চট্টগ্রামে বিএনপি’র এক প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন কমিশনের মনোনয়ন ফরমে প্রস্তাবকারী ও আরেক প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারীসহ ৩০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্ন মামলার আসামি। তাই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু প্রার্থীদের দাবি- কোনোরকম মামলা নেই এমন অনেক নেতাকর্মীকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, চট্টগ্রাম-১১ বন্দর-পতেঙ্গা আসনে বিএনপি প্রার্থী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাবকারী এবং নগরের ডবলমুরিং থানা বিএনপি’র সভাপতি ও দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের প্রাক্তন কমিশনার মোহাম্মদ সেকান্দর আলমকে বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৭ টার দিকে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নগরীর মেহেদীবাগের বাসভবনের সামনে থেকে নগর গোয়েন্দা পুলিশ যখন সেকান্দর আলমকে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল তখন ওই ভবনেই আমীর খসরুর সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনের পলিটিক্যাল সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবু জাকিরের বৈঠক চলছিল। বৈঠক শেষ করে খসরু যখন সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন তখনই বিএনপি’র কর্মীরা সেকান্দর আলমকে গ্রেপ্তারের খবর জানান।
খবর শুনেই বিস্ময় প্রকাশ করেন আমীর খসরু। আমীর খসরু এ সময় বলেন, শেষ পর্যন্ত আমার নির্বাচনী প্রস্তাবকারীকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেল! দিস ইজ ইমপসিবল। এভাবে হলে তো নির্বাচন করার কোনো দরকার নেই। এভাবে তো চলতে দেয়া যায় না।
বৃহস্পতিবার সকালে সেকান্দর আলমকে আটকের বিষয়ে জানতে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো তথ্য আমার জানা নেই। তবে তার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা রয়েছে।
এদিকে বিএনপি নেতা সেকান্দর আলমের এক আত্মীয় নামপ্রকাশ না করার শর্তে জানান, সেকান্দরের খোঁজ পাওয়া গেছে। কোতোয়ালি থানার দুইতলার একটি কক্ষে তাকে রাখা হয়েছে। তার সঙ্গে আমরা দেখা করেছি। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেয়া হয়েছে তাকে। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
একইভাবে চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনিয়া আসনে ধানের শীষের প্রার্থী নুরুল আলমের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ফজলুল কাদেরকেও গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় খুলশী থানার পুলিশ। এরপর নিখোঁজ ছিলেন তিনি। একপর্যায়ে বুধবার সন্ধ্যায় সিএমএম আদালতে তোলার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া বুধবার দিনগত রাতে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা ছাত্রদল নেতা আবু হাসান চৌধুরী আকবর ও লোকমান হোসেনকেও গ্রেপ্তার করে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ।
এদিকে বুধবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর ডবলমুরিং থানার পানওয়ালা পাড়ায় ছোট মসজিদ এলাকায় বিএনপি নেতা হাজী আবুল কাসেমকে (৪৫) গ্রেপ্তার করতে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের বাধার সম্মুখীন হন পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশের উপর পাথর নিক্ষেপ করে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ওই বিএনপি নেতাসহ ২৬ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।