মহাজোট থেকেই মনোনয়ন পাচ্ছেন সেলিম উদ্দিন। আবারো তিনি সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসন থেকে মহাজোটের হয়ে নির্বাচনে নামছেন। ছেড়ে দিচ্ছেন সিলেট-৬ আসন। এ আসন হচ্ছে সেলিম উদ্দিনের বাড়ি। এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ কারণে সেলিম উদ্দিন পাশের আসন থেকে আবারো প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। গতকাল আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন সেলিম উদ্দিন। এরপর ঘোষণা দেন সিলেট-৫ আসন থেকে তিনি নির্বাচন করবেন।
সিলেট-৫ আসনের বর্তমান এমপি সেলিম উদ্দিন।
তিনি সংসদে জাতীয় পার্টির হুইপও। রওশন এরশাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের কারণে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে সিলেট-৫ আসনে প্রার্থী হন তিনি। ওই নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেন। এরপর তাকে সংসদের হুইপ করা হয়। কিন্তু সেলিম উদ্দিনে সন্তুষ্ট নয় কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ আওয়ামী লীগ। এর কারণ সেলিম উদ্দিনের বাড়ি এ সংসদীয় আসনের ভেতরে নয়। এ কারণে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের আওয়ামী পরিবার। এই অবস্থায় এবার সিলেট-৫ আসনে মনোনয়ন প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন সাবেক এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদার। তিনি পেয়েও যান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। এরপর তিনি সিলেটে এসে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এদিকে এই আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন হুইপ সেলিম উদ্দিন। ফলে এ আসনে মহাজোটের সমর্থিত প্রার্থী নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। বাছাইয়ে সেলিম উদ্দিনের দুটি আবেদনই বাতিল করে দেন সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম। সেলিম উদ্দিন পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনে এ নিয়ে আবেদন করেন। শুক্রবার বিকালে নির্বাচন কমিশনে সেলিম উদ্দিনের আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এবং তার দুটি মনোনয়নই বৈধ ঘোষণা করা হয়। ফলে নির্বাচনে বৈধ প্রার্থী হিসেবে টিকে গেছেন সেলিম উদ্দিন।
এদিকে মনোনয়ন বৈধ হওয়ার পর নিজের ফেসবুক আইডিতে সেলিম উদ্দিন জানিয়েছেন সিলেট-৫ আসনে তিনি মহাজোটের হয়ে নির্বাচন করবেন। ছেড়ে দেবেন সিলেট-৬ আসন। স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকা ২৩৩, সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসন থেকে নির্বাচন করার বৈধতা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষণা করায় প্রথমে মহান আল্লাহতায়ালার শুকরিয়া আদায় করছি। আজকের রাজনীতি আগামীদিনের ইতিহাস। সেই ইতিহাসকে সমুন্নত রাখতে জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শুভাকাঙ্ক্ষী, শুভানুধ্যায়ী, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, সমর্থক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ভালোবাসা, সমর্থনকে সম্মান জানিয়ে এবং আমার পার্টির চেয়ারম্যান, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান, কো-চেয়ারম্যান ও মহাসচিব এর পরামর্শক্রমে আমার প্রাণের প্রিয় নির্বাচনী এলাকা জকিগঞ্জ-কানাইঘাটে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ সেলিম উদ্দিনকে নিয়ে সন্তুষ্ট নয় সিলেটের কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতারা।
বিগত ৫ বছর এই আসনটি শরিকদের মধ্যে ছাড় দেয়ার কারণে এ দুটি উপজেলায় আওয়ামী লীগ দলীয় কর্মকাণ্ডে অনেক বেশি পিছিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তারা। এছাড়া সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে এ আসনের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শরিক হতে পারেননি। সেলিম উদ্দিন তার নিজের গুটিকয়েক লোককে নিয়ে এলাকা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন। এই কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট নয় আওয়ামী লীগ।