ভাবনা রয়েছে এবং এক্ষেত্রে ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়া আগ্রাধিকার পাবে। কারণ হিসেবে তিনি দুটো দেশের দক্ষ মানবসম্পদ, অবকাঠামো এবং প্রযুক্তির অগ্রগতিকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশের মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং উৎপাদিত পণ্যের ‘রুলস অফ অরিজিন’ বিষয়ক জটিলতা নিরসনের জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।

ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশনের সিনিয়র ইকোনোমিস্ট ড. এম মাশরুর রিয়াজ বলেন, চীন মোট রপ্তানির ৩০ শতাংশ অন্য দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে মিটিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে চীনের রপ্তানি কমে গেলে আমাদের দেশের রপ্তানি কমার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর