মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব) বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। শেষ পর্যন্ত তিনিই দীর্ঘ ১০ বছর পর বিএনপির ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একক প্রার্থী হিসেবে ফের মুখোমুখি হচ্ছেন এই আসনের আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী ড. মো. আব্দুস শহীদের সঙ্গে। ড. মো. আব্দুস শহীদ সংসদের প্রাক্তন সরকারদলীয় হুইপ, চিফ হুইপ ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপসহ দশম সংসদের সরকারি প্রতিশ্রুতি সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দলীয় প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকায় মৌলভীবাজার-৪ আসনে মুজিবুর রহমান চৌধুরীর নাম ঘোষণা দেন। এর ফলে এই আসনে বিএনপির মনোনীত অপর প্রার্থী হাজী মুজিবের পুত্র আশিক মুঈদ চিশতী, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম মেম্বার এড. শান্তি পদ ঘোষ ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী একক প্রার্থী হাজী মুজিবকে সমর্থন দিয়ে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে একই আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা সালাউদ্দিন আহমদ শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবেন কিনা তা জানতে আগামী ৯ই ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। মো. আব্দুস শহীদ ১৯৯১, ৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে টানা পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ৭৫ হাজার ৩২১ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেসময় তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. আহাদ মিয়া। তিনি ভোট পান ৬০,২১৫ ভোট। ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আব্দুস শহীদ ৯১ হাজার ৮১১ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। সেসময়ও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. আহাদ মিয়া তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। সে নির্বাচনে আহাদ মিয়া লাঙল প্রতীকে পান ৫৯ হাজার ৮২৫ ভোট।  ২০০১ সালের ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ ৯৬ হাজার ৩২৯ ভোট পেয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী মুজিবুর রহমান চৌধুরী হাজী মুজিবকে পরাজিত করেন। ওই নির্বাচনে হাজী মুজিব পান ৭০ হাজার ৩৬৪ ভোট।
২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় নির্বাচনে আবারো আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী। তিনি ভোট পান ৭৯ হাজার ৫৯৯ ভোট। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ।