বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের বাস্তব চিত্র দেখতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) নিজ বাড়িতে এক রাত থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বরিশাল-১ আসনের বিএনপি প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন।
আজ সোমবার দুপুরে গৌরনদী উপজেলার শরিকলে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এ আমন্ত্রণ জানান তিনি ।
ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, গত ১২ ডিসেম্বর আমি বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা শুরু করি। ওই দিন আমার সঙ্গে প্রচারণায় অংশ নেয়া নেতাকর্মীদের বেছে বেছে হামলা-নির্যাতন করা হচ্ছে। আমাদের একাধিক নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাসায় হামলা-ভাঙচুর করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। তারা রাতের আঁধারে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৩০ ডিসেম্বরের আগে এলাকা ত্যাগ করার হুমকি দিচ্ছে। হুমকি-ধমকি এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে বিএনপির অনেক নেতাকে আওয়ামী লীগে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি নিজেও নিরাপত্তাহীন। বারবার আশ্বস্ত করার পরও নির্বাচন কমিশন আমার এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় বরিশাল-১ আসনে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনও পরিবেশ নেই।
গৌরনদী-আগৈলঝাড়ার বাস্তবচিত্র দেখতে এক রাতের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আমার বাড়িতে থাকার আমন্ত্রণ জানাই।
জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, আমার প্রতিপক্ষ দলের কতিপয় নেতাকর্মী লাগাতার প্রকাশ্যে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে প্রকাশ্য জনসভায় আমার প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমার কর্মীদের পোস্টার লাগাতে দিচ্ছে না। তাদের মারধর করে পোস্টার ছিনিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। মাইকিং করতে গেলে কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। ধানের শীষের মিছিলে মোটরসাইকেল উঠিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।
বিএনপির এই প্রার্থী জানান, নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসি, রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারকে অফিসিয়ালি চিঠি দিয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আজ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনারের আদেশ কার্যকর হয়নি। নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের প্রতি আহ্বান জানাই, যতটুটু সময় আছে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন। ইতিহাসে নাম লেখা থাকবে। অন্যথায় উদ্ভূত পরিস্থিতির দায়ে এড়াতে পারবেন না।
স্বপন দাবি করেন, তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার ২৯ জন, বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর ও হুমকি-ধামকিতে ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ জন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয় ১০ নেতাকর্মীর।
সংবাদ সম্মেলনে স্বপন তার নির্বাচনি এলাকা বিশেষভাবে নজরদারি করার জন্য দেশি বিদেশি সব নির্বাচনি পর্যবেক্ষক, দাতা সংস্থা, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।