নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গত সেপ্টেম্বরে অপহৃত স্কুল শিক্ষার্থী শিশু সিয়ামকে (৬) শীতলক্ষ্যা সেতু থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে অপহরণকারী ও ঘাতক মিঠু মিয়া। অপহরণের প্রায় ৩ মাস মূলহোতা মিঠু মিয়াকে র্যাব-১ এর একটি দল আটক করলে সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তারাব পৌরসভার গর্ন্ধবপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার রাতে র্যাব-১ এর দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১ এর কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-৩) পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, চার মাস আগে রূপগঞ্জের বিরাব খালপাড় এলাকার নিহত শিশু সিয়ামের বাবা মোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে ইটের ট্রলিতে হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করেন একই উপজেলার গর্ন্ধবপুর এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে মিঠু মিয়া (২৬)। এমনকি তাদের বাসাতেই থেকে খাওয়া-দাওয়ার করতেন। কাজে যোগ দেয়ার ১৫/১৬ দিন পর মিঠুর সঙ্গে হৃদয় নামে অপর এক শ্রমিকের ঝগড়া হয়। ঝগড়া সমাধান করতে মোফাজ্জল মিঠুকে চড়-থাপ্পড় ও গালিগালাজ করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মিঠু মিয়া প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা শুরু করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৩ই সেপ্টেম্বর বিকালে মোফাজ্জলের ছেলে সিয়ামকে নিজ বাড়ি থেকে কাঞ্চন সেতুতে ঘুরতে নিয়ে যায় মিঠু। সন্ধ্যা নেমে এলে একপর্যায়ে ব্রিজের রেলিং থেকে ধাক্কা দিয়ে শিশু সিয়ামকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয় সে। এরপর সেখান থেকে ঘাতক মিঠু পালিয়ে যায়। বহু খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ১৭ই সেপ্টেম্বর সিয়ামের মা ফারজানা বাদী হয়ে পলাতক মিঠু মিয়া, তার বাবা আনোয়ারসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন। এ মামলার প্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর একটি দল বৃহস্পতিবার রাতে মিঠুকে তার নিজ বাড়ি গর্ন্ধবপুর থেকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারের পরই তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে নির্মম ওই খুনের ঘটনার চাঞ্চল্যকর তথ্য। এদিকে ঘাতক ধরা পড়লেও শিশু সিয়ামের মরদেহ এখনো উদ্ধার করতে পারেননি পুলিশ, র্যাব কিংবা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।