× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হাসনা হেনার মুক্তির দাবিতে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের একাংশের

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
৯ ডিসেম্বর ২০১৮, রবিবার

নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার শিক্ষক হাসনা হেনার মুক্তি দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ। টানা 
 দ্বিতীয় দিন গতকাল সকাল ১১টা থেকে রাজধানীর বেইলী রোডে ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের হাতে ‘পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড’ সংবলিত বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ছিল। কর্মসূচিতে অংশ নেয়া ভিকারুননিসার একাদশ শ্রেণির আনিকা ইশরাফ ইক্বরা সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষক হাসনা হেনাকে মুক্তি না দিলে তারা আজ রোববার থেকে ক্লাসে যাবেন না। আজ সকাল ৮টা থেকে স্কুল ক্যাম্পাসের সামনে ফের অবস্থান ও বিক্ষোভ করবেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজে বর্তমানে একাদশ শ্রেণির ক্লাস চলছে। অন্য শ্রেণিগুলোতে চলছে বার্ষিক পরীক্ষা। অরিত্রী আত্মহত্যা করার পর শিক্ষার্থীদেরই বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে অরিত্রীর বাবার করা মামলায় বুধবার গ্রেপ্তার করা হয় শিক্ষক হাসনা হেনাকে।
অরিত্রীর এই শ্রেণিশিক্ষক এখন কারাগারে রয়েছেন। অরিত্রী ও তার বাবা-মাকে ‘অপমানের’ বিচার দাবিতে টানা কয়েকদিন ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভের পর গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের আশ্বাসে ঘরে ফেরে। অন্যদিকে শিক্ষক হাসনা হেনার মুক্তির দাবিতে ‘ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রীবৃন্দ’ ব্যানারে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ বিক্ষোভ শুরু করে। গত শুক্রবারের পর শনিবারও তারা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। দুই ঘণ্টার বেশি অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে দুপুর দেড়টার পর রাস্তা ছাড়েন তারা। এক পর্যায়ে এই অংশের শিক্ষার্থীদের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া মাহমুদ মৃত্তিকা জানান, আজ রোববার থেকে ক্লাস বর্জনের সঙ্গে সকাল ৮টা থেকে স্কুলের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। তিনি বলেন, হাসনা হেনা আপা নির্দোষ-এটার সব থেকে বড় প্রমাণ সিসিটিভি ফুটেজ। সেখানে আমরা দেখেছি যে, আপার সঙ্গে অরিত্রীর বাবা বা মায়ের কোনো যোগাযোগ হয়নি।

এর বাইরে প্রথম থেকে অরিত্রীর বাবা বা মা হাসনা হেনা আপার কথা বলেন নি একবারও। ছয় দফা দাবিতেও হাসনা হেনা আপার নাম কোথাও ছিল না। কিন্তু প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার না করে হাসনা আপাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যেটা খুবই দুঃখজনক। ক্লাস শিক্ষক হাসনা হেনার পক্ষে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা বিভিন্ন পোস্টারে লেখা ছিল-‘হাসনা হেনা আপার মুক্তি চাই’, ‘জাতির কারিগর কেন কারাগারে’, ‘লিখতে শিখিয়েছে যে হাত, সে কেন খাবে জেলের ভাত’ ইত্যাদি। অরিত্রী মৃত্যুর ঘটনায় ‘সুষ্ঠু বিচার’ চাওয়ার কথা জানিয়ে তারা বলছে, এই ঘটনায় হাসনা হেনার কোনো দায় নেই।

এর আগে অরিত্রীর আত্মহত্যার পর বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের স্লোগান ছিল-‘শাসন করুন, অপমান নয়’, ‘শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষকতা করায়, অপমান করায় নয়’, ‘অরিত্রী হত্যার বিচার চাই’, ‘ভিকারুননিসা আর ভিকারুননিসা নেই, অধ্যক্ষের বরখাস্ত চাই’ ইত্যাদি। হাসনা হেনার বাইরে অন্য দুই শিক্ষক দোষী কি-না, তাও তদন্তের মাধ্যমে বের করার দাবি জানান মৃত্তিকা। মৃত্তিকা জানান, সিসিটিভি ফুটেজে আমরা উনাদের সঙ্গে কথোপকথন হচ্ছে, এটা দেখেছি। কিন্তু কী কথা হয়েছে, সেটা শুনিনি। তাই আমরা বলতে পারবো না, উনারা দোষী না কি নির্দোষ। এটা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বের হবে।

জানা গেছে, অরিত্রী যে শ্রেণিতে পড়তেন, সেই নবম শ্রেণির শ্রেণিশিক্ষক ছিলেন হাসনা হেনা। আন্দোলনের মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাকে বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্ষদ, তার এমপিও বাতিল করেছে মন্ত্রণালয়। হাসনা হেনার পাশাপাশি ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও প্রভাতি শাখার প্রধান জিনাত আখতারও বরখাস্ত হয়েছেন। অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারীর মামলায় তারাও আসামি। গত সোমবার অরিত্রী আত্মহত্যা করার পর থেকে উত্তেজনা চলছে রাজধানীর নামি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। অভিযোগ উঠেছে, পরীক্ষার সময় অরিত্রীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়ার পর তার বাবা-মাকে ডেকে নিয়ে ‘অপমান করেছিলেন’ অধ্যক্ষ। সে কারণে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেন। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী রোববার বার্ষিক পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকলসহ ধরা পড়েছিলেন। এ ঘটনায় তার বাবা-মাকে অপমান করায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় অরিত্রী। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে ভিকারুননিসার তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর