মানুষের সুখ-দুঃখে নিজেকে অকাতরে বিলিয়ে দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি। সমাজসেবা ও মানবতার কল্যাণে ব্রত নিয়ে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছেন। মানুষের সমস্যার কথা শুনলে সবার আগে এগিয়ে আসেন। নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত অর্থ পুরোদমে সাংসারিক ব্যয় না মিটিয়েই তিনি মানব সেবায় ব্যয় করে যাচ্ছেন। পিতার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান থেকে এযাবৎ অসংখ্য যুবককে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তুলেছেন। কিন্তু তার প্রচেষ্টায় অনেকেরই ভাগ্যের পরিবর্তন হলেও নিজের ভাগ্যের পরিবর্তনের কোনো লক্ষ্য নেই তার। পরের তরে নিজেকে বিলিয়ে দেয়া ওই যুবকের নাম সাদিকুর রহমান ছাদেক। তিনি ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের বরায়া কাজিরগাঁও গ্রামের আবদুস শহিদের ছেলে।
১৯৭৩ সালে সাদিকুরের পিতা উপজেলার তাজপুর কদমতলা এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘শহিদ মোটরস্ ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা প্রবাসে পাড়ি জমালেও পিতার নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানের হাল ধরে দেশেই পড়ে আছেন তিনি। পিতার মতোই তার সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে রয়েছে গভীর মিতালি। সাদিকুর পেশায় একজন মোটরসাইকেল ইঞ্জিনিয়ার হলেও সেবামূলক কর্মে তিনি সবার প্রিয় পাত্র ও আস্থাভাজন হয়ে উঠেছেন। এক মেয়ে দুই ছেলের জনক সাদিকুর রহমান। পাঁচ ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। এ সমাজকর্মী বিশ্বাস করেন তারুণ্যের অদম্য ইচ্ছাশক্তিই হতে পারে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের হাতিয়ার।
সাদিকুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি মানবজমিনকে জানান, ২০০৭ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সিলেট জেলা মোটরসাইকেল ইঞ্জিনিয়ার এসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠন। এটি ২০১০ সালে সমাজসেবা কার্যালয় ও ২০১৩ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন লাভ করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এই সংগঠনের মাধ্যমে সেবামূলক বিভিন্ন কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ইতিমধ্যে একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছেন। তার প্রচেষ্টায় বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরাধীন ‘কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ জোরদার করণ’ প্রকল্পের আওতায় উপজেলা পর্যায়ে একাধিক মেয়াদে মোটরসাইকেল মেরামত বিষয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ‘কর্ম-সেবা, ঐক্য এই প্রতিপাদ্য বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে সংগঠনটির কার্যক্রম পরিচালনা করছেন’ বলে প্রশাসনিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি প্রদান, বাল্যবিবাহ্ প্রতিরোধ, নিজ অর্থায়নে উপজেলার সরকারি-বেসকারি একাধিক প্রতিষ্ঠানের সামনে পরিচিতিমূলক সাইনবোর্ড স্থাপন এবং দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত একাধিক রোগীকে আর্থিক অনুদান প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, পিতার আদর্শকে লালিত করে নিজের সাধ্য অনুযায়ী মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখার চেষ্টা করছি। মানুষের জন্য আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।