× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সরজমিন ঢাকা-১৪ / শুনছি এবার নাকি ভোট অইবো

শেষের পাতা

শাহনেওয়াজ বাবলু
৮ ডিসেম্বর ২০১৮, শনিবার

ভোটের কথা জিজ্ঞেস করতেই থমকে দাঁড়ান রফিকুল। বলেন, গত নির্বাচনেতো ভোট দেবার পারি নাই। শুনছি এবার নাকি ভোট অইবো। সুযোগ পাইলে ভোট দিমু। না পাইলে দিমু না। রফিকুল সবজী ব্যবসায়ী। তার সঙ্গে কথা হয় সাভারের কাউন্দিয়া বাজারে। এলাকাটি ঢাকা-১৪ আসনের।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ঢাকা-১৪ আসনে যুক্ত হয় সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন। ঢাকা সিটির সঙ্গে সড়ক যোগাযোগও নেই। নদীপথই ভরসা। গতকাল বেলা ১২টা। এপার নদী ঘাট থেকে ৫ টাকা ভাড়ায় নৌকায় করে কাউন্দিয়া বাজার।

ঘাটপাড়েই মোজ্জাম্মেলের চায়ের দোকান। শুক্রবার ছুটির দিন হলেও দোকানে ভিড় বরাবরের মতোই। সেখানে চলছিল নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা। একটু সামনে এগিয়ে কথা হয় শামীম হোসেনের সঙ্গে। পেশায় দর্জি শামীম বলেন, ভাই অনেক দিন পর ভোট দিবো, খুব ভালোই লাগছে। তয় অনেকে কইতাছে ভোট অইবো না, এইডা নিয়া সন্দেহ আছে। যদি ভোট অয়, তাইলে আমি তারেই ভোট দিমু যে, আমাগের মতো গরিব মাইনষের উপকারে আইবো। নির্বাচন নিয়ে কাউন্দিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহামন খান শান্ত বলেন, আমি আড়াই বছর ধরে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। সবার প্রতিনিধি। তাই যেভাবে জনগণের ভালো হবে, সেভাবেই কাজ করবো। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মিরপুর-২ এলাকার বাসিন্দা শাকিল চৌধুরী বলেন, ভাই আমি কোনো রাজনীতি করি না। সারা দিন থাকি ব্যবসা নিয়ে। ১০ বছর ধরে ব্যবসা করছি। ব্যবসা করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হইনি। আর আমি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নৌকাতেই ভোট দিবো। ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোবাশ্বের চৌধুরী বলেন, আমি মনে করি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে মানুষ নৌকায় ভোট দিবে। তার ওয়ার্ডের ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সকল ধরনের চেষ্টা করবেন বলেও জানান স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি।

এদিকে ওই আসনের বিএনপির প্রার্থী দলটির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক বলেন, আমি এখন পর্যন্ত সন্দিহান যে, মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে কিনা? নির্বাচনের আর বেশি দিন নেই। তবে এখন পর্যন্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন। আমি মনে করি, মানুষ যদি তাদের ভোট দিতে পারে তাহলে এই আসনে বিএনপি নিরঙ্কুশভাবে জয়লাভ করবে। ঢাকা-১৪ আসনের নতুন ভোটার সৈয়দ রাসেল। তিনি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ভোট নিয়ে তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো ভোট দিবো, খুব ভালো লাগছে। আমি ভোট দেবার সিদ্ধান্ত নেবো শেষ সময়ে। তার বন্ধু রাকিব হিমেল। সেও নতুন ভোটার, পড়েন ঢাকা কলেজে। হিমেল বলেন, আমাদের এলাকায় উন্নয়ন হয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু উন্নয়নের তো শেষ নেই। তাই আমার ভোটটা আমি যোগ্য ও তরুণ কাউকে দেব। উন্নয়নের পাশাপাশি তিনি যেন তরুণদের ভাবনা বোঝেন। খাবার হোটেলের মালিক এরশাদুল ইসলাম দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে ওই এলাকায় বাস করেন। সেই সুবাদে এখানকার সুবিধা-অসুবিধাও তার জানা। তিনিও বিচার-বিবেচনা করে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন বলে জানান।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২ ও সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৪ আসন। এটি জাতীয় সংসদের ১৮৭নং আসন। ইতিহাস বলে, মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো এই এলাকায় ভোটটাররা খুঁজে নিয়েছেন সংসদ সদস্য। ১৯৯১ সালে আসনটিতে জয়লাভ করেন বিএনপির এস এ খালেক। তিনি এ আসনটিতে বিভিন্ন মেয়াদে মোট পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরের নির্বাচনে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের ব্যানারে জয়লাভ করেন কামাল আহমেদ মজুমদার। ২০০১ সালে পুনরায় আসনটি ফিরে পান এস এ খালেক। ফের আসনটির দায়িত্বে আসেন আওয়ামী লীগের আসলামুল হক। তবে ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ায় এই আসনটিতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফের সংসদ সদস্য হন আসলাম।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নির্বাচনের মাঠ তাদের দখলেই আছে। দলটির শাহ আলী থানার সভাপতি আগা খান মন্টু বলেন, ঢাকা-১৪ আসনে আসলামুল হকের নেতৃত্বে শক্তিশালী ঘাঁটি তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ। আমরা প্রচারণা চালাচ্ছি, জনগণের কাছ থেকেও অনেক সাড়া পেয়েছি। অন্যদিকে বিএনপি নেতারা বলছেন, নির্বাচন নয়, অঙ্গ সংগঠনগুলোকে সক্রিয় করতে কাজ করছেন তারা। শাহ আলী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির রওশন বলেন, নির্বাচনে জন্য মূলদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, শ্রমিকদলসহ সকল কমিটিগুলোকে চাঙ্গা করে নতুন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে আমরা কাজ করবো। চারটি থানা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৪ আসনের ভোটার সংখ্যা সাড়ে তিন লক্ষাধিক।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর