× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আফ্রিকায় সখীপুরের ১১০ যুবক পুলিশের হেফাজতে / স্বজনদের আহাজারি

বাংলারজমিন

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
৮ ডিসেম্বর ২০১৮, শনিবার

টাঙ্গাইলের সখীপুর থেকে ১১০ জন যুবককে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর নাম করে পাচার করেছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। এ ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পর সংঘবদ্ধ চক্রের মহিলাসহ ছয়জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে সখীপুর থানা পুলিশ। অপর দিকে আফ্রিকা মহাদেশের ভানুয়াতু শহর থেকে ওই দেশের পুলিশ স্বামী-স্ত্রীসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানান সখীপুর থানা পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজনরা। পাচার হওয়া ১০৭ জন যুবক আফ্রিকা মহাদেশের ভানুয়াতু নামের একটি শহরে পুলিশের হেফাজতে আছে বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা। পুলিশের হেফাজত থেকে পাচার হওয়া নাছির উদ্দিন মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদকে জানায়, এখানে থাকা খাওয়া খুবই কষ্টকর। প্লিজ ভাই আমাদের বাঁচান, বিষয়টি মিডিয়ায় প্রচার করেন। আমাদের সঙ্গে পাসপোর্ট টাকা-পয়সা কিছুই নেই। এদিকে তাদেরকে ফিরে পেতে রাত-দিন আহাজারি করছেন আর অপেক্ষার প্রহর গুনছেন স্বজনরা।   
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পারিবার সূত্রে জানা যায়, অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে পঞ্চাশ থেকে এক লাখ টাকা বেতন দেয়া হবে বলে টাঙ্গাইলের সখীপুর, কালিহাতী, ময়মনসিংহের ভালুকা, গাজীপুরের জয়দেপুর এলাকার শত শত লোকজনকে প্রলোভন দেখায় এই প্রতারক চক্র।
এরা অস্ট্রেলিয়ার নাম বলে প্রায় এক বছরের মধ্যেই ১১০ জন যুবককে আফ্রিকা মহাদেশের ভানুয়াতু শহরে পাচার করে। এদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১২ থেকে ১৫ লাখ এবং বেশ কয়েকজনের কাছ থকে ১৯ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে বলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য আনিছুর রহমান। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ওই চক্র। গত ২৪শে নভেম্বর সখীপুর থানায় মামলা করলে কয়েক দিনের মধ্যেই উপজেলার জেলখানা মোড় এলাকা থেকে ওই চক্রের প্রধান সদস্য লুৎফর রহমান সোহাগ (৩০), তার বাবা মজিবর রহমান (৬০), শাহজাহান (৩৫), নাসির উদ্দিন (২৪), আলাল উদ্দিন (৩২) ও লায়লী বেগম (৪৫)কে গ্রেপ্তার করে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এরা আদালতে ৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এ ঘটনা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। অন্যদের গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা চালাচ্ছে ডিবি ও থানা পুলিশ। এ চক্রের প্রধান সদস্য লুৎফর রহমান সোহাগকে তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানায় সখীপুর থানা পুলিশ। এ ছাড়া গত ২০শে নভেম্বর সুমন শিকদার (৪০) স্ত্রী নাবিলা (৩২) তাদের সহযোগী পলাশ (৩৫) ও আনোয়ারকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে ভানুয়াতু পুলিশ। পাচার হওয়া নাছির উদ্দিনের ছোট ভাই নাজমুল বলেন, অস্ট্রেলিয়ার জন্য সোহাগ ও তার বাবার কাছে জমিজমা বিক্রি করে ১৯ লাখ টাকা দিয়েছি। বর্তমানে আমার ভাই আফ্রিকার ভানুয়াতু দ্বীপ এলাকায় পুলিশের হেফাজতে আছে। আমার ভাইকে ফিরে পেতে চাই। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা ও সাধারণ জনগণ গ্রেপ্তারকৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন। এছাড়া আরো ২০ থেকে ২৫ জন ভুক্তভোগী ওই প্রতারক চক্রকে টাকা দিয়েছে বলে প্রমাণাদি সহকারে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও (ওসি তদন্ত) এএসএম লুৎফল কবির বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারদের সবধরনের আইনগত সহযোগিতা করা হচ্ছে। ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সখীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমীর হোসেন বলেন, আইনগত প্রক্রিয়ায় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। এখানে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশও কাজ করছে। চক্রের প্রধান লুৎফর রহমান সোহাগকে রিমান্ডে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর