× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

‘পা দিয়ে লিখতে লিখতে আমার অভ্যাস হয়ে গেছে’

রকমারি

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
২০ নভেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার

দুই হাত নেই। বাম পা দিয়ে লিখে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে সিয়াম। ইচ্ছা আর মনোবল নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে চায় সে। জন্মের পর থেকে জীবন সংগ্রামে নেমেছে হতদরিদ্র পরিবারের প্রতিবন্ধী শিশুটি। মনে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। তার ইচ্ছা, উচ্চ শিক্ষা লাভ করে সরকারি বড় কোনো কর্মকর্তা হবে।

সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া গ্রামের দিনমুজুর দম্পত্তি জিন্না মিয়া ও জোসনা বেগমের ছেলে সিয়াম। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে সিয়াম কনিষ্ঠ। জন্ম থেকেই তার দুই হাত নেই।
কিন্তু থেমে নেই তার পড়ালেখা ও খেলাধুলা। সে এবার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া ব্র্যাক শিশু নিকেতন স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

স্থানীয় মহেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিতে দেখা গেছে তাকে।
পরীক্ষা শেষে সিয়াম জানায়, ‘আমার দুই হাত না থাকলেও আমার কোনো সমস্যা হয় না। পা দিয়ে লিখতে লিখতে আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। আমার সব কাজ আমি নিজেই করতে পারি। আমি লেখাপড়া করতে চাই। লেখাপড়া করে সরকারি বড় একজন কর্মকর্তা হতে চাই। কর্মকর্তা হয়ে দেশের সেবা করতে চাই।’

সিয়ামের মা জোসনা বেগম বলেন, ‘লেখাপড়ার জন্য সিয়ামকে কখনো বলতে হয় না। নিজের ইচ্ছায় সব সময় পড়ালেখা করে। কিছু কিছু কাজ ছাড়া সব কাজ নিজেই করতে পারে। অর্থের অভাবে ছেলেকে কখনো ভালো কিছুই খাওয়াতে বা পড়াতে পারি না। ওর নামে একটা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড পাইছি। সেই টাকায় কিছুই হয় না। সরকারি ভালো কোনো সহায়তা না দিলে সিয়ামের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না।’

এ ব্যাপারে উদনাপাড়া ব্র্যাক শিশু নিকেতনের প্রধান শিক্ষিকা জাকিয়া সুলতানা জানান, সিয়াম প্রথম শ্রেণি থেকেই তাদের স্কুলে পড়ালেখা শুরু করে। পরিবারের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মাঝ পথে বন্ধ হয়ে যায় তার পড়ালেখা। প্রতি মাসে ২৫০ টাকা বেতনও দিতে পারতো না। পরে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বেতন মওকুফ করে আবার পড়ালেখার ব্যবস্থা করা হয়। অন্যান্য শিক্ষার্থীর চেয়ে তার মেধা ভালো। সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি বা সরকারি কোনো সহায়তা পেলে সে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে।

এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে সেটা আমার জানা ছিলো না। আমি খোঁজ নিয়ে তার সহায়তার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর