চীনের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের একজন উচ্চপদস্থ নির্বাহীকে ওয়াশিংটনের অনুরোধে কানাডায় আটকের পর যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্বের বিভিন্ন পুঁজিবাজারে ধস নেমেছে। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস-এর প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ওয়ানঝু মেং’কে গ্রেপ্তার চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নয়া বিরোধের ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। অথচ, মাত্র দিনকয়েক আগেই শনিবার দুই দেশ আর্জেন্টিনায় ৯০ দিনের জন্য বাণিজ্য যুদ্ধ স্থগিতে সম্মত হয়েছে। একই দিনই ওয়ানঝুকে আটক করা হয়।
ধারণা করা হছে, বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে বৈশ্বিক প্রযুক্তি সরবরাহ চেইনে বড় ধরণের প্রভাব পড়বে।
ওয়ানঝুকে গ্রেপ্তারের খবরে বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শুধু শুল্ক নয় এবার প্রযুক্তিগত আধিপত্য নিয়েও বিরোধের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
ফলশ্রুতিতে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক পুঁজিবাজার সূচকে সামগ্রিকভাবে দরপতন হয়েছে। লন্ডনে পুঁজি বাজার ৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
কানাডায় ওয়ানঝুকে গ্রেপ্তারের পর তাকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হতে পারে। হুয়াওয়ে ইরানের ওপর আরোপিত মার্কিন অবরোধ লঙ্ঘণ করেছেন কিনা তা নিয়ে তদন্ত চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। তারই অংশ হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার কানাডার আইন মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১লা ডিসেম্বর ভ্যাংকোভার থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, তাকে যুক্তরাষ্ট্র বিচারের জন্য চেয়েছে। শুক্রবার তার জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা। তবে মেং আদালতের কাছে তথ্য প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়ায় আর বিস্তারিত প্রকাশ করতে রাজি হয় নি আইন মন্ত্রণালয়।
বিভিন্ন সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন কর্তৃপক্ষ অন্তত ২০১৬ সাল থেকে হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে আসছে। হুয়াওয়ে আবার বিশ্বের শীর্ষ টেলিকম যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারী। সংস্থাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমেরিকার অনেক পণ্য তারা মার্কিন রপ্তানি ও নিষেধাজ্ঞা আইন লঙ্ঘণ করে ইরান ও অনেক দেশে রপ্তানি করেছে।
এছাড়াও ওয়াশিংটন সহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, চীন সরকারের সঙ্গে হুয়াওয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় সংস্থাটির পণ্য চীন সরকারের গুপ্তচরবৃত্তির হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।
চীন সরকার কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে কেন ওয়ানঝুকে আটক করা হয়েছে। দেশটি তার মুক্তিও চেয়েছে।
গত বছর ৯৩০০ কোটি ডলার আয় করা হুয়াওয়ে তাদের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তার গ্রেপ্তারের খবর নিশ্চিত করেছে। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ওয়ানঝু কোনো আইন ভঙ্গের সঙ্গে জড়িত বলে তাদের জানা নেই। আর হুয়াওয়ে সব ধরণের প্রযোজ্য আইন মেনে চলে।