গার্মেন্ট শিল্পে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা করছে সরকার। নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল বড় ধরনের অরাজকতার ছক কষছে। দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এমনটাই জানিয়েছে সরকারকে। সরকার মনে করছে, নিরীহ শ্রমিকদের উত্তেজিত করতে বেশকিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা, কয়েকটি দেশের দূতাবাস এ বিষয়ে কলকাঠি নাড়ছে। এ জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা গেল সপ্তাহে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়।
ওই প্রতিবেদনে গার্মেন্ট শিল্প নিয়ে ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরা হয়। বলা হয়, বেশকিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিদেশি রাষ্ট্রদূত তৈরি পোশাক খাত অস্থিতিশীল করে তুলতে কাজ করছে। তারা ট্রেড ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে শ্রমিক নেতাদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছে।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এসব তথ্য সরকারের কাছে পৌঁছানোর পর পরই শ্রমঘন এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নিয়োগ করা হয়েছে। আরো কয়েকটি এলাকার গার্মেন্ট কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এদিকে গতকাল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে গার্মেন্ট শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠক শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে একটি মহল গার্মেন্ট শিল্পে অসন্তোষ সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। বিশৃঙ্খলা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের তিনটি গার্মেন্ট কারখানায় তিন মাস বেতন-ভাতা না হওয়ায় এবং গাজীপুরের একটি কারখানা হঠাৎ বন্ধ করে দেয়ায় সেখানে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়েই জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
এ সভায় গাজীপুরের মেয়র, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র সভাপতিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য গাজীপুরে ১০ প্ল্যাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে বিজিবি সদস্যদের টহল দিতে দেখা যায়। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, গাজীপুর একটি শিল্পসমৃদ্ধ জেলা। এখানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে এবং পোশাক শ্রমিক অসন্তোষসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গাজীপুরে ১০ প্ল্যাটুন (২০০) বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে আরো বিজিবি মোতায়েন করা হবে।