লড়াইটা ছিল বসুন্ধরা কিংসের ফরোয়ার্ডদের সঙ্গে শেখ রাসেলের ডিফেন্ডারদের। ম্যাচে হয়েছেও তাই। শুরু থেকে একের পর এক আক্রমণ করেও গোল পাচ্ছিল না বসুন্ধরা কিংস। অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় নবাগতরা অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে লক্ষ্যভেদ করলেন বদলি ফরোয়ার্ড তৌহিদুল আলম সবুজ। কক্সবাজারের এই ফরোয়ার্ডের একমাত্র গোলেই শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে হারিয়ে প্রথমবার ফেডারেশন কাপ খেলতে এসেই ফাইনালে উঠলো বসুন্ধরা কিংস। আগামী শুক্রবার শিরোপা লড়াইয়ে প্রতিযোগিতার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেডের মুখোমুখি হবে তারা।
গ্রুপ ‘ডি’তে থাকা বসুন্ধরা কিংস দুই জয় ও এক ড্র’য়ে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই কোয়ার্টারে পা রেখেছিল।
শেষ আটের লড়াইয়ে তারা পরাস্ত করেছিল টিম বিজেএমসিকে। ৫-১ গোলে পাওয়া ওই জয়ের পর বেশ আত্মবিশ্বাসী অস্কার ব্রোজেনের শিষ্যরা। গতকাল মাঠেও তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। শুরু থেকেই প্রতিপক্ষ শেখ রাসেলকে চেপে ধরেছিল। বল মাঠে গড়ানোর ৮ মিনিটেই গোলের সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল বসুন্ধরা। কিন্তু দলকে গোল উপহার দিতে ব্যর্থ হন মাহবুবুর রহমান সুফিল। ছোট বক্সের সামনে থেকে আলতো টোকায় গোলরক্ষক আশরাফুল রানার মাথার উপর দিয়ে বল তুলে দিয়েছিলেন এ ফরোয়ার্ড। কিন্তু রানার চোখ ফাঁকি দিতে পারেননি। ফিরিয়ে দেন দারুণভাবে। ফিরতি বলে আবারো শট নেন মাসুক মিয়া জনি। সেই বলটি একেবারে গোল লাইন থেকে প্রতিহত করে বসুন্ধরার সমর্থকদের হতাশ করেন শেখ রাসেলের নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার ওদুকা এলিসন। ১৫ মিনিট পর আবারো সুযোগ হাতছাড়া করে বসুন্ধরা কিংসের। এবার বাম প্রান্তে ডি বক্সের ভেতর থেকে মিডফিল্ডার মো. ইব্রাহিমের নেয়া শট শেখ রাসেল গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম ফিস্ট করে প্রতিহত করলে গোলবঞ্চিত হয় দলটি। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে পরিকল্পিত একটি আক্রমণ রচনা করেছিল শেখ রাসেল কেসি। কিন্তু ফরোয়ার্ড বিপলু আহমেদের নেয়া হেড বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর চোখ ফাঁকি দিতে পারেননি। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে বসুন্ধরার স্প্যানিশ ডিফেন্ডার জর্জ গুতরের দূরপাল্লার জোরালো শট শেখ রাসেলের গোলরক্ষক আশরাফুল রানা মিস করলেও ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে আবারো হতাশ হতে হয় নবাগত দলটিকে। এবং গোল শূন্যভাবেই শেষ হয় মূল সময়ের খেলা। অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচের ভাগ্য গড়ায়। এ পরীক্ষাতেও যেন ভাগ্য সায় দিচ্ছিল না। শেখ রাসেলের জমাট রক্ষণে কিছুতেই ফাটল ধরাতে পারছিলেন না কলিন্ড্রেস-মতিন মিয়ারা। বারবার হতাশ হতে হচ্ছিল তাদের। কোচের কোনো টোটকাও যেন কাজে আসছিল না। অবশেষে অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগে শেখ রাসেলের জালে বল পাঠিয়ে মৌসুমের প্রথম আসরের ফাইনালে কিংসকে নিয়ে যান তৌহিদুল আলম সবুজ (১-০)। দলের অধিনায়ক কলিন্ড্রেসের প্রথম প্রচেষ্টায় নেয়া শটটি পোস্টে লেগে ফিরে আসলেও ফিরতি বলে ভুল করেননি সবুজ। প্লেসিংয়ে বল জালে জড়িয়ে জার্সি খুলে উন্মত্ত উৎসবে মেতে উঠেন। তার সঙ্গে নেচে উঠে পুরো গ্যালারি। এই একটি গোলের জন্য কতটা যে হাহাকার করতে হয়েছে তাদের, সেটা উৎসব দেখেই বুঝা যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলে জয় দিয়ে প্রথমবারের মতো ফেডকাপের ফাইনালে নাম লেখায় বসুন্ধরা কিংস।