× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জেলে থাকা ১৪ প্রার্থীর মুক্তি দাবি ঐক্যফ্রন্টের

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটভুক্ত প্রার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল সিইসির সঙ্গে বৈঠকে এ অভিযোগ করে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, গত আট দিনে ৯৫টি মামলায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ২ হাজার ২৪১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ড. কামাল হোসেনসহ 
ঐক্যফ্রন্টের ৩২ জন প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিচার ও কারাগারে আটক ১৪ প্রার্থীকে মুক্তির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের রায়ে ধানের শীষের ছয় প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের আদেশে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাদের প্রার্থিতা বহাল রাখতে নির্বাচন কমিশনের জোরালো ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানানো হয়।

এছাড়া সাদা পোশাকে পুলিশের তৎপরতা ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধ এবং লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য বিতর্কিত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার বা বদলির দাবি জানানো হয়। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডি সভাপতি আ স ম রব, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ড. মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু গণস্বাস্থকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। লিখিত অভিযোগে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রবেশের মুখে বিএনপি মহাসচিবের ওপর হামলার ঘটনা উল্লেখ করা হয়।


এছাড়া চট্টগ্রামে কর্নেল অলি আহমদ; ঢাকায় মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাস;, নরসিংদীতে ড. আব্দুল মঈন খান; নোয়াখালীতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও জয়নাল আবেদিন ফারুক; সিরাজগঞ্জে রুমানা মাহমুদ, ভোলায় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিনসহ ২৭টি হামলার ঘটনা উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে ১৪ জন প্রার্থী বর্তমানে কারাবন্দি রয়েছে বলে চিঠিতে বলা হয়। তারা হলেন, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে মাওলানা আব্দুল হামিদ, রাজশাহী-৬ আসনে আবু সাঈদ চাঁদ, মাগুরা-১ আসনে মনোয়ার হোসেন, খুলনা-৬ আসনে আবুল কালাম আজাদ, সাতক্ষীরা-২ আসনে মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ আসনে গাজী নজরুল ইসলাম, টাঙ্গাইল-২ আসনে সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, গাজীপুর-৫ আসনে একেএম ফজলুল হক মিলন, নরসিংদী-১ আসনে খায়রুল কবীর খোকন, গোপালগঞ্জ-৩ আসনে এসএম জিলানী, কুমিল্লা-১০ আসনে মনিরুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৯ আসনে ডা. শাহাদাত চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে আ ন ম শামসুল ইসলাম ও কক্সবাজার-২ আসনে এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ। এছাড়া বগুড়া-৩ আসনে এমএ মুহিত, জামালপুর-৩ আসনে এম এ মুহিত, জামালপুর-১ আসনে রশিদুজ্জামান মিল্লাত, ময়মনসিংহ-১ আসনে আলী আজগর, মানিকগঞ্জ-১ আসনে আফরোজা খান রিতা, সিলেট-২ আসনে তাহসিনা রুশদীর লুনা ও ঢাকা-২০ আসনে তমিজউদ্দিনের প্রার্থিতা উচ্চ আদালতের আদেশে বাতিল বা স্থগিত হয়েছে বলে ইসিকে অবহিত করে ঐক্যফ্রন্ট। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ১৪(৫) অনুচ্ছেদের বিধানমতে আপিলে বৈধতা/অবৈধতা সংক্রান্ত কমিশনের আদেশই চূড়ান্ত বলে উল্লেখ রয়েছে। সংবিধানের ১২৫(সি) অনুচ্ছেদ এর বিধানে ইসিকে নোটিশ না দিয়ে কিংবা শুনানির সুযোগ না দিয়ে তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আদালতের এখতিয়ারকে সীমাবদ্ধ করে দেয়া আছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে কমিশনের পক্ষে জোরালো ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।

লিখিত অভিযোগে সাদা পোশাকে পুলিশের সিভিল টিম এর তৎপরতা বন্ধ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কারণে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধের দাবি করা হয়। এই দাবির সঙ্গে আরো বলা হয়, প্রতিটি নির্বাচনী আসনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দৃশ্যমানভাবে নাম ও র‌্যাঙ্কসহ ইউনিফর্ম পরে দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না মর্মে এবং মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা কঠোরভাবে প্রতিপালনের নির্দেশ জারি করতে হবে। পাশাপাশি হয়রানিমূলক ও গায়েবি মামলায় প্রার্থী, রাজনৈতিক নেতাকর্মী-সমর্থকদের হয়রানি না করার সুস্পষ্ট নির্দেশনাসহ বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার না করা সংক্রান্ত পত্র জারি করতে হবে।

এসব বিষয় অবহিত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে চিঠি দেয়ার জন্য ইসির প্রতি আহ্বান জানানো হয়। মাঠ প্রশাসনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য বিতর্কিত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার ও বদলির দাবি জানানো হয় লিখিত অভিযোগে। পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলোতে প্রশাসন ও পুলিশের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট পদে ব্যাপক প্রত্যাহার, বদলি করা হয়েছিল উল্লেখ করে বলা হয়, এ প্রক্রিয়ার মানে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, হেয় প্রতিপন্ন করা নয়। এটা অনেকটা প্রথাগত ও স্বাভাবিক এবং মনস্তাত্ত্বিক প্রক্রিয়া হিসেবেই চলে আসছে। ইতিমধ্যে এ রদবদল বিষয়ে কমিশনে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়ার পরও কোনো বদলি বা প্রত্যাহার করা হয়নি। অভিযোগে বলা হয়, কমিশন সরকারের সাজানো প্রশাসনেই নির্বাচন অনুষ্ঠানে আগ্রহী মর্মে প্রতীয়মান হচ্ছে।

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারকে বদলি করে সেখানে বিতর্কিত ও ন্যক্কারজনক ভূমিকা পালনকারী একজন বিতর্কিত কর্মকর্তাকেই পদায়ন করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এদিকে দেশের ৩১টি জেলার বিভিন্ন আসনে হামলার তথ্য জানিয়ে এক চিঠিতে বিনা কারণে গ্রেপ্তার, হয়রানি ও আওয়ামী লীগের হামলার কথা উল্লেখ করা হয়। এতে জরুরি ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান বিএনপি মহাসচিব। আট পৃষ্ঠার চিঠিতে হয়রানির চিত্র যেসব জেলায় ঘটছে বলে দাবি করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে ঢাকা মহানগর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, জামালপুর, ঝিনাইদহ, ভোলা, চট্টগ্রাম, শেরপুর, ফরিদপুর, নেত্রকোনা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ময়মনসিংহ, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, যশোর, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, ঝিনাইদহ, নরসিংদী, নাটোর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জয়পুরহাট, মেহেরপুর, রংপুর, পাবনা, কিশোরগঞ্জ, সাতক্ষীরা, ফেনী, সিরাজগঞ্জ ও হবিগঞ্জ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর