× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

উচ্চ আদালতে আটকে গেল বিএনপির পাঁচ জনের প্রার্থিতা

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার

নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না বিএনপির পাঁচ প্রার্থী। আপিলে চূড়ান্তভাবে আটকে গেছে মানিকগঞ্জ-৩ আসনের আফরোজা খান রিতা ও ঢাকা-২০ আসনের ধানের শীষের তমিজ উদ্দিন আহমেদের প্রার্থিতা। এই দুইজনের নির্বাচনে অংশ নেয়ার আর সুযোগ নেই। ঢাকা-১ আসনেও বিএনপি প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাক ও বগুড়া-৭ আসনের বিএনপির প্রার্থী মোরশেদ মিলটনের মনোনয়ন স্থগিত হয়েছে হাইকোর্টে। কক্সবাজার-২ আসনে আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ ও প্রার্থিতা বহালের হাইকোর্টের আদেশ আটকে গেছে চেম্বার জজ আদালতে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে গণফোরামের খন্দকার ইকবাল আহমেদ প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন আপিলে। রাজশাহী-৫ আসনে নাদিম মোস্তফার বদলে অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে ধানের শীষ বরাদ্দ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মানিকগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী আফরোজা খান রিতার করা স্থগিতের আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতি বেঞ্চ। ফলে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল থাকে।
এতে করে তার প্রার্থিতা স্থগিতই থাকে।
আদালতে আফরোজা খান রিতার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি। সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. কাজী আখতার হামিদ।
পরে সোনালী ব্যাংকের আইনজীবী ড. কাজী আখতার হামিদ বলেন, আপিল বিভাগ নো অর্ডার দিয়েছেন। এতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকলো। ফলে আফরোজা খান রিতা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না।
ঋণখেলাপির অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের করা এক রিট আবেদনে গত ১২ই ডিসেম্বর বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আফরোজা খান রিতার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণার নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত করে রুল জারি করেন।

ঢাকা-২০ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তমিজ উদ্দিন আহমেদ মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত স্থগিতের হাইকোর্টের আদেশ বহাল রয়েছে আপিল বিভাগে। চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করলেও ওই স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ। ফলে তমিজ উদ্দিন আহমেদ আর প্রার্থী হতে পারছেন না। তমিজ উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ওই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বেনজির আহমেদ। গত ১১ই ডিসেম্বর হাইকোর্ট তমিজ উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণায় ইসির সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। এ কারণে আটকে যায় তমিজ উদ্দিনের নির্বাচনে অংশ নেয়া।

আদালতে তমিজ উদ্দিনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এ ছাড়া আপিল বিভাগ বগুড়া-৭ আসনের সরকার বাদল ও বগুড়া-৩ আসনের আবদুল মুহিত তালুকদারের প্রার্থিতা স্থগিতে চেম্বার জজ আদালতের আদেশ বহাল রেখেছেন। সরকার বাদল বগুড়ার শাহজানপুর উপজেলা পরিষদের বিএনপির চেয়ারম্যান এবং আবদুল মুহিত তালুকদার আদমদিঘী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকায় এই দুইজনের নাম নেই। তারা চেয়ারম্যান পদে থেকে মনোনয়ন নেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে থাকা অবস্থায় তাদের মনোনয়ন গ্রহণ করতে গত ৯ই ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। নির্বাচন কমিশনের আবেদনে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেন চেম্বার জজ বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। গতকাল আপিল বিভাগ চেম্বার জজ আদালতের আদেশ বহাল রেখে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন দুই প্রার্থীকে।

ধানের শীষ প্রতীক নজরুলকে দেয়ার নির্দেশ
রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দিতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই দলের সাবেক সংসদ সদস্য নাদিম মোস্তফাকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে গতকাল বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ অন্তর্বর্তীকালনী এ আদেশ ও রুল জারি করেন। অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে রিট আবেদনটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম আশরাফ আলী ও মিনহাজুল হক চৌধুরী। নাদিম মোস্তফার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আনজুম আরা বেগম।

জানা গেছে, অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে বিএনপির মনোনয়ন দেয়া হয়। পরে দল থেকে তার মনোনয়ন বাতিল করলে নাদিম মোস্তফা মনোনয়ন পান। গত ৯ই ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রতীক বরাদ্দের আবেদন করেন নাদিম মোস্তফা। পরদিন রিটার্নিং কর্মকর্তা নাদিম মোস্তফাকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেন। রিটে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিধান অনুসারে দলীয়ভাবে একবারই মনোনয়ন দেয়া যায়। যা নজরুল ইসলামের প্রাপ্য।

প্রার্থিতা পেলেন গণফোরামের প্রার্থী
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে গণফোরামের প্রার্থী খন্দকার ইকবাল আহমেদ প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। তার মনোনয়ন গ্রহণে নির্বাচন কমিশনকে দেয়া নির্দেশ বহাল রয়েছে আপিল বিভাগে। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের করা আবেদনে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ নো অর্ডার আদেশ দেন। এতে মনোনয়ন গ্রহণ করার হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকে।

গত ১১ই ডিসেম্বর হাইকোর্ট গণফোরামের খন্দকার ইকবাল আহমেদের মনোনয়ন গ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের প্রার্থিতা স্থগিত
কক্সবাজার-২ আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের প্রার্থিতা বহাল করে ধানের শীষ বরাদ্দের হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। এ বিষয়ে আজ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি হবে।
গতকাল চেম্বার জজ হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ আদেশ দেন। এর আগে গত ১২ই ডিসেম্বর তার প্রার্থিতা বহাল ও ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ। গত ২রা ডিসেম্বর ফরিদের মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আপিলেও তা বহাল থাকে।

ঢাকা-১ আসনের বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত
ঢাকা-১ আসনের (দোহার-নবাবগঞ্জ) বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাকের মনোনয়নপত্র স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

ওই আসনে বিকল্পধারার জালাল উদ্দিনের (কুলা প্রতীক) করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার শামীম আহমেদ মেহেদী ও ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম।

আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, খন্দকার আবু আশফাক আপাতত নির্বাচন করতে পারবেন না। হাইকোর্ট তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণার নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন।

রিট আবেদনে বলা হয় উপজেলা চেয়ারম্যানের পদত্যাগ গৃহীত হওয়ার আগেই তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করলেও পরে নির্বাচন কমিশন তার প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্ত হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর