বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের বার্ষিকীতে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে স্যালুট জানানো উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। এমন দাবি করেছে ভারতের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রোববার লোকসভার রায়বেরেলি আসনে জনসভায় বক্তব্য রাখেন। তার ওই বক্তব্যকে বিদায়ী ভাষণ বলে আখ্যায়িত করেছে কংগ্রেস। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য ইকোনমিক টাইমস।
রায়বেরেলি হলো ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর স্ত্রী ও কংগ্রেসের সাবেক সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর লোকসভার আসন। এরই মধ্যে ৫টি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ৫-০তে পরাজিত হয়েছে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি। তার প্রেক্ষিতে রায়বেরেলিতে নরেন্দ্র মোদির ওই ভাষণকে বিদায়ী ভাষণ বলে আখ্যায়িত করে কংগ্রেস। ওই দিনটি ছিল বাংলাদেশের বিজয় দিবস, ১৬ই ডিসেম্বর।
১৯৭১ সালের এদিনে পরাজিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এতে বড় ভূমিকা ছিল ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর।
কংগ্রেস বলছে, ‘ধারাবাহিক বিভ্রান্তিকর বিবৃতি’ দেয়ার পরিবর্তে নরেন্দ্র মোদির উচিত ছিল এমন এক সময়ে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি স্যালুট জানানো। উল্লেখ্য, ইন্দিরা গান্ধীও ওই রায়বেরেলি আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন।
কংগ্রেস মুখপাত্র প্রমোদ তিওয়ারি বলেছেন, বিধানসভা নির্বাচনে ৫-০তে পরাজিত হয়েছে বিজেপি। এরপর দেয়াল লিখন সম্পর্কে জেনেছেন নরেন্দ্র মোদি। তাই রায়বেরেলিতে ওইদিনের ভাষণ ছিল নরেন্দ্র মোদির বিদায়ী ভাষণ। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সরকার বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে ভারতীয় সেনাদের পাঠাতে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং তারপরই ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ১৬ই ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে। যেহেতু এর বার্ষিকী ছিল রোববার ১৬ই ডিসেম্বর তাই এদিন রায়বেরেলি থেকে ইন্দিরা গান্ধী ও সেনাবাহিনীর প্রতি স্যালুট ও সম্মান প্রদর্শন করা উচিত ছিল মোদির। ইন্দিরা জি’র সাহসী নেতৃত্বে ইতিহাস ও বিশ্বের ভূগোল পাল্টে গিয়েছিল। কিন্তু মোদি জি সেই সম্মান প্রদর্শন করেন নি। কারণ, তিনি প-িত নেহরু ও ইন্দিরা জি’র প্রতি ঘৃণা পোষণ করেন। তিনি এমন আচরণ বেছে নিয়েছেন যা তার ওই পদের অধিকারীর প্রতি কোনো শ্রদ্ধা বহন করে না।
প্রমোদ তিওয়ারি বলেন, গান্ধী পরিবার যেসব কাজ করে গেছেন তার পর রায়বেরেলি ও আমেথি আসন কখনো বিজেপি দখল করতে পারবে না। তিনি আরও অভিযোগ করেন, গান্ধী পরিবারের প্রতি বিরোধিতার কারণে ওই আসন দুটিতে সবরকম উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ পর্যায়ক্রমে স্থগিত অথবা কাজ খর্ব করে দিয়েছে মোদি সরকার।
প্রমোদ তিওয়ারি বলেন, রায়বেরেলিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন ধারাবাহিক মিথ্যা, ত্রুটিপূর্ণ বক্তব্য রাখছিলেন তখন দর্শক-শ্রোতাদের একাংশ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন এবং ওয়াকআউট করেছেন। প্রকৃতপক্ষে মোদি জি এখন যেটার দাবিদার তা হলো তাকে ডাকা উচিত ‘মিস্টার মিসলিডিং এক্সপার্ট’। তিনি কোচ কারখানার একটি সেকশন উদ্বোধন করেছেন এবং সড়ক প্রকল্পের অংশবিশেষ উদ্বোধন করেছেন। এ সব প্রকল্প পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের পথে নিয়ে গেছেন সোনিয়া গান্ধী ও ইউপিএ সরকার। মোদি সরকার যা করেছে তাহলো তারা শুধু এসব প্রকল্পকে স্থগিত অথবা গতি কমিয়ে দিয়েছে। আমরা জানতে চাই, কখন মোদি তার সরকারের নিজস্ব প্রকল্প নিয়ে আসবেন রায়বেরেলিতে।