× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হবিগঞ্জ-৩ / দুই হেভিওয়েটের লড়াই

ইলেকশন কর্নার

রাশেদ আহমদ খান, হবিগঞ্জ থেকে
১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, বুধবার

হবিগঞ্জ-৩ আসনে দিন-রাত নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই হেভিওয়েট প্রার্থী। এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু জাহির ও জেলার একমাত্র বিএনপি প্রার্থী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র জিকে গউছ। প্রভাবশালী এ দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা। আর জেলা সদরের এ আসনে বিজয়ী হতে দিন-রাত প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন এ দুই প্রার্থী। তবে, হারিয়ে ফেলা এ আসনে মাঠে নেই জাতীয় পার্টি। এ আসনে মহাজোটের প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। জাপার প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক এবার হবিগঞ্জ-১ ও হবিগঞ্জ-৩ এ দুটি আসন থেকে নির্বাচন করছেন। তবে, কোনো আসনেই জাপার এ প্রার্থীর নেই কোনো উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম।
এ আসনে বিগত নির্বাচনে তিনবার বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। আর মাত্র একবার জয়ের স্বাদ পেয়েছে বিএনপি। তবে, আগামী নির্বাচনে বিজয়ের আশায় মরিয়া হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বিএনপি প্রার্থী। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবু জাহির নেতাকর্মীদের নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনী মাঠ। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগে তিনি তার দুই টার্ম সংসদ সদস্য থাকাকালীন বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরছেন। পাশাপাশি এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামীতেও নৌকার বিজয়ের জন্য ভোট প্রার্থনা করছেন তিনি। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত করছেন বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ।

অন্যদিকে, বিএনপির প্রার্থী জিকে গউছ কারাগারে থেকেও পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হওয়ায় হবিগঞ্জ পৌর এলাকায় ভোটারদের মাঝে রয়েছে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। সংসদ নির্বাচনেও এ জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে চান গউছ। সে লক্ষ্যে নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণা। তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন অসঙ্গতির কথা তুলে ধরে দেশের উন্নয়ন ও খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে আবেগঘন বক্তব্য প্রদান করছেন বিভিন্ন নির্বাচনী সভা-সমাবেশে। উভয় প্রার্থীই লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে একে অপরের বিষোদগার করছেন। সব মিলিয়ে হবিগঞ্জ-৩ আসনে জমে উঠেছে নির্বাচনী লড়াই। নানাদিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে বিজয়ী হতে সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা। হবিগঞ্জ জেলার ৪টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনেই ধানের শীষ দেয়া হয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের। শুধুমাত্র হবিগঞ্জ-৩ আসনটি রাখা হয়েছে বিএনপির জন্য। এজন্য এ আসনে বিজয়ের ব্যাপারটিকে প্রেসটিজ ইস্যু হিসেবে দেখছেন উভয় দলের নেতাকর্মীরা।
এ আসনে মোট ভোটার তিনলাখ ২৬ হাজার ৩৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ  ভোটার একলাখ ৬৩ হাজার ৬৭৬ এবং মহিলা ভোটার একলাখ ৬২ হাজার ৬৬৭ জন।

নির্বাচনের প্রস্তুতির ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু জাহির মানবজমিনকে বলেন, আমার দুই টার্মে হবিগঞ্জ-লাখাই এলাকায় যে উন্নয়ন হয়েছে স্বাধীনতার পর আর এত উন্নয়ন হয়নি। শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, অবকাঠামো, স্বাস্থ্য, কৃষি বিদ্যুৎসহ সব ক্ষেত্রেই নজিরবিহীন উন্নয়ন হয়েছে। অবহেলিত লাখাই উপজেলাকে উন্নত উপজেলায় রূপান্তরিত করেছি। শায়েস্তাগঞ্জবাসীকে নতুন উপজেলা উপহার দিয়েছি। শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে হবিগঞ্জের স্বাস্থ্যসেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসার পথে। শতভাগ বিদ্যুতায়ন করে গ্রামের সাধারণ মানুষকে আলোকিত করেছি। আমার বিশ্বাস মানুষ আমার কাজের উপযুক্ত মূল্যায়ন করবে। হবিগঞ্জ-৩ আসন আওয়ামী লীগের ছিল, আছে এবং আগামীতেও থাকবে ইনশাল্লাহ। জনগণ আর আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারা বিএনপিকে ভোট দেবে না।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিকে গউছ মানবজমিনকে জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সন্দিহান। প্রতিদিন আমার নিরীহ কর্মীদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে ডিবি পুলিশ। আমাদের গণসংযোগে বাধা দেয়া হচ্ছে। অথচ আওয়ামী লীগ প্রার্থী পুলিশ প্রটেকশন নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এসব ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেয়া হলেও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। তবে, যত বাধা আসুক, যত গায়েবি মামলাই হোক বিএনপি নেতাকর্মীদের দমানো যাবে না। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে প্রমাণ হবে জনগণ বিএনপিকে কতটুকু ভালোবাসে।

আমি বিগত ৩৬ বছর যাবৎ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম, জেলা যুবদলের সভাপতি ছিলাম। এখন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আমি জেলে থাকা অবস্থায় বারবার ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচনে বিজয়ী করেছেন হবিগঞ্জের সাধারণ মানুষ। তাদের এ ভালোবাসা নিয়েই আমি রাজনীতি করছি। আমার বিশ্বাস সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণ এ নির্বাচনেও আমাকে বিজয়ী করবেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর