জেলা ও সিটি করপোরেশন প্রাণকেন্দ্রের নির্বাচনী আসন গাজীপুর-২ আসনটি জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ আসনে থেকে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে সবাইকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যকরি সভাপতি মো. সালাউদ্দিন সরকার। প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের এই আসনের প্রার্থী দুজনই হয়ে গেলেন টঙ্গীর। নির্বাচনী মাঠ অনেকটাই গুছানো আছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ আহসান রাসেলের। যদিও মনোনয়নপত্র জমা ও দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়ার পর সালাউদ্দিন সরকার এখনো প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ আহসান রাসেল এমপির মতো করে প্রকাশ্য নির্বাচনী মাঠে নামতে পারেননি। তবে, মামলা-মোকদ্দমায় জামিনে থেকে অনেকটাই প্রকাশ্য আছেন টঙ্গীর শ্রমিক নেতা সালাউদ্দিন সরকার। তিনি জানান, নির্বাচনী আচরণবিধি ও প্রশাসনিকভাবে প্রতিবন্ধকতার কারণে নির্বাচনী মাঠে এখনো তিনি সরাসারি নামতে না পারলেও দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। মতবিনিময় ও কর্মিসভা করছেন।
প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়ার বিষয়ে নানা ছক করে রেখেছেন তিনি। নিজ বাসার সামনেই গত কয়েক দিনে মতবিনিময় করেছেন দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে। চূড়ান্তভাবে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ধানের শীষ প্রতীক হাতে পাওয়ার বিষয়ে অনেকটাই দৃঢ় মনোভাব ছিল তার। দলীয় চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার পর জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রাজনৈতিক প্রভাবের পাশাপাশি সালাউদ্দিন সরকারের রয়েছে টঙ্গীর সরকার পরিবারের পারিবারিক ঐতিহ্য। টানা দীর্ঘ সময় ধরে টঙ্গী পৌরসভায় চেয়রম্যান ও মেয়রের চেয়ার দখলে ছিল তাদের পরিবারের। দলেও এই পরিবারের রয়েছে আলাদা অবস্থান। জাতীয় পার্টির আমল পর্যন্ত টঙ্গীতে অনেকটা একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল তাদের। দলের কেন্দ্রে সালাউদ্দিন সরকারের অবস্থান মজবুত। যদিও মহানগর বিএনপির নবগঠিত কমিটির বিরুদ্ধে তিনি মাঠে সোচ্চার থাকায় মহানগর কমিটির অনেকেই তার প্রতি নাখোস। ভোটের মাঠের প্রতিপক্ষ অত্যন্ত শক্তিশালী আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ আহসান রাসেলের বাসা ও টঙ্গীতে। তাই ভোটের মাঠের নানা হিসাব-নিকাশ করেই এগুতে হবে। ছাত্ররাজনীতি থেকেই রাজনীতিতে যাত্রা শুরু সালাহ উদ্দিন সরকারের। ছিলেন টঙ্গী সরকারী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি। বিএনপির বিভিন্ন পদে ছিলেন তিনি। সালাউদ্দিন সরকার দীর্ঘদিন যাবৎ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে, বিশেষ করে শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে ও শ্রমিকদের সুখে-দুঃখে জড়িত। দলের দুঃসময়ের তার ও তার পরিবারের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও তার রয়েছে সুসম্পর্ক। তবে স্থানীয় সরকার কিংবা জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা নেই তার। তাই দল থেকে বিকল্প প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হলেও, শেষ পর্যন্ত ধানের শীষের মনোনয়ন তিনিই পাবেন বলে বিশ্বাস ছিল তার। এখন দেখার বিষয় দলকে কতটুকু সুসংহত করে মাঠে নামতে পারেন তিনি। চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে গাজীপুরে যারা মনোনয়ন পেলেন তারা হলেন- গাজীপুর-১ আসনে চৌধুরী তানবীর আহমেদ সিদ্দিকী, গাজীপুর-২ আসনে হাসান উদ্দিন সরকার, গাজীপুর-৪ আসনে শাহ রিয়াজুল হান্নান, গাজীপুর-৫ আসনে একেএম ফজলুল হক মিলন। আর গাজীপুর-৩ আসনে মনোনয়ন পাচ্ছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী।