× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এবং কিছু কথা

এক্সক্লুসিভ

মুজিবুর রহমান মুজিব
১০ ডিসেম্বর ২০১৮, সোমবার

সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ। বাংলাদেশের সমকালীন সমাজ ও রাজনীতির ইতিহাসে আলোচিত নাম। একজন আত্মপ্রত্যয়ী, আত্মবিশ্ববাসী ব্যক্তিত্ব। কুলাউড়ার কৃতী সন্তান। বৃহত্তর সিলেটের গর্ব ও গৌরব। বাংলাদেশের অহংকার। ষাটের দশকের শুরুতে স্কুলের ছাত্রাবস্থায় স্বদেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জনসেবার খাতায় নাম লেখান। দেশে তখন বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের জোয়ার।
আন্দোলনের একচ্ছত্র নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একজন নির্ভীক, নির্লোভ মুজিব সৈনিক হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে সুলতানের হাতেখড়ি। তার দেশপ্রেম, সাংগঠনিক দক্ষতা, বাগ্মিতা, শিষ্টাচার, সৌজন্যবোধ ও বিনয়াচরণে তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে তরতর করে এগিয়ে গেছেন। দায়িত্ব পেয়েছেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন। ছাত্রলীগের সংগঠক হিসেবে সুলতান মনসুর কুলাউড়া, মৌলভীবাজার, সিলেট, ঢাকা, বাংলাদেশের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি। ডাকসুর ভিপি। ছাত্রলীগ থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন। দলীয় মনোনয়নে নিজ নির্বাচনী এলাকা মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য হয়েছেন। চান্দাবাজি, ধান্ধাবাজি, কালোবাজারি, মুনাফাখোরি, মজুদদারি, মুদ্রাপাচার, বাণিজ্যায়ন, দুর্বৃত্তায়ন ও ভ্রষ্টাচারের জোয়ারের মধ্যে সুলতান ছিলেন ব্যতিক্রম। কলংকের কালিমা তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্ব্বোচ্চ ডিগ্রি অনার্স মাস্টার্স নিয়ে লোভনীয় সরকারি চাকরিতে যাননি। সাধারণ জনগণের সার্বক্ষণিক সেবায় থেকে গেছেন। ব্যক্তি সুলতান মনসুর তাঁর অপূর্ব, অমায়িক ও মধুর ব্যবহার ও বিনয়াচরণের কারণে দলের বাইরে ভিন্ন দল, মতাবলম্বী ও সর্ব মহলে গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা ছিল। আছেও। একজন আধুনিক গণতন্ত্রী হিসাবে পরমতের প্রতি সহানুভূতি ও শ্রদ্ধাশীল সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। রাজনৈতিক অবস্থানে অনেকে পালাবদল করে নয়ছয়ে নিজেকে জড়ান। স্পষ্টবাদী, সত্যবাদী, দুঃসাহসী মুজিব সৈনিক সুলতান মনসুর নিজ বিবেকের কাছে সবসময়ই পরিচ্ছন্ন। কখনও অন্যায় ও অসত্যের কাছে মস্তক অবনত করেননি। মোসাহেব হন নি। ভাঁড়ামিও করেননি। ২০০৮ সালে প্রিয় দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। দলের পদ থেকেও বঞ্চিত হন। তবুও শুধুমাত্র ক্ষমতা ও প্রাপ্তি যোগের প্রত্যাশায় বিদ্রোহী প্রার্থী হননি। তাঁর প্রতি দলের অবিচার ও অবহেলা নীরবে সহ্য করেছেন। লাগামহীন বক্তব্য দেন নি। অধৈর্য হননি। দল সরকারে একাকার হয়ে গেলে সুশাসন অবহেলিত হলে মিডিয়ায় প্রতিবাদ করেছেন। নিজের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন। চৌদ্দ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চান নি। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য জাতির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। সর্বশেষ লড়াকু সুলতান মনসুর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা ও অবদান রাখেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ধানের শীষ প্রতীকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে শাসক দল আওয়ামী লীগ এবং মহাজোটকে নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ায় বাংলাদেশে ভোটের রাজনীতি এখন সরগরম। নিজ নির্বাচনী এলাকা কুলাউড়া থেকে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী হিসাবে ধানের শীষ নিয়ে লড়ছেন সুলতান মনসুর। সবাইকে নিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন মহান মালিকের মেহেরবানিতে তিনি আছেন, থাকবেন, তাকে রাজনীতি থেকে বিছিন্ন বা নিশ্চিহ্ন করা যাবে না।
লেখক: সিনিয়র অ্যাডভোকেট, হাইকোর্ট, মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাব
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর