বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সরকার পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, সরকার পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে বলেই দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত রায় দিয়েছে আদালত। নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণা শুরুর দিনেই বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ শুরু করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিভিন্ন স্থানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীদের প্রচারণার মাইক ভাঙচুর এবং বিএনপির কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতেই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করেছে। অন্যদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ঢাকঢোল পিটিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছত্রছায়ায় মিছিল ও সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। এ মিছিল থেকে তারা রাস্তার ধারে বিএনপির অফিস দেখলেই সেই অফিসে হামলা চালিয়ে তছনছ করছে। এদিকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলেও রাজধানীসহ সারা দেশে পুলিশি তাণ্ডব থামছেই না। বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হামলা, গ্রেপ্তার ও গুম বন্ধ হচ্ছে না। পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ এখন ভয়ঙ্কর আতঙ্কের নাম। রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী প্রচারণার ন্যূনতম পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত না করতে পারায় এসব হামলা হচ্ছে। সরব এবং নীরব সন্ত্রাসে জনগণের উদ্বেগ ও আতঙ্ক কাটছে না। কুষ্টিয়াতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের একজন নেতার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিএনপির কেউ ভোট চাইতে গেলে ওই সন্ত্রাসী নেতা প্রকাশ্যে তাদের পিঠের চামড়া তুলে নেয়ার কথা বলছেন। এই নেতাদের মতো অসংখ্য সন্ত্রাসীকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নির্বাচনী মাঠে ছাড়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে জানতে পারছি- উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছ থেকে ব্ল্যাংক রেজাল্ট শিটে স্বাক্ষর নিয়ে রাখছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গুজব, অপপ্রচার ও কুৎসা রটানোর জন্য দেশের জনপ্রিয় মিডিয়াগুলোর নামে ফেক ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। যেমন- বিবিসি বাংলা, প্রথম আলো, বাংলা ট্রিবিউনসহ বেশকিছু বহুল পঠিত অনলাইনগুলোর নামে এই ভুয়া ওয়েবসাইটগুলো খোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের দু’একজন কর্মকর্তা কাটপিস, ছবি এডিট করে, বিভিন্ন ভুয়া ভিডিও বানিয়ে নিজেদের আইডিতে শেয়ার করে এবং ফেসবুক ইউটিউবসহ বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে। আধুনিক প্রযুক্তিকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করছে এই শাসকগোষ্ঠী। এসময় সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তারের তথ্য তুলে ধরে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, যতই আক্রমণ করা হোক জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকল বাধা উপেক্ষা করে মাঠে নামতে হবে। ধানের শীষের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে। জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারলে ধানের শীষের বিজয় ঠেকানো যাবে না। এ ছাড়া, নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশির নামে পুলিশি তাণ্ডবের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। একই সঙ্গে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ অবিলম্বে নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।