নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে ২ জনকে মনোনয়ন দেওয়ায় এই আসনের নেতাকর্মীরা পড়েছেন বিপাকে। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রিয়মুখ নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক নাটোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম বকুলকে প্রথমে মনোয়ন দেওয়া হয়। বাদ পড়েন বর্তমান সংসদ সদস্য ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ। কিন্তু হঠাৎ করেই গত ২৭শে নভেম্বর লে. কর্নেল (অব.) রমজান আলীকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। দু’জন প্রার্থী গত ২৮শে নভেম্বর মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে দু’জন প্রার্থীই মনোনয়নপত্র জমা দেন।
দলীয় সুত্র জানায়, মনোনয়ন ঘোষণার বহু আগে থেকেই সার্বক্ষণিক মাঠে থেকে সভা, সমাবেশ, উঠোন বৈঠক করে আসছিলেন শহিদুল ইমলাম বকুল। তিনি বাগাতিপাড়া লালপুর এলাকায় একটি জনপ্রিয় মুখ। তরুণ নেতা হিসেবে রাজনীতিতে তার রয়েছে বহুল পরিচিতি।
মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই বকুল লালপুর-বাগাতিপাড়া উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন। তার সঙ্গে দেখা গেছে অসংখ্য কর্মী-সমর্থক। অপরদিকে লে. কর্নেল (অব.) রমজান আলী লালপুর বাগাতিপাড়া অঞ্চলে তেমন কোনো কর্মী-সমর্থক নেই। কিন্তু দু’জনকে মনোনয়ন দেওয়ায় নেতা কর্মীরা পড়েছেন বিপাকে। লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সিটিং এমপি মনোনয়ন না পেলেও বকুল যেহেতু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে উঠে আসা একজন তরুণ নেতা হিসেবে দলীয় নেতা-কর্মীরা তাকে স্বাগত জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই লালপুর বাগাতিপাড়া অঞ্চলের নেতা কর্মীরা সকল বিভদে ভুলে বকুলকে সংগে নিয়ে নৌকার লড়াই শুর করেছেন। কিন্তু গত ২৯ নভেম্বর লে. কর্ণেল (অব.) রমজান আলীকে এ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়। তিনি বলেন, রমজান সাহেব রাজনৈতিক কোন কর্মকাণ্ডে ছিলেন না। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নেই সম্পর্ক। ফলে তাকে নিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করা অনেক কঠিন হবে। অপরদিকে দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত শহিদুল ইসলাম বকুল এলাকায় জনপ্রিয় মুখ। তিনি নির্বাচনে থাকলে দলের সকল নেতা-কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে জয়লাভ করা সহজ হবে। তিনি বলেন, আরো বলেন দুজন প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ায় দলের ভিতরে এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। নেতা-কর্মীরা হতাশায় ভুগছেন। এটির দ্রুত সুরাহা প্রয়োজন। বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, আমরা বকুলকে মনোনয়ন দেওয়ার পরে তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করেছি। নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষদের ভোট দেওয়ার জন্য আহবান জানিয়েছি। এখন যদি প্রার্থিতা পরিবর্তন হয় সেক্ষেত্রে দলীয় সিদ্ধান্ত আমাদের মেনে নিতে হবে। তবে নেতা-কর্মীদের ওপর ও বিরুপ প্রভাব পড়বে। জেলা আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক মাজেদুর রহমান চাঁদ বলেন, একজনকে মনোনয়ন দিলে ভাল হতো। এখন নেতা-কর্মীরা অনেকটা দ্বিধাাগ্রস্ত। অপরদিকে আওয়ামী লীগ কর্মীরা জানান, তারা বকুলের পক্ষে মাঠে নেমে পড়েছেন। এখন পিছু হটার কোনো জায়গা নেই। শহিদুল ইসলাম বকুল দাবি করেন, তার পক্ষে লালপুর-বাগাতিপাড়া এলাকায় নৌকার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তার মনোনয়ন বহাল থাকলে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই আসন উপহার দিতে পারবেন বলে শতভাগ আশাবাদী। অপরদিকে লে. কর্নেল অব. রমাজান আলী জানান, তিনি ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। চাকরি থেকে অবসরের পর থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন। তার নির্বাচনী এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরাসহ সাধারণ মানুষ তার সঙ্গে রয়েছেন। দল তাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিলে তিনিও বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।