× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জমজমাট ভোটযুদ্ধের আশায় ভোটাররা

দেশ বিদেশ

এম এম মাসুদ
১১ ডিসেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার

ঢাকা-৭ সংসদীয় আসনটি রাজধানীর ব্যবসায়ের প্রাণকেন্দ্র। খুচরা থেকে পাইকারি প্রায় সব ধরনের বাজারের কেন্দ্রস্থল এটি। পুরান ঢাকা হিসেবে বেশি পরিচিত। ঢাকা মহানগরের লালবাগ, বংশাল, হাজারীবাগ, চকবাজার ও সদরঘাট এলাকা নিয়ে এই সংসদীয় আসন গঠিত। প্রায় ৩ লাখ ২৮ হাজার ভোটার ভোট দিবেন ১২০টি ভোট কেন্দ্রে। একাদশ জাতীয় নির্বাচন ৩০শে ডিসেম্বর। ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নির্বাচনে এই আসন থেকে নৌকা প্রতীকে হাজী মোহাম্মদ সেলিম এবং ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু।

ময়মসিংহের জামাল ১০ বছর আগে ঢাকায় আসেন। লালবাগ এলাকায় রিকশা চালান। সুষ্ঠু ভোটে যে ক্ষমতায় আসবে সেই দেশ চালাবে, এটাই তার চাওয়া। জামাল বলেন, আমার কথা হইলো আনন্দ-ফুর্তি করে ভোট দিবো। তিনি বলেন, ভোট দেয়া নিয়ে প্রত্যেক মানুষের একটা আগ্রহ থাকে। ছোটকালে দেখতাম বাপ-চাচারা আমাগো লইয়া যেত স্কুল মাঠে, ভোট দিতে। কী একটা উৎসব হতো! জামাল বলেন, আমরা আগের মতো আনন্দ-ফুর্তিতে ভোট দিতে চাই, দাঙ্গা-হাঙ্গামা চাই না। নির্বাচনে মারামারি বা সংঘর্ষ এটা কেউরই কাম্য না। আরেক রিকশাচালক ফিরোজ বলেন, আমি তো রাজনীতি বুঝি না, করিও না। তবে আমার ভোট আছে, আমি ভোট দিবো। একটা ভোট অনেক মূল্যবান। আমার ভোট আমিই দিতে চাই। তারও চাওয়া, ভোট হোক শান্তিপূর্ণ। এক হকার বলেন, আমি একটা ভালো নির্বাচন চাই, যাতে কোনো ঝগড়াঝাটি, মারামারি নির্বাচনের সময় তো কত মানুষই মারা যায়! আমি এইডা চাই না। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা জানিয়ে এলাকার বাসিন্দা ইউসুফ বলেন, একটা মানুষের মূল্য অনেক, ছোট থেকে একটা মানুষকে লালন-পালন করে বড় করতে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। কোনো মানুষ মারা যাবে সেটা আমি চাই না। যে দলই সরকার হয়ে আসুক আমরা চাই সুন্দরভাবে আসুক। আমরা চাই নির্বাচনে কারও মৃত্যু না হোক, বা রক্তারক্তি না হোক। তবে নির্বাচনে সংঘাতের আশঙ্কা দেখছেন সরকারি কর্মকর্তা ওয়ালিদ হাসান। তবে সরকার দলের নেতাকর্মীদের প্রভাব সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আগে থেকেই নির্বাচন কমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জোর প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। সরজমিন দেখা গেছে, চানখাঁরপুল মোড় থেকে নাজিমুদ্দিন রোড হয়ে বংশালের দিকে যেতে চানখাঁরপুল মোড়ই একটি ব্যানার লক্ষ্য করা যায়। এতে হাজী সেলিমের পক্ষে নৌকায় ভোট চেয়ে পোস্টারিং করা হয়েছে। এদিকে বেশ কয়েকটি জায়গায় দেয়ালে লাল-কালো কালি দিয়ে লিখে প্রচারণা চালানো হচ্ছে নৌকা মার্কার পক্ষে। তবে ধানের শীষের পোস্টারিং বা দেয়াল লিখন চোখে পড়েনি। তবে প্রতীক পাওয়া মাত্রই রাজনৈতিক দলগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করবে বলে জানান স্থানীয়রা। তাদের মতে, এতদিন এই আসনের প্রার্থী কে হবে তা নিয়ে সবাই ধোঁয়াশার মধ্যে ছিল। এখন সব কিছু পরিষ্কার। দুই/এক দিনের মধ্যেই সবাই সক্রিয়ভাবে প্রচার-প্রচারণা শুরু করবে। স্থানীয়রা জানান, আগে তো রাস্তাগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাজী সেলিমের পোস্টার ও ব্যানার ছাড়া কিছু ছিল না। যে দিকে চোখ যাবে হাজী সেলিমের পোস্টার-ব্যানার। তবে নির্বাচন কমিশনের আইনের কারণে রাস্তার ব্যানার-পোস্টার তুলে ফেলেছে হাজী সেলিম। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের সমর্থকরা আজ মঙ্গলবার থেকেই নির্বাচনী প্রচারণায় নামবেন বলে জানা গেছে। বংশালের কেমিক্যাল খুচরা বিক্রেতা আশিক আহমেদ জানান, পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা বরাবরই নির্বাচনের বিষয়ে সচেতন। তাই নির্বাচনের বিষয়ে প্রার্থীরাও অন্যান্য এলাকাগুলোর থেকে এদিকটা বেশি নজর দেন। ঢাকা আলিয়া মাদরাসার পাশেই অবস্থিত চা দোকানি গফফার উদ্দিন এই এলাকায় ব্যবসা করেন গত ১০ বছর ধরে।  তিনি বলেন, গত নির্বাচনে ভোট দিতে পারি নাই। কেন্দ্রে গিয়ে দেখি আমার ভোট আগেই দেয়া হয়েছে। আফসোস ভোটটা দিতে পারলাম না। তিনি বলেন, যদি নির্বাচন হয় আগেভাগেই কেন্দ্রে গিয়ে ভোটটা দিবো। জানা গেছে, এক সময় বিএনপির প্রার্থী নাসির উদ্দিন পিন্টুর প্রভাব ছিল এই আসনে। তার মৃত্যুর পর বিএনপির আর তেমন কেউ এই আসনে সুবিধাজনক জায়গা করে নিতে পারেনি বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

ঢাকা-৭ আসনের ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকার বাসিন্দা কাওসার আমিন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে প্রথম ভোটার ছিলাম। দিতে পারিনি। এবার দেখছি প্রধান দুই দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তাই এবার ভোট শুরু হওয়ার প্রথম দিকে গিয়েই ভোট দিবো। আরেক চা দোকানি জানান, এখানে দুই দলেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এলাকার তারেক নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, এই আসনের পরিস্থিতি সবার জানা। কারো অজানা নয়। এ কারণে ভোটের দিন আমাদের নিরাপত্তা দিতে হবে। মারামারি লাগবে না এর নিশ্চয়তা কে দেবে। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বলতে চাই, নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে সৎ ও যোগ্য লোককে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করাই আমাদের কাজ। শিক্ষার্থী তানিয়া জানান, সড়ক আন্দোলন হয়েছে। কোটা আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু আমাদের দাবি কেউ মানেনি। এমন কি এখনো নিরাপদ সড়ক তৈরি হয়নি। তাই যারা আমাদের দাবি মেনে নেবে তাকেই ভোট দেবো। তবে একজন যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে চাই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর