চা বাগান বেষ্টিত চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ-৪ আসন। এ আসনে চা শ্রমিকদের ভোট রয়েছে ৫০ হাজারেরও অধিক। যা সংসদ নির্বাচনের ফলাফলে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। চা শ্রমিকরা মনে করেন, শেখ মুজিব তাদের ভোটের অধিকার দিয়েছিলেন। তাই তার প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখাতে তারা প্রতিবছর নৌকায় ভোট দিয়ে এমপি নির্বাচিত করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ কয়েক ট্রাম ক্ষমতায় থাকলেও চা শ্রমিকদের জীবন মানের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করেনি। শিক্ষা, চিকিৎসা,আবাসন, মজুরি, নিরাপত্তাসহ নানা সমস্যায় চা শ্রমিকরা এখনও জর্জরিত। তাই আগামী নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্যের কাছে জবাবদিহিতা চান অবহেলিত চা শ্রমিকরা।
তারা জানতে চান, বারবার নৌকায় ভোট দিয়েও কেন তাদের জীবন-মানের সঠিক উন্নতি হয়নি। আগামী নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে জবাবদিহিতা চান। এবার ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে তারা যাচাই-বাছাই করে ভোট দিতে চান। চা শ্রমিকদের উন্নয়নে যারা অঙ্গীকার করবেন তাদেরকেই ভোট দেবেন তারা। বাগান সূত্রে জানা যায়, চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলায় চা বাগান রয়েছে ২৪টি। এসব বাগানে শ্রমিক রয়েছেন প্রায় অর্ধলক্ষাধিক। বর্তমানে প্রত্যেক চা শ্রমিক ২১ কেজি চা পাতা উত্তোলনের টার্গেট নিয়ে দৈনিক মজুরি পান মাত্র ১০২ টাকা। যা বর্তমান আধুনিক জীবন যাপনের জন্য একেবারেই নগন্য। এছাড়া প্রতিটি বাগানে রয়েছে শ্রমিকদের আবাসন সমস্যা। জরাজীর্ণ আবাসন ব্যবস্থার কারণে প্রায়ই ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা। চিকিৎসা সেবায়ও রয়েছে নানা অবহেলা ও অপ্রতুলতা। শিক্ষাক্ষেত্রে রয়েছে নানা সমস্যা। অধিকাংশ বাগানে মানসম্মত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। এতে শিক্ষাক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে চা শ্রমিকদের ছেলে-মেয়েরা। চা শ্রমিকরা জানান, শেখ মুজিব আমাদের ভোটের অধিকার দিয়েছিলেন। আমরা সে ঋণ পরিশোধ করতে প্রতিবার নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে এমপি বানাই। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছরেও আমরার সঠিক উন্নয়ন হয়নি। আমরা মাথার ঘাম পায়ে ফেইল্যা যে মজুরি পাই তা দিয়ে খেয়ে বাঁচাই কঠিন। আমাদের বাচ্চা-কাচ্চাদের লেখাপড়া করাইমু কি দিয়া। এবার আর আমরা চোখ বুজে ভোট দিতে চাই না। গতবার যারে ভোট দিয়া আমরা এমপি বানাইছি তার কাছেও আমরা জবাব চাই।
আমরার ভোটে এমপি অইয়া চা শ্রমিকদের জীবনের উন্নয়ন কেন করেননি তা ও আমরা জানতে চাই।