নিউ ইয়র্কের সাবেক মেয়র ও ধনকুবের মাইকেল ব্লুমবার্গ ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮০ কোটি ডলার বা প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা দান করবেন। এই অর্থ দিয়ে নি¤œ ও মধ্য আয়ের শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। নিউ ইয়র্ক টাইমসে এক নিবন্ধে তিনি এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি।
ব্লুমবার্গ নিজেও জন্স হপকিন্সে পড়াশুনা করেছেন। ১৫০০ কোটি টাকার এই অনুদান যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এককভাবে সর্ববৃহৎ অনুদান।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডের বাল্টিমোরে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই অনুদানের ফলে আগামী বসন্ত থেকে যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হবেন, তাদের আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজে ‘শিক্ষার্থী ঋণে’র বিষয়টি উঠে যাবে। এর পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বৃত্তি প্রদান করবে, যা পরে পরিশোধ করতে হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট রনাল্ড ড্যানিয়েলস বলেছেন, ব্লুমবার্গের এই অনুদানের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুধু মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে। এক্ষেত্রে তাদের আর্থিক সামর্থ্য কোনো প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠবে না।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘হপকিন্স এমন এক উপহার পেয়েছে, যা নজিরবিহীন।’ তিনি বিবৃতিতেও এ-ও স্মরণ করেছেন যে, আমেরিকার প্রখ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয় ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তৎকালীন স্থানীয় বণিক জন্স হপকিন্সের দেওয়া ৭০ লাখ ডলারের অনুদানে। তখনও এই অঙ্ক ছিল তৎকালীন সময়ের সর্বোচ্চ।
ব্লুমবার্গের আগে ধনকুবের বিল গেটস ও তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটসের ফাউন্ডেশন থেকে গেটস মিলেনিয়াম স্কলার্স প্রকল্প চালু করা হয় ১৯৯৯ সালে।
এই প্রকল্পের আওতায় ২০ বছরে ১০০ কোটি ডলার বা ৮৩১৭ কোটি টাকা শিক্ষার্থীদের বৃত্তি হিসেবে প্রদান করার কথা। এটিই ছিল এতদিন আমেরিকার সর্বোচ্চ শিক্ষা অনুদানের অঙ্ক।
ব্লুমবার্গ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমেরিকা তখনই সেরা হয়ে উঠে যখন আমরা মানুষকে তার কাজের গুণের ভিত্তিতে পুরষ্কৃত করি, তাদের পকেটের আকার দেখে নয়। কাউকে তার অর্থ প্রদানের সামর্থ্যের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেওয়া সমান সুযোগের ধারণাকে খর্ব করে।’
৭৬ বছর বয়সী ব্লুমবার্গ বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি। তিনি বৈশ্বিক আর্থিক সেবা ও মিডিয়া কোম্পানি ব্লুমবার্গ এলপি’র প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ১৯৬৪ সালে হপকিন্স থেকে পাস করেন। ২০০২ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি নিউ ইয়র্কের মেয়র ছিলেন। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে পারেন বলে কানাঘুষা রয়েছে। এমনকি ২০২০ সালে ডেমোক্রেটিক দল থেকে লড়তে পারেন এমন সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে তার নাম রয়েছে।