নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর আগেই সরকারি দল কর্তৃক বেপরোয়াভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। গতকাল জোটের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন ৮টি দল নিয়ে গঠিত বাম জোটের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতারা।
সভায় জোটের নেতারা বলেন, সরকারি দল ধারাবাহিকভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছে। তারা নানাভাবে সরকারি নানা সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগাচ্ছেন। এমনকি জনগণের টাকায় ‘থ্যাংকস টু পিএম’ শিরোনামে শেখ হাসিনার পক্ষে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর আগেই অনেক প্রার্থীর প্রচারণা খরচ, নির্ধারিত সর্বোচ্চ নির্বাচনী ব্যয়কে ছাড়িয়ে গেছে। সরকারি দলের প্রার্থীদের জমকালো বিলবোর্ড, ফেস্টুন, ব্যানার, পোস্টার ইত্যাদি প্রচারসামগ্রী এখনো সরানো হয়নি। বারবার বলা সত্ত্বেও, আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
উল্টো শেখ হাসিনার সরকারকে পরোক্ষভাবে মদত দিয়ে যাচ্ছে ইসি। নির্বাচন কর্মকর্তাদের ওপর পুলিশের বেআইনিভাবে খবরদারির ব্যাপারেও নীরব ইসি বলে জানান তারা। তাই এই বাম নেতারা প্রশ্ন করে বলেন, আসলে পুলিশ ইসির অধীনে কাজ করছে, নাকি ইসি পুলিশের অধীনে কাজ করছে? বাম জোটের নেতারা আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগে থেকেই জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছে। ফলে তাদের উচিত কাজ হচ্ছে, জনগণের মনে ন্যূনতম গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা। তার জন্য সরকার ও সরকারি দলের তল্পিবাহক না হয়ে, ইসি’কে নিরপেক্ষ ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করতে হবে। কিন্তু অবাধ নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরির ন্যূনতম চেষ্টাও ইসি’র কর্মকর্তাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না বলেও জানান এই বাম নেতারা। আর এভাবে ইসির প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা অব্যাহত থাকলে, ২০১৪ সালের মতো এবারের নির্বাচনও কার্যত একটা প্রহসনে পরিণত হবে বলে জানান বাম গণতান্ত্রিক জোটের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এই নেতারা।
জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতনসহ প্রমুখ।