বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করাই তাদের কাজ। এজন্য একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যেতে হয়েছে। কিছুদিন যাবার পর জামিনে মুক্ত হয়ে ফের প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত হন। প্রশ্নপত্র ফাঁসে তারা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। আর সেই প্রশ্ন মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করে দেন পরীক্ষার্থীদের কাছে। একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য জানা গেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রবিউল আউয়াল, রাজিউর রহমান, রেজাউল করিম, সোহেল রানা, মাহমুদুল, আনসারুল ইসলাম ও দেবাশীষ। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র পাঠানোর ৮টি ডিভাইস, ২৯টি ব্যাটারি, ৩টি পেনড্রাইভ, ৯টি ব্লু টুথ ডিভাইস, ৯টি সিম কার্ড এবং ৮টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ পরীক্ষাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে চুক্তিবদ্ধ প্রার্থীকে ফাঁস করা প্রশ্ন সরবরাহ করতো চক্রটি। কখনও কখনও তারা প্রার্থী বুঝে ৫/১০ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করতো। এধরনের কাজে জড়িত থাকার জন্য একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা। তিনি বলেন, এই চক্রটি গত শুক্রবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। এই অভিযোগে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও বাকিরা সক্রিয় সদস্য। এই চক্রের একজন সদস্য সোহেল রানাকে আগেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে জামিনে বেরিয়ে ফের একই কাজ শুরু করে। তবে জামিনে বের হলেও তার ওপর আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি ছিল। তাই তাকে ফের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। মাসুদুর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা দুটি ডিভাইস ব্যবহার করে এসব কাজে। একটি ছোট ডিভাইস কানের ভেতরে থাকতো, আর একটি সিম আকারের ডিভাইস শরীরের যেকোনো অঙ্গে বসিয়ে রাখতো। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে প্রশ্ন বের করে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের দিয়ে দ্রুত প্রশ্নের সমাধান করে ডিভাইসগুলোর সহায়তায় তাদের কাছে পৌঁছে দিতো চক্রটি। তাদের ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো এতই সূক্ষ্ম, সন্দেহ না হওয়া পর্যন্ত বোঝার ক্ষমতা নেই।