× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এত আনন্দের মাঝেও ‘দুঃখী’ আরিফুল

খেলা

ইশতিয়াক পারভেজ
১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, সোমবার

এই বছর বাংলাদেশ দল এখন পর্যন্ত ৮ টেস্ট, ২০ ওয়ানডে ও ১৩ টি- টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে এই বছর শেষ করবে টাইগাররা। এই বছরের  শুরুতেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক দিয়ে শুরু করেন অল রাউন্ডার আরিফুল হক। বছরজুড়েই তিনি ছিলেন দলের সঙ্গে। কিন্তু তার ভাগ্যে জুটেছে ২ টেস্ট, এক ওয়ানডে ৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার। বলতে গেলে সাইড বেঞ্চেই বসেই ছিলেন তিনি।

সব ফরম্যাট মিলিয়ে দারুণ বছর কেটেছে টাইগারদের। বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে ছিল আনন্দের বন্যা।
কিন্তু স্কোয়াডে বসে বসেই সেই আনন্দের মাঝে ছিলেন দুঃখী আরিফুল। এমনকি সব শেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে এক ম্যাচেও খেলার সুযোগ হয়নি তার। এবার টি-টোয়েন্টিতে হবে কি-না তাও জানা নেই! তবে এই দুঃখের মাঝেই তিনি খুঁজে ফেরেন সুখ। সিলেটে দৈনিক মানবজমি-এর স্পোর্টস রিপোর্টার ইশতিয়াক পারভেজের সঙ্গে নিজের পাওয়া না পাওয়া ও লক্ষ্য নিয়ে কথা বলেন আরিফুল হক। সেই কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-

প্রশ্ন: দলে থেকেও খেলার সুযোগ না পেয়ে কতটা হতাশ?
আরিফুল: হতাশা তো আছেই। দুঃখও পাই দারুণভাবে। তবে এটাই জীবন, একদিন সুযোগ আসবে এই বিশ্বাসেই এগিয়ে যাচ্ছি।

প্রশ্ন: আপনি কি ভেঙে পড়ছেন?
আরিফুল: না। এটি সত্যি যে, এই সময় মনে হয় আমিই সবচেয়ে বেশি দুঃখী ও আনন্দিত ক্রিকেটার। কারণ খেলতে না পারার কষ্ট ভুলে যাই দলের একের পর এক জয় দেখে। আমি সুযোগ পেলে কি করতে পারতাম  তা ভাবি না, খুশি হই যারা সুযোগ পাচ্ছে তারা কাজে লাগাচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আমার দেশ যখন জিতে, লাল-সবুজের পতাকা যখন উড়ে তখন এর চেয়ে আনন্দ আর কিছু থাকে না। এটি আমার একরকম অনুপ্রেরণাও। আমি মনে করি একদিন সুযোগ আসবেই। আমি দলের হয়ে মাঠে খেলে জয়ের সাক্ষী হবো। আমি একটা কথাই জানি এতে করে আমার মধ্যে নিজের পারফরমেন্স উন্নতি করার তাগিদ বাড়ছে।

প্রশ্ন: কি কারণে সুযোগ পাচ্ছেন না বলে মনে হয়?
আরিফুল: হুম ম... একটি হচ্ছে প্রতিযোগিতা। এখানে আমার জায়গাতে খেলার মতো আরো অনেকেই আছে। আবার এমনও হয়েছে একাদশে ছিলাম মাঠে নামার সুযোগ দেয়নি- অন্যরা তার আগেই ম্যাচ জিতে গেছে। আবার হয়তো এমন সময় মাঠে নেমেছি যে, দল হয় হারছে নয়তো জিতছে আমার বড় কোনো ভূমিকার সুযোগ ছিল না। আরেকটি কারণ হতে পারে আমার কিছু দুর্বলতা বা অপূর্ণতা আছে। যে কারণে আমার চেয়ে বেটার কাউকে দল সুযোগ দিচ্ছে।
প্রশ্ন: টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির তুলনায় ওয়ানডেতে সুযোগই পাচ্ছেন না। তাহলে কি আপনি অধিনায়ক মাশরাফির গুড বুকে নেই!

আরিফুল: মাশরাফি ভাইয়ের গুডবুকে আছি কিনা তা জানি না। তবে আমি মনে করি আমার এখনো তার দলে খেলার অপূর্ণতা কিছুটা হলেও আছে। কারণ আমি যেখানে খেলি সেখানে একজন জেনুইন অলরাউন্ডারের প্রয়োজন আছে দলের। আমার মনে হয় এখনো আমি বোলিংটা উন্নতি করতে পারিনি। যে কারণে টিমের কৌশলগত কারণে আমার জায়গা হচ্ছে না। আর একটা কথা হলো তিনি অসম্ভব দারুণ একজন অধিনায়ক। তাকে দেখেই অনেক কিছু  শেখার আছে। মাশরাফি ভাই যেভাবে দলকে মোটিভেট করে তা অন্য কেউ করতে পারবে কি-না সন্দেহ আছে। তিনি আমাকে বলেছেন, ‘দেখ সুযোগ না পেলে মন খারাপ করিস না। একদিন এমন সময় আসবে তোর জন্য সুযোগের অভাব হবে না।’  এতে আমি মনে করি আমার পারফরম্যান্স ও স্কিলে আরো উন্নতি আনতে হবে যেন তার আস্থা আমার উপর থাকে।

প্রশ্ন: দলে প্রতিযোগিতাকে কিভাবে দেখেন?
আরিফুল: অবশ্য দলের মধ্যে জায়গা করে নেয়ার যে প্রতিযোগিতা তা অসাধারণ। এমন প্রতিযোগিতা থাকলে নিজের পারফরম্যান্সে মনোযোগ বাড়ে। আরো বেশি করে পরিশ্রম করতে হয়। এটি দারুণ একটা বিষয়।

প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আপনার উপর কতটা আস্থা রাখেন বলে মনে করেন?
আরিফুল: প্রশ্নটা কঠিন, তবে একটি বিষয়তো জানেন নির্বাচকরা যে দল দেন তাতে অধিনায়কেরও পরামর্শ থাকে। তাই বলতে পারি হয়তো আমাকে দলে রাখতে তার আস্থা আছে বলেই আমি আছি।

প্রশ্ন: অন্যদের মতো কতটা সুযোগ পাবেন বলে মনে করেন?
আরিফুল: আমার কাছে কেন যেন মনে হয় আমি অন্যদের মতো খুব বেশি সুযোগ পাব না। তাই যেদিনই সুযোগ পাবো সেটাই হতে হবে আমার জন্য সেরা দিন। আমি চেষ্টা করবো নিজের সেরাটা দিয়ে খেলার। বাকিটা ভাগ্য বলে কথা আছে। তার উপর আমার হাত নেই। আমার কাজ চেষ্টা করে যাওয়া।

প্রশ্ন: যদি ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেন না তখন আত্মবিশ্বাসে কতটা প্রভাব পড়বে?
আরিফুল: এশিয়া কাপে আমি একটি ম্যাচও খেলার সুযোগ পাইনি। কিন্তু আমি ভেঙে পড়িনি। দেশে এসে জাতীয় লীগে ডবল সেঞ্চুরি করেছি। এখন যদি টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ না পাই সামনে বিপিএল আছে। তখন চেষ্টা করবো সেখানেও যেন সেরাটা দিতে পারি। এর মানে আমার কাছে পারফরম্যান্সটাই আসল। কোথায়ও সুযোগ না পেলে তা না ভেবে নিজের কাজটাই করার চেষ্টা করি ও করবো।

প্রশ্ন: দলে থেকেও খেলতে পারছেন না এতে আপনার পরিবারের হতাশা কতটা?
আরিফুল: আমার চেয়ে বেশি দুঃখ আমার পরিবারের। বিশেষ করে মা টিভি দেখে ফোন করে বলেন- ‘কি তোমাকে যে কোথাও দেখি না।’ আমি জানি মা এত কিছু বোঝেন না, তাই তাকে বুঝিয়ে বলি। মা চিন্তা করবা না, সময় হলে দেখবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর