ঢাকা-৭ আসনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আলহাজ মোস্তফা মোহসিন মন্টু আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। গতকাল জুমার নামাজ ও কবর জিয়ারতের পর আজিমপুর কবরস্থানের সামনে থেকে নির্বাচনী প্রচার ও জনসংযোগ শুরু করেন মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকা জেলার কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসিন মন্টু। প্রচার শুরু করার আগে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন তিনি। এই সময় মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিদের কাছে দোয়া চান ধানের শীষের এই প্রার্থী। তিনি মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী ৩০শে ডিসেম্বর দেশে সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয় সেজন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই। মানুষ যাতে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে পারেন। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে এমন প্রত্যাশা করে মোস্তফা মোহসিন মন্টু বলেন, আসন্ন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে বলেই আমি প্রত্যাশা করি। সবাই যার যার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। মসজিদ থেকে বের হয়ে আজিমপুর কবরস্থানে এই আসনের সাবেক সংসদ এবং বিএনপি নেতা মরহুম নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু এবং মোস্তফা মোহসিন মন্টুর স্বজনদের কবর জিয়ারত করেন তিনি। পরে আজিমপুর বতটল মোড়, নতুন পল্টন লাইন, ইরাকি কবরস্থানের আশপাশে বিভিন্ন অলি-গলিতে প্রচার করে বিকাল তিনটার দিকে নিউ মার্কেটের সামনে এসে প্রথম দিনের মতো নির্বাচনী প্রচার ও জনসংযোগ শেষ করেন। এ সময় শত শত লোক তার প্রচার কাজে অংশগ্রহণ করেন। প্রচারকালে বিভিন্ন বাসা বাড়ি থেকে সাধারণ মানুষ জানালা দিয়ে হাত উঁচু করে তার নির্বাচনী প্রচারকে স্বাগত জানাতে দেখা গেছে। আজ সকাল সাড়ে ৯টায় পুরান ঢাকার আরমানিটোলা গির্জা থেকে প্রচার ও জনসংযোগের কাজ শুরু করার কথা রয়েছে তার।
উল্লেখ্য, পুরান ঢাকার এই আসনটিতে মোস্তফা মোহসিন মন্টুর বিপক্ষে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের হাজী মো. সেলিম। দেশের অন্য সংসদীয় আসনগুলোর মতো ঢাকার-৭ আসনেও ভোটযুদ্ধের জন্য অন্য প্রার্থীরা মাইক নিয়ে প্রচার শুরু করেন তিন দিন আগ থেকেই। পুরান ঢাকার এই আসনটির বিভিন্ন অলি-গলি ঘুরে দেখা গেছে, পুরোদমে এখনও প্রচার শুরু হয়নি। হাজী সেলিমের নৌকা মার্কা, বাসদের খালেকুজ্জামান (মিলন) এর মই মার্র্কা এবং ইসলামী আন্দোলনের হাজী আবদুর রহমানের হাতপাখার কিছু পোস্টার গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দেখা গেছে। এই আসনে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মোস্তফা মোহসিন মন্টু ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। অতীতে ঢাকা-৭ আসনে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে একাধিকবার। একেকবার একেক দলের প্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। তবে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি এই তিন দলের প্রার্থীরাই ঘুরে ফিরে নির্বাচিত হয়েছেন। কেউ কেউ একাধিকবারও নির্বাচিত হন। এই আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন সাবেক এমপি মরহুম নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু। বর্তমানে এই আসনে স্বতন্ত্র সংসদ হিসেবে রয়েছেন হাজী মো. সেলিম। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির তারেক আহমেদ আদেল, জাকের পার্টির বিপ্লব চন্দ্র ভৌমিক, গণফ্রন্টের রিয়াজ উদ্দিন, মুসলিম লীগের আফতাব হোসেন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের জাহাঙ্গীর হোসেন, এনপিপির মাসুদা পাশা, খেলাফত আন্দোলনের মো. হাবিবুল্লাহ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত পুরান ঢাকার বংশালের একাংশ, কোতোয়ালির একাংশ, চকবাজার, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগর থানার ১৬টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-৭ আসন। এই আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২৮ হাজার ২৬৯।