× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চট্টগ্রামে ভোটের মাঠে গ্রেপ্তার আতঙ্ক

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার

নির্বিঘ্নে প্রচারণা চালাচ্ছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও সমর্থকরা। কিন্তু ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও সমর্থকদের প্রচারণায় বিঘ্ন ঘটিয়ে চলেছে পুলিশ। চট্টগ্রামের বিভিন্ন নির্বাচনী আসনের প্রচারণা থেকে একের পর এক গ্রেপ্তার করছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। ফলে ভোটের মাঠে পুলিশ আতঙ্ক নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন বিএনপির প্রার্থী ও সমর্র্থকরা। নেতাকর্মীরা জানান, মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম-৯ কোতোয়ালি আসনে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় নগরীর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সমপাদক ইয়াকুব চৌধুরী নাজিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এর আগে সোমবার রাতে চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুণ্ড আসনের বিএনপির প্রার্থী ইসহাক কাদের চৌধুরীর পক্ষে মতবিনিময় সভা চলাকালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর বাড়ি থেকে বিএনপির ২৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ। ৯ই ডিসেম্বর ভোরে বাকলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সিকান্দার আলম (৫৩) নগরীর বাকলিয়ায় বিএড কলেজ এলাকা থেকে ও জামায়াতে ইসলামীর চকবাজার থানার সাবেক নায়েবে আমীর জহির উদ্দিন (৫৮)কে বাকলিয়া নয়া মসজিদ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বিএনপি নেতা ইয়াকুব চৌধুরী নাজিমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার কথা বলেন বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রণব  চৌধুরী।
নাশকতার অভিযোগে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের কথা বলেন সীতাকুণ্ড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন। এভাবে ভোটের মাঠ থেকে একের পর এক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেই চলেছে পুলিশ।

সারা দেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও আনুষ্ঠানিকভাবে মঙ্গলবার থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেন ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীরা। এরমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকাভুক্ত চার আসনের দুই প্রার্থী সকাল থেকেই প্রচারণা ও গণসংযোগ শুরু করেন।

এরা হচ্ছেন- চট্টগ্রাম-১১ বন্দর, পতেঙ্গা, ডবলমুরিং, ইপিজেড ও সদরঘাট আসনের প্রার্থী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম-১০ ডবলমুরিং-পাহাড়তলী-হালিশহর-খুলশী আসনের প্রার্থী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান।

এ ছাড়া জেলে থাকায় চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন নি। তবে তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। চট্টগ্রাম-৮ চান্দগাঁও- বোয়ালখালী আসনের প্রার্থী ও নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সুফিয়ানও মা-বাবার দোয়া নিয়ে বুধবার সকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন।  

শহরের বাইরে উপজেলাগুলোতেও নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন জোটের সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা। তবে সেখানে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনিয়া আসনে বিএনপির প্রার্থী নুরুল আলমের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় পুলিশ শিলক ইউপির সাবেক মেম্বার লতিফকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে আবদুল্লাহ আল নোমান নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন মঙ্গলবার বিকাল তিনটা থেকে। শুরুতেই তিনি ওয়াসা মোড়ে সমবেত এলাকাবাসী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। পরে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ওয়াসা মোড়, বাগঘোনা, হাইলেভেল রোড ও লালখান বাজার এলাকাবাসীর কাছে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন।

শুরুতে আবদুল্লাহ আল নোমান সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আমাদের ভাই ও প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা। সরকার আসবে, সরকার যাবে কিন্তু আপনারা দায়িত্বে থাকবেন। আপনাদের কাছ থেকে কোনো অনৈতিক সহযোগিতা চাই না। শুধু আইনের প্রয়োগ সবার জন্য সমান ভাবে করবেন এই নিশ্চয়তা চাই। আমার নেতাকর্মীদের নামে কোনো মামলা বা ওয়ারেন্ট থাকলে আমাকে তালিকা প্রদান করুন, আমি তাদেরকে নিয়ে আপনাদের কাছে থানায় হাজির হবো। দয়া করে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করবেন না।

এদিকে চান্দগাঁও-বোয়ালখালী আসনের প্রার্থী আবু সুফিয়ানের আনুষ্ঠানিক গণসংযোগ শুরু হয় বুধবার থেকে। সকাল ১০টায় নগরীর বহদ্দারহাট হক মার্কেটের সামনে থেকে গণসংযোগ শুরু করেন তিনি। এর আগে চান্দগাঁওয়ে কর্মিসভা করেন তিনি। সেখানে তৃণমূলের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে আবু সুফিয়ান বলেন, এলাকার সাধারণ মানুষের সাড়া পাচ্ছি। তারা ভোটাধিকার ফিরে পেতে মরিয়া। প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে তারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন। তবে প্রশাসনের অসহযোগিতা পাচ্ছি পদে পদে। গত দুইদিনে মিথ্যা মামলায় আমাদের ছয়জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার আতঙ্ক উপেক্ষা করেই নেতাকর্মীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন।

বুধবার সকালে ছোটপুল এলাকায় করিম নামে এক পথচারী বলেন, গতবারও ভোট দিতে পারি নি। এবার পারবো কি-না জানি না। তবে আশাবাদী। ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে পছন্দের প্রার্থীকেই ভোট দেবো। যার মাধ্যমে এলাকার প্রকৃত উন্নয়ন হবে তাকেই বেছে নেবো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর