× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ইসির বৈঠক /জবাবদিহিতার কথা মাথায় রেখে কাজ করার নির্দেশ

শেষের পাতা

সিরাজুস সালেকিন
১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, শুক্রবার

ইসির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কার্যকলাপ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি প্রার্থী ও ভোটারদের অহেতুক হয়রানি না করা এবং ইসির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় নির্বাচন কমিশনাররা এ নির্দেশনা দেন। বৈঠকে, প্রচারণা শুরুর পর প্রার্থীদের গ্রেপ্তার ও নির্বাচনী কার্যক্রমে বাধার বিষয়ে কমিশনাররা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এসব কর্মকাণ্ডের জন্য বাহিনীগুলোকে জবাবদিহি করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা। বৈঠকে সর্বশেষ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ইসিকে অবহিত করেন পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তারা বলেছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জঙ্গি হামলা হতে পারে। ভোটের আগে অপপ্রচার ঠেকাতে ইন্টারনেটের গতি কমানোর পরামর্শ দেন তারা।

এছাড়া গণমাধ্যমকর্মী ও পর্যবেক্ষকদের পরিচয়ে যাতে দুর্বৃত্তরা ভোট পর্যবেক্ষণে আসতে না পারে সে বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়।
বৈঠকে দেশের সব বাহিনীর প্রতিনিধি, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, সব রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন। সিইসি তার বক্তব্যে গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের অভিজ্ঞতার আলোকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন।

নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করার নির্দেশও দেন তিনি। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালঞ্জ জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ইসির নিয়ন্ত্রণে রাখা। এটি খুব দুরূহ। তিনি বলেন, সরকার সবার প্রতি সমান আচরণ করলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা সম্ভব। এক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন। গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত যদি নির্বাচন হয়, তবে এই নির্বাচন অবশ্যই স্বচ্ছ ও শুদ্ধ হতে হবে। নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রার্থী ও ভোটাররা ভোট দিয়ে নিশ্চিন্তে বাড়ি আসবেন তা নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পেশাদারিত্ব দেখাতে হবে।

অতি উৎসাহ বা নির্লিপ্ততার ব্যাপারে তিনি সবাইকে সতর্ক করেন। কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সাংবিধানিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সবাইকে বিবেকের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। নির্বাচনে সব দল ও প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। নিয়ম না মানলে সে যে দলেরই হোক তাকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের ব্যর্থতার কথা আমরা শুনতে চাই না। বৈঠকে কমিশনার কবিতা খানম ঢাকা ডিসি ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ঢাকা-১ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাককে পুলিশের আটকের বিষয়ে কৈফিয়ৎ তলব করেন। তিনি বলেন, তাকে আটকের খবর শুনে ঢাকার ডিসির কাছে ফোন করেন। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে ডিসি বলেন বিষয়টি তার জানা নেই। কবিতা খানম বলেন, এই যদি পরিস্থিতি হয়; তাহলে প্রশাসনের সমন্বয়টা কীভাবে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, কারণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে সেজন্য জবাবদিহি করতে হবে। সবার প্রতি আইনের প্রয়োগ অভিন্ন হতে হবে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কেন ও কিভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা রিটার্নিং অফিসাররা জানেন না, তাহলে কীসের সমন্বয় আছে। তিনি বলেন, ভোটার ও জনগণ সবাই ইসির দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের প্রশ্ন আমরা ভোট দিতে পারবো কি না, ভোট দিয়ে ফিরে আসতে পারবো কী না? আমাদের কথা হলো ইসির ভাবমূর্তি যেন ক্ষুণ্ন না হয়।

কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, আইনানুগভাবে প্রাথীঁরা যেন প্রচার চালাতে, ভোটাররা যেন ভোট দিতে পারে। কোনো প্রকার সহিংসতা ও প্রাণহানি হোক তা আমরা চাই না। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের অতি উৎসাহিত না হওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়াও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সোশ্যাল মিডিয়া, গণমাধ্যম কর্মী ও পর্যবেক্ষকদের নিয়ন্ত্রণে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। পাশাপাশি তারা ভোটের আগের তিন দিন মোবাইল ব্যাংকিং ও কুরিয়ার সার্ভিস বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়ে বলেন, ব্যাংক থেকে প্রচুর নগদ অর্থ উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব অর্থ উত্তোলনের ওপর মনিটরিং করা প্রয়োজন।

১০ই ডিসেম্বর সংসদের ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় দুজন নিহত হওয়ার বিষয়কে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উল্লেখ করেন বৈঠকে যোগ দেয়া কর্মকর্তারা।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি বলেন, নির্বাচনে মোবাইল ব্যাংকিং ও বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমে টাকার লেনদেন হয়। এসব দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র দেয়ার বিষয়ে নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর