সিলেট-৪ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চেয়েছিলেন ইসমাঈল আলী। কিন্তু দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় আপিল শুনানিতে মনোনয়ন বাতিল হয় এই প্রার্থীর। এখন তিনি লড়তে চান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। তবে, আপিল বাতিল হওয়া রায়ের কপি না পাওয়ায়, অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে গেছে, উচ্চ আদালতে যাবার প্রক্রিয়া। নির্বাচন কমিশন ভবনের অভ্যর্থনা ডেস্কের সামনে গতকাল রোববার সকাল থেকেই আপিলের রায়ের কপি নিতে আসা প্রার্থীরা ভিড় করেন। অনেকে দুই দিন অপেক্ষা করেও পাননি কাঙ্ক্ষিত রায়ের কপি, যার কারণেই এসব প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ আর হতাশা। অভ্যথর্নায় থাকা নির্বাচন কমিশনের কর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায়ও জড়িয়ে পড়েন অনেকে। কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে শুনানি হওয়া প্রায় ১৯ জনের রায়ের কপি রোববার দুপুরে পর্যন্ত দেয়া যায়নি।
আরো চারজনের রায়ের কপি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন একজন কর্মকর্তা। আপিল শুনানির দ্বিতীয় দিন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের মো. মোশারফ হোসেনের আপিল আবেদন নামঞ্জুর করে কমিশন। এরপর রায়ের কপি নিতে শনিবার সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচন ভবনে অপেক্ষা করেন ওই প্রার্থীর সমর্থক রফিকুল হায়দার। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও রায়ের কপি না পেয়ে ফিরে যান। রোববার সকালে আবার এসেছেন তারা। রাত পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন তাদের রায়ের কপি দিতে পারেনি। মোশারফ হোসেনের মতো শেষ দিন শনিবারের আপিল শুনানিতে বাতিল হওয়া কারো রায়ের কপিই দুপুর পর্যন্ত দিতে পারেনি ইসি। রায়ের কপি না পেলে আদালতে রিট করতে পারবেন না মনোনয়ন বাতিল হওয়া এসব প্রার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রার্থী জানান, ইসির কিছু কর্মকর্তা রায়ের কপির জন্য টাকা দাবি করেছেন। তবে অভিযুক্ত কর্মকর্তা এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। ইসি সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুর পর্যন্ত মাত্র একজনকে রায়ের কপি দিতে পেরেছেন। আর আপিল আবেদন বৈধ হওয়া প্রার্থীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে চলে গেছে। যারা তালিকা থেকে বাদ পড়েন তাদের সম্পূরক তালিকা দিতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। অন্যদিকে আপিল বাতিলের পর উচ্চ আদালতে রিট করতে গেলে প্রয়োজন রায়ের সার্টিফায়েড কপি। সময়মতো এই কপি না পাওয়ায় মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীরা বিপাকে আছেন। এর আগে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ জানিয়েছিলেন, আপিলের পরপরই প্রার্থীরা রায়ের কপি পাবেন। গতকাল ইসির আইন শাখার যুগ্ম সচিব সেলিম মিয়া জানান, শুনানি শেষ করা ইসির জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। রায়ের কপি তৈরিতে সময় প্রয়োজন হয়। সবাইকে পর্যায়ক্রমে কপি সরবরাহ করা হবে। প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল গতকাল। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করতে পারবেন।