সিঙ্গাপুর গেলেন জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সোমবার রাত পৌনে ১১টায় সিঙ্গাপুর এয়ালাইন্সের একটি উড়োজাহাজে তিনি রওনা হন। তার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, এপিএস মো. মনজুরুল ইসলাম ও ব্যক্তিগত স্টাফ আব্দুল ওয়াহাব।
পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিয়মিত মেডিকেল চেক-আপের জন্য এরশাদ সিঙ্গাপুর গেছেন। চিকিৎসা শেষে দ্রুতই দেশে ফিরে আসবেন তিনি। একটি সূত্রে জানা গেছে, যাওয়ার আগে এরশাদ দলীয় প্রার্থীদের শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এদিকে এরশাদের অনুপস্থিতে কে তার দায়িত্বে থাকবেন তা পরিষ্কার নয়। যদিও পার্টির সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব দিয়ে চেয়ারম্যানের পরেই স্থান দেয়া হয়েছে। তারই দায়িত্ব পালন এবং সকল সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা।
এ বিষয়ে গতকাল পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গার কাছে জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি। ঋণ খেলাপির অভিযোগে পটুয়াখালী-১ আসনে হাওলাদারের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেলে অনেকটা আকস্মিকভাবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব পদে পরিবর্তনের ঘোষণা আসে। হাওলাদারকে বাদ দিয়ে রাঙ্গাকে মহাসচিব করা হয়। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে থাকা এরশাদ গত ৬ই ডিসেম্বর অল্প সময়ের জন্য বনানীতে দলের কার্যালয়ের সামনে এসে নেতাকর্মীদের বলেন, তার চিকিৎসায় বাধা দেয়া হচ্ছে, তাকে বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। এরশাদের এ বক্তব্যের পর নানা রহস্য তৈরি হয়।
গত ৮ই ডিসেম্বর রাতে রুহুল আমিন হাওলাদারকে এরশাদের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এরশাদ তাকে বিশেষ সহকারী নিয়োগের চিঠিতে উল্লেখ করেন, জাপা চেয়ারম্যানের পরেই হবে রুহুল আমিন হাওলাদারের অবস্থান। পার্টির চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে তিনি সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম পালন করবেন এবং পার্টির যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। তাহলে এখন থেকে কি পার্টির সকল সিদ্ধান্ত রুহুল আমিন হাওলাদার নেবেন? এরশাদের বিদেশ থাকাকালীন সময়ে পার্টির সকল দায়িত্ব কি পালন করবেন বিদায়ী মহাসচিব। এ প্রশ্নের কোন উত্তর পাওয়া যায়নি নেতাকর্মীদের কাছ থেকে। পদ হারানোর পর থেকে পার্টি কার্যালয়ে রুহুল আমিন হাওলাদারকে দেখা যায়নি। টেলিফোনেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না নেতাকর্মীরা।
মহাজোটে জাপার ২৯ আসন নিশ্চিত নয়মহাজোটে জাপার যে ২৯টি আসন রয়েছে সেটা নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছেন পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা। মহাজোট থেকে পাওয়া ২৯টি আসন থেকে আরো কমতে পারে বলে তিনি জানান। যদিও জাপা’র জন্য আওয়ামী লীগ ২৬ আসনে তাদের কোনো প্রার্থী দেয়নি। অন্য তিনটি আসনে জাপার সঙ্গে মহাজোটের প্রার্থী রয়েছে। অন্যদিকে জাপার উন্মুক্ত আসনের সংখ্যা বাড়বে বলে জানান রাঙ্গা। বর্তমানে জাপার উন্মুক্ত আসনের সংখ্যা ১৬০টি। আর জাপার হিসাবে তাদের মহাজোটের আসন ২৯টি। এ নিয়ে তাদের ১৭৯টি আসনে প্রার্থী রয়েছে। জাপা মহাসচিব বলেছেন, মহাজোটে যে ক’টি আসন পেয়েছে তাতে নেতা-কর্মীরা সন্তুষ্ট নয়। কিন্তু মহাজোটের স্বার্থে আমরা মেনে নিচ্ছি। গতকাল দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। মসিউর রহমান রাঙ্গা আরও বলেন, উন্মুক্ত নির্বাচনে মহাজোটের কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ মহাজোটভুক্ত যে প্রার্থী শক্তিশালী, তাকেই সমর্থন দেয়া হবে। উন্মুক্ত নির্বাচনে পার্টির নেতা-কর্মীদের মাঝে উৎসাহ সৃষ্টি হবে।