× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রচারণায় হামলা-সংঘর্ষ /৩০ নির্বাচনী এলাকায় বাধা, হামলা, সংঘাত

প্রথম পাতা

বাংলারজমিন ডেস্ক
১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, শুক্রবার

বিরোধী পক্ষের প্রচার-প্রচারণায় হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। আনুষ্ঠানিক প্রচারণার চতুর্থদিন গতকালও দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার শিকার হয়েছে ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। বাধা দেয়া হয়েছে প্রচারণায়। বোম হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এদিন অন্তত ৩০টি নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বাধা, হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল যশোরে ধানের শীষ প্রার্থীর অফিসে বোমা হামলায় ৪ সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন দলটির ১১ নেতাকর্মী। পাবনার সাঁথিয়ায় সদ্য গণফোরামে যোগ দেয়া ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী আবু সাইয়িদের গাড়িবহরে হামলা-ভাঙচুর হয়েছে। রামগঞ্জে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর সভায় হামলায় ১০ জন আহত হয়েছে।
ঝালকাঠিতে বিএনপি প্রার্থী জীবা খানের গাড়িবহরে ভাঙচুর চালিয়েছে সরকারদলীয়রা। মাগুরার মহম্মদপুরে বিএনপির অফিসে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়েছে। খুলনায় মারপিটের শিকার হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে সেখানে। কুষ্টিয়া, বরিশালের গৌরনদী, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, সোনারগাঁও, পটুয়াখালীর বাউফলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঐক্যফ্রন্ট নেতাকর্মীদের প্রচারণায় বাধা দেয়া হয়েছে। কক্সবাজারে বিএনপি প্রার্থী হাসিনা আহমেদকে থানায় অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঢাকায় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা আ স ম আবদুর রব ও মাহমুদুর রহমান মান্নার প্রচারে বাধা দিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ।

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর থেকে জানান, যশোরে ছড়িয়ে পড়ছে নির্বাচনী সহিংসতা। গতকাল দিনভর যশোরের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় ধানের শীষ প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, বোমা হামলা, নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা, প্রার্থীকে হত্যা প্রচেষ্টাসহ নানা সহিংস ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪ সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১১ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে সময় টিভির ক্যামেরা। এদিকে এসব হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় বিকেলে যশোর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিকার চেয়েছেন, যশোর-৩ (সদর) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপি নেতারা জানান, গতকাল সকালে সদর উপজেলার হালসা বাজারে নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করতে যান ধানের শীষ প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। খবর পেয়ে আগে থেকেই হাসলা বাজারে বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। কিন্তু অনিন্দ্য ইসলাম অমিত পৌঁছানোর আগেই নৌকা প্রতীকের একদল সশস্ত্র কর্মী সেখানে উপস্থিত হয়ে ধানের শীষের কর্মীদের মারপিট করে। একপর্যায়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ধানের শীষ প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে। বিএনপি কর্মীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে হামলাকারীরা ২টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এই হামলায় বিএনপির আহত ৫ কর্মীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে বিকালে শহরের বকচর মুড়লী এলাকায় বিএনপি প্রার্থী অমিতের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে। এদিকে বেলা ১১টার দিকে যশোর শহরের গুরগোল্লা মোড়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর একটি প্রচার গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে নৌকার সমর্থকরা। এদিকে যশোর-২ নির্বাচনী এলাকার ঝিকরগাছা ও যশোর-১ নির্বাচনী এলাকা শার্শায় ধানের শীষের প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের মারধরের ঘটনা ঘটে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ এসব ঘটনার জন্য নৌকা প্রতীকের কর্মী সমর্থকদের দায়ী করেন।
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব) এর নির্বাচনী সভার প্যান্ডেল ও চেয়ার ভাঙচুর করেছে স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধানের শীষের প্রার্থীর নির্বাচনী সভায় না আসতে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। বুধবার রাতে হাজী মুজিব শহরের পূর্বাশাস্থ নিজ বাসভবনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, শহরতলির বিরাইমপুর এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় ৭টায় আমার নির্বাচনী মিটিং করতে প্যান্ডেল তৈরি করে। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হঠাৎ করে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিকলীগের ৩০-৪০ জন সন্ত্রাসী দা, লাঠিসোটা ও ধারালো দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে প্যান্ডেল ও চেয়ার ভাঙচুর করে। একইদিন উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের বরুনা হাজীপুর এলাকায় পূর্ব নির্ধারিত আমার নির্বাচনী মিটিং এর সময় নির্ধারণ করা হয় বিকেল তিনটায়। কিন্তু আধা ঘণ্টা আগে হঠাৎ স্থানীয় যুবলীগ একইস্থানে মিটিংয়ের ডাক দিয়ে এলাকায় মাইকিং করে। আবার ওই এলাকার আলী হোসেন ও খুর্শেদ আলীর নেতৃত্বে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমার মিটিংয়ে লোকজন না আসতে বলে। তারা আমার কর্মী-সমর্থকদের এও বলে দেয়, যদি মিটিংয়ে আসে, তাহলে এককজনের নামে ৮-১০টা করে মামলা দেয়া হবে। পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে সাইজ করা হবে। হাজী মুজিবের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই এ হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়েছে। উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছালিক আহমদ বলেন, স্থানীয় ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ ও যুবলীগের বিরুদ্ধে হাজী মুজিবের আনা অভিযোগসমূহ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। নিজেদের দলের কোন্দল মিটাতে না পেরে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তিনি ভোটারদের মধ্যে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম নজরুল বলেন, একজন প্রার্থী হয়ে তিনি কীভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে এমন ডাহা মিথ্যা বলতে পারেন, আমার বুঝে আসে না।

সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, সদ্য গণফোরামে যোগ দেয়া পাবনা-১ আসনের ধানের শীষের প্র্রার্থী ড. আবু সাইয়িদের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়েছে। পাবনার সাঁথিয়া বাজারে শিমুলতলা মোড়ে গতকাল বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আবু সাইয়িদের বহরে থাকা দুটি গাড়ি ভাঙচুর ও দুটি মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কেড়ে নেয়া হয়েছে প্রচার মাইকও। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর কর্মী-সমর্থকরা অতর্কিত এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আবু সাইয়িদ সমর্থকরা। এদিকে হামলার শিকার হয়ে আবু সাইয়িদ সাঁথিয়া থানায় গিয়ে পুলিশকে বলেন, আমি আক্রান্ত হয়েছি। পরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করবেন বলেও জানান তিনি। বিষয়টি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এ প্রার্থী। আবু সাইয়িদের কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, পূর্বনির্ধারিত নির্বাচনী গণসংযোগে যোগ দিতে সাঁথিয়ার ধোপদাহ ইউনিয়নে যাচ্ছিলেন আবু সাইয়িদ। পথে সাঁথিয়া বাজারের কাছাকাছি শিমুলতলী মোড়ে গাড়িবহরে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন। সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা আবু সাইয়িদকে ঘিরে রাখেন। তারা তাকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে দ্রুত থানায় নিয়ে যায়। এ সময় কারও হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। আবু সাইয়িদ থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়ে পূর্বনির্ধারিত গণসংযোগে যোগ দেন।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়ির সদরের স্বনির্ভর বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার প্রচারণার গাড়িতে ইউপিডিএফ এর হামলা এবং সদরের হরিনাথপাড়া এলাকায় বিএনপির প্রার্থী শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়ার নির্বাচনী প্রচারণার গাড়িতে প্রতিপক্ষের হামলার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার ইউপিডিএফের হামলায় আহত সাহাব উদ্দিন জানায়, উপজেলায় একটি জিপ গাড়িতে করে মাইক দিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রচারণা করছিলেন নৌকার সমর্থকরা। উপজেলা থেকে তারা যখন স্বনির্ভর বাজারে পৌঁছায় তখন আকস্মিক প্রচার গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়ি আটকে রাখে এবং লোহার রড দিয়ে তাদের মারধর করে ইউপিডিএফ সমর্থিত লোকজন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার্স ইনিচার্জ (ওসি) মো. সাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, আওয়ামী লীগের প্রচারণার গাড়ি আটকে রাখার খবর শুনেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ইউপিডিএফ সমর্থিত লোকজন এ কাজ করে থাকতে পারে। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে একই দিন দুপুর আড়াইটায় সদরের হরিনাথপাড়া এলাকায় বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণার গাড়িতে হামলা চালিয়ে বিএনপির ৫ নেতাকর্মীকে মারধর, জিপগাড়ির কাচ ও মাইক ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আবু তালেব বলেন, বিএনপি প্রার্থীর প্রচারণায় হামলার ঘটনাটি রিটার্নিং অফিসারকে জানানো হয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রামে ৩০নং পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী গণসংযোগ করার সময় আওয়ামী নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে ৫-৬ জনকে আহত করে। চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় ধানের শীষের প্রার্থী মোশাররফ হোসেনের গাড়িবহরে হামলা করেছে আওয়ামী লীগ। এতে আহত হয়েছে দলের ১০-১২ জন নেতাকর্মী। কক্সবাজার-১ আসনে ধানের শীষ প্রার্থী হাসিনা আহমেদ এর নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে সশস্ত্র হামলা চালায় ও গুলিবর্ষণ করে। হামলায় চকোরিয়া পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র চকোরিয়া পৌরসভা নুরুল ইসলাম ইসলাম হায়দারসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়ে জেলা হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। নির্বাচনী এলাকায় প্রতিনিয়ত নির্বাচনী প্রচার মাইক ভেঙে ফেলছে, ছিনিয়ে নিচ্ছে এবং পোস্টার-লিফলেট ছিঁড়ে ফেলছে। ধানের শীষের প্রার্থী হাসিনা আহমেদ এ বিষয়ে পুলিশকে অভিযোগ দিলে পুলিশ তার সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করে। সিরাজগঞ্জে ধানের শীষের প্রার্থী মান্নান তালুকদার নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় তার ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালায়। কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে কুলিয়ারচর উপজেলায় চৌমুরী বাজার এলাকায় জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী শরিফুল আলমের ওপর হামলা চালায় সাদা পোশাকধারী পুলিশ। এতে তিনিসহ বিএনপির ১৫-২০ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম হিলালীর বাড়িতে পুলিশের মদতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুরসহ ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। হামলায় সেখানে থাকা বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এছাড়া গতকাল বিকেলে ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হাবুল মিয়ার দোকানসহ বিএনপি নেতাকর্মীর ৫/৬টি দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা। বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাসভবনে কর্তব্যরত সময় টিভি’র রিপোর্টার আহমেদ সালেহীন, ক্যামেরাপার্সন মিন্টু, ৭১ টিভি’র রিপোর্টার আরেফিন শাকিলসহ কয়েকজন ক্যামেরাপার্সন ও গাড়ি চালককে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রচ- মারধর ও লাঞ্ছিত করেছে। জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানার মামুদপুর ইউনিয়নে গতকাল বিকেলে নির্বাচনী অফিস উদ্বোধনের পরপরই স্থানীয় চেয়ারম্যান আওয়ামী নেতার নেতৃত্বে অফিস ভাঙচুর করে এবং ধানের শীষের কর্মীদের হুমকি দেয়।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুর-১ রামগঞ্জ আসনের ২০ দলীয় জোট প্রার্থী ধানের শীষের শাহাদাত হোসেন সেলিমের করপাড়ার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ার হোসেন খানের সমর্থকরা। গতকাল দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা চলাকালে এ হামলা চালানো হয়। এ সময় দু’টি মোটরসাইকেল, সভা মঞ্চের চেয়ার টেবিল ও বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। সেলিম জানান, দুপুরে বাড়িতে নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী মতবিনিময় সভা চলছিল। হঠাৎ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন চৌধুরী এবং করপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুল হক মজিবের নেতৃত্বে একটি মিছিল নিয়ে বাড়িতে ঢুকে মতবিনিময় সভায় হামলা চালায়। এ সময় দুইটি মোটরসাইকেল, মঞ্চের চেয়ার-টেবিল ও দুইটি ঘরে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ৪ নারীসহ অন্তত ১০জন আহত হয়। রামগঞ্জ থানা পুলিশ মিছিলের পিছনে ছিল বলেও অভিযোগ করেন ধানের শীষের এ প্রার্থী।
ঝালকাঠি প্রতিনিধি জানান, ঝালকাঠি-২ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জীবা আমিনা খান ও তার সমর্থকের গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের বিশ্বরোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিএনপির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, সকালে বিশ্বরোড এলাকার একটি বাড়িতে নির্বাচনী মিটিং চলছিল। এ সময় দুর্বৃত্তরা গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জীবা আমিনা খান অভিযোগ করেছেন। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে দাবি করা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে নিজেরাই গাড়ি ভাঙচুর করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ঘটনায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মৌখিক অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, তাড়াশে নির্বাচনী প্রচারণার সময় দেশীগ্রাম ইউনিয়নে হামলার শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসাক। নৌকার প্রার্থী অধ্যাপক ডা. আবদুল আজিজ বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাড়াশ প্রেস ক্লাবে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন। তিনি জানান, কাটাগাড়ী বাজারে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় দেশীগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসাকের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এ সময় তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা করান।

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি জানান, মহম্মদপুর উপজেলার বনগ্রাম বাজারের বিএনপির নির্বাচনী অফিসে হামলা ও ভাংচুরের  ঘটনা ঘটেছে।   বুধবার সন্ধ্যায় পলাশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে এ হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন বিএনপির প্রার্থী এড. নিতাই রায় চৌধুরী ও নেতাকর্মীরা। এ সময় বিএনপির কর্মীদের মারধরও করা হয়। নিতাই রায় চৌধুরী জানান, ওইদিন সন্ধ্যার দিকে নির্বাচনী কমিটি গঠন উপলক্ষে বিএনপি নেতাকর্মীরা নির্বাচনী অফিসে সমবেত হয়। এ সময় রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিএনপি অফিসে হামলা চালায়। তারা অফিসের মধ্যে চেয়ার-টেবিল এবং ৫ থেকে ৭টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ বিষয়ে মহম্মদপুর থানার ওসি মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ঘটনা বড় কিছু নয়।
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে জানান, খুলনা মহানগরীর সিটি কলেজ ও রয়েলের মোড় এলাকায় বিএনপিকর্মী মো. শফিউদ্দিন ও ডা. নুর উদ্দিনকে মারপিট করে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে ছাত্রলীগ নেতা দেব দুলাল বাড়ৈ, বাপ্পীর ভাই সজল বাড়ৈ। মঙ্গলবার রাতের এ ঘটনায় রিটার্নিং অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন খুলনা-২ আসন থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট মনোনীত প্রার্থী বিএনপির মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি অভিযোগ করেন, ওই একই রাতে রূপসা মোড়, টিবি ক্রস রোড ও হাজী মহসিন রোড এলাকায় ধানের শীষের পোস্টার টানানোর সময় এ ঘটনা ঘটে। অপর এক লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধির ৬-১৪ ধারা লঙ্ঘন করে স্থানীয় দৈনিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ জুয়েলের পক্ষে বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছে। যা বিধিমালার ১৮ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সরওয়ার জাহান বাদশা ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় হামলাকারীরা দুই পক্ষের দু’টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। বুধবার সন্ধ্যা রাতে উপজেলার মশাউড়া গোলচত্বর মোড়ে এ ঘটনা ঘটার পর আওয়ামী লীগ কর্মীরা ইয়ার আলী মেম্বর নামে এক বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ কর্মী সুরুজ (৪৫) রুয়েন (৩৫) আহত হয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয়রা এ তথ্য জানিয়েছে।  জানায়, মশাউড়া গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী সুরুজ আলীর নেতৃত্বে কয়েকজন আওয়ামী লীগকর্মী বাদশার নির্বাচনী গণসংযোগ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে মশাউড়া গোল চত্বরে ইয়ার আলী মেম্বরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিএনপির বিক্ষুব্ধ কর্মীরা সুরুজ আলীকে মারপিট করে তা মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। পরে আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা পাল্টা ধাওয়া দিয়ে ইয়ার আলী মেম্বরের একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং তার বাড়িতে আগুন দেয়।  

গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি জানান, বুধবার গভীর রাতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরের বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ১১ নেতার বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুরসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের মারধর করে এলাকায় ত্রাস চালিয়েছে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে ওই ৯ নেতাকে খোঁজাখুঁজি করে তারা। না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের মারধর করে ত্রাস সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে তারা পরিবারের সদস্যদেরকে হুমকি দিয়ে যায় যে, আগামী ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে তারা যেন বাড়ি না ফেরে। বাড়ি ফিরলে তাদেরকে হত্যা করা হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী এম. জহির উদ্দিন স্বপন জানান, বুধবার দিবাগত রাত ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ৫০টির অধিক  মোটরসাইকেল নিয়ে ধানের শীষের কর্মী গৌরনদী পৌর বিএনপির সভাপতি এসএম মনিরুজ্জামান মনির, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. মিজানুর রহমান খান মুকুল (ভিপি মুকুল), পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ জহির সাজ্জাদ হান্নান, গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বদিউজ্জামান মিন্টু, পৌর যুবদলের সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো. ফরিদ মিয়া, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরদার এমএ গফুর, মো. বুলবুল সরদার, যুবদল নেতা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রাজা (ভিপি জাকির), ছাত্রদল নেতা আল মামুন খানের বাড়িঘরে হামলা চালায়। গৌরনদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ জহির সাজ্জাদ হান্নানের স্ত্রী নাছরিন পারভীন জানান, রাত সোয়া ২টার দিকে ৫০টির অধিক মোটরসাইকেল নিয়ে স্থানীয় একজন পৌর কাউন্সিলরের নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা দু’দিক থেকে ঘরের দু’টি দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে হান্নান শরীফকে খুঁজতে থাকে। তাকে না পেয়ে হামলাকারীরা আমার বড় ছেলে একটি বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র মো. জাহিদ হাসান শরীফ (২১) এর বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে বৃহস্পতিবারের মধ্যে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দিয়ে যায়। একই অভিযোগ করেছেন অন্য নেতারাও।

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের ওপর হামলা চালিয়েছে পৌর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইকরামুল হাসান ওরফে রনি বিল্লাহ। গতকাল বিকালে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে আয়োজিত নির্বাচনে আচরণবিধি বিষয়ক আইনশৃঙ্খলা সভায় সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. শাহীনূর ইসলাম ও সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলমের সামনে এ হামলা চালিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ রনি বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম পিপিএম, ওসি তদন্ত সেলিম মিয়া ও সেকেন্ড অফিসার সাধন চন্দ্র বসাককে প্রত্যাহার দাবি করেছেন বিএনপি প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান। তিনি আরো বলেন, বুধবার রাতে দুর্র্বত্তরা পৌরসভা ও বৈদ্যেরবাজার এলাকায় তার নির্বাচনী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে। জানা যায়, প্রার্থীদের নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে নির্বাচনে আচরণবিধি বিষয়ক আইনশৃঙ্খলা সভায় সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. শাহীনূর ইসলাম একটি সভার আয়োজন করেন। এ সভায় সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম ও বিভিন্ন প্রার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় সোনারগাঁ পৌরসভার ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভট্টপুর গ্রামের নাসিরউদ্দিনের ছেলে ইকরামুল হাসান ওরফে রনি বিল্লাহ সভায় প্রবেশ করে লোহার প্লাস নিয়ে হামলা করে। এ সময় ওই ছাত্রলীগ নেতার হামলায় আজহারুল ইসলাম মান্নান আহত হন। মান্নানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বিএনপি প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের অভিযোগ, উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে ঢুকে ওসি ও ইউএনও উপস্থিতিতে একজন ছাত্রলীগ নেতা আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে প্রমাণ হয় সোনারগাঁয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এছাড়াও পুলিশের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় ওই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে তিন মাসের কারাদ- দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।

সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি জানান, সোনাগাজী থেকে ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী দাগনভূঞা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. আকবর হোসেনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রচার মাইক খুলে নিয়েছে যুবলীগ কর্মীরা। উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিএনপি প্রার্থীর ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে প্রচার মাইক বখতার মুন্সী ডাকবাংলা নামক স্থানে গেলে স্থানীয় যুবলীগ কর্মী মো. ফয়সলের নেতৃত্বে ৫-৬ জন যুবলীগ কর্মী সিএনজি অটোরিকশা থেকে দু’টি প্রচার মাইক খুলে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, প্রচার মাইকে কে বা কারা বাধা দিয়েছে। মাইক খুলে নেয়ার বিষয়টি সত্য নয়। তিনি বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠিয়েছেন।

আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পুরিন্দা এলাকায় বৃহম্পতিবার বিএনপি’র প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদের গণসংযোগে হামলা করা হয়েছে। এ সময় আজাদের গাড়িসহ অন্তত ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বাধা দেয়ায় সংঘর্ষে বিএনপি’র অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন, অপু, রুহুল আমিন, জুবায়ের, সবুজ, বর্ষণ, শামীম, মুছা, জলিল, জামাল, রনি ও আউয়াল। এদের মধ্যে জুবায়ের, নাজমুল, সবুজ ও আউয়ালসহ তিনকে আশঙ্কা জনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে বুধবার রাতেও স্থানীয় নারান্দী এলাকার আজাদের পোস্টার লাগালে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতকর্মীদের হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। আহতরা হলেন- সোহাগ, প-িত, হৃদয়, সুজন, তোফাজ্জল, জজ মিয়া, জুলহাস, আল-আমিন ও গোলজার। এরা সবাই নারান্দী এলাকার বাসিন্দা।
জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান আব্দু জানান, আজাদের নেতৃত্বে বৃহম্পতিবার দলীয় নেতাকর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে সাতগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন। এ সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের স্থানীয় পুরিন্দা বাজার এলাকায় পৌঁছলে বহরে থাকা পাঁচটি মাইক্রোবাস আটক করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে আজাদ তার গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তিনি আরও বলেন, এ সময় আজাদের বহনকৃত (ঢাকা- মেট্রো-ঘ-১৩-৭৮৯০) নম্বরের গাড়িসহ ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বাধা দিলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোঁটার আঘাতে বিএনপি’র অন্তত ২০ জন কর্মী-সমর্থককে গুরুতর আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আড়াইহাজার থানার ওসি আক্তার হোসেন বলেন, দুইদলের প্রার্থীর লোকজনের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় মো. মনির হোসেন (৩৫) নামে  এক বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। বুধবার রাত পৌনে নয়টার দিকে উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের কুমারখালী এলাকায় ওই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় লোকজন মনিরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই রাতেই তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, ওই ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের লাল গাজীর ছেলে চটপটি বিক্রেতা মনির হোসেন বিএনপিকে সমর্থন করায় স্থানীয় ছাত্রলীগকর্মী মো. সজলের (২৭) নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের একটি দল তাকে কুপিয়ে জখম করে। তবে ছাত্রলীগ কর্মী মো. সজল এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিরাপত্তা চেয়েছেন হাফিজ
ভোলা-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারছেন না বলে ইসির কাছে অভিযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে একজন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি অভিযোগ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, আমি ঢাকা থেকে যেতে পারছি না। লঞ্চঘাটে গেলে নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে। তার নির্বাচনী এলাকায় গেলে কোনো সমস্যা নেই হবে সেখানে জনগণ ও তার কর্মী বাহিনী আছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, নির্বাচনী এলাকায় গেলে আমার কোনো সমস্যা নেই নির্বাচনী এলাকায় আমার জনগণ আছে আমার কর্মী বাহিনী আছে। গুলিস্তানে তার নেতাকর্মীদের আক্রমণ করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকা শহরে আমরা বহিরাগত। এই ঢাকা শহর থেকে আমি বাড়ি যেতে পারছি না। গুলিস্তানে আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি নির্বাচনের কমিশনের কাছে আমরা নির্বাচনী এলাকার যাওয়ার জন্য নিরাপত্তা চেয়েছি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর