× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

লুনার ‘বিকল্প’ মুনতাছির এবার এহিয়ার মুখোমুখি

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, বুধবার

সিলেট-২ আসনে প্রার্থী নেই ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনা। আইনি গ্যাঁড়াকলে আটকে গেলেন তিনি। আর এতে হঠাৎ ছন্দপতন ভোটের মাঠে। এই আসনটি প্রায় নিশ্চিত ছিল বিএনপির। লুনাও নির্বাচনে ছিলেন সক্রিয়। শুরু থেকে তাকে নিয়ে আশংকা ছিল। এ কারণে ‘ডামি’ হিসেবে রেখেছিলেন ছেলে আবরার ইলিয়াসকে। নির্বাচন কমিশন ছাড় দিয়েছিলো।
এ কারণে সরিয়ে নেন আবরারকে। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত ভোটে থাকছেন না লুনা। ধানের শীষ প্রতীকও থাকবে না। এমন আশঙ্কা শুরু থেকে ছিল শরিকদের। এ কারণে মাঠ ছাড়েন নি ২০ দলীয় জোটের শরিক মুহাম্মদ মুনতাছির আলী। নিজ দল খেলাফত মজলিসের প্রতীক ঘড়ি নিয়ে তিনি মাঠে ছিলেন। সক্রিয়ও ছিলেন ভোটের মাঠে।

লুনা সরে যাওয়ায় এখন পথ খুললো শরিক মুনতাছিরের। তিনি জোটের কাছে প্রার্থিতা দাবি করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত পেয়েছিলেন লুনা। এখন লুনা নেই, সিলেট-২ আসনে ভরসা একমাত্র মুনতাছিরই। গণফোরামের হয়ে প্রার্থী আছেন মোকাব্বির খান। তাকে প্রার্থী করতে লড়েছিলেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। তবে প্রার্থী থাকলেও মাঠে নেই মোকাব্বির। চলে গেছেন বৃটেনে। এখন একমাত্র ভরসা মুনতাছির আলীই। তিনি এ আসনে মহাজোট প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়ার মুখোমুখি রয়েছেন। মহাজোটের ভেতরেও স্বস্তিতে নেই এহিয়া। নিজের করা রিটের প্রেক্ষিতে লুনার প্রার্থিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত হলেও বিদ্রোহী এনামুল হক সর্দার ও মুহিবুর রহমানের কারণে ঘুম হারাম এহিয়ার। আওয়ামী লীগের ভোট নিয়ে শঙ্কা কাটছে না এহিয়ার। এ অবস্থায় বিএনপি জোটের শরিক মুনতাছির আলীকে সমর্থন দিলে পাল্টে যেতে পারে দৃশ্যপট।

মুনতাছির আলী ইলিয়াস আলীর জমানারও ছাত্রনেতা। ওই সময় তিনি সিলেটে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতিও হন। এখন খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব। পেশায় ব্যবসায়ী মুনতাছির আলীর বাড়িও ইলিয়াস আলীর এলাকা বিশ্বনাথে। সিলেট-২ আসনে মাদরাসাকেন্দ্রিক ভোট ব্যাংক রয়েছে। অর্ধশতাধিক মাদরাসার ভোটাররা তার পক্ষেই সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে বড় বড় কয়েকটি মাদরাসায় খেলাফত মজলিসের ভোটও বেশি। যার কারণে বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগরে উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বড় অঙ্কের ভোট টেনে নিজেদের শক্তির জানান দিয়েছিলেন খেলাফত মজলিসের প্রার্থীরা।

খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মুহম্মদ মুনতাছির আলী গতকাল মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ‘বিগত উপজেলা নির্বাচনগুলোতে খেলাফত মজলিসের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা সব দলের প্রার্থীদের সঙ্গে লড়াই করে প্রায় ৫০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। এ কারণে এই আসনে খেলাফত মজলিস মনে করে তাদের ৫০ হাজার ভোট ব্যাংক রয়েছে। আর ১৯৯৮ সাল থেকে চারদলীয় জোট এবং পরবর্তীতে ২০ দলীয় জোটের শরিক হচ্ছে খেলাফত মজলিস। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে রয়েছি। জোট কিংবা ঐক্যফ্রন্টে আমাদের পাওয়া না পাওয়া নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। ইলিয়াস আলীর আসনে তার স্ত্রী প্রার্থী থাকতে পারছেন না। এখন জোটের অন্যতম শরিক হিসেবে খেলাফত মজলিসকে এ আসনে সমর্থন দিয়ে যদি সবাই মাঠে নামেন আমরা জয়ী হবোই।’

এদিকে সিলেট বিএনপির নেতারা গতকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেন নি। সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ‘সিলেট-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী তাহসিনা রুশদীর লুনার মনোনয়ন স্থগিত সহ কয়েকটি আসনে আমাদের প্রার্থী নেই। এ বিষয়টি নিয়ে রাতেই বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে বৈঠকে বসছে। ওই বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সেটি আমরা মেনে চলবো।’ বিএনপির কাছে ইলিয়াসের আবেগের আসন হচ্ছে সিলেট-২। এ আসনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে নেই। শরিক জাতীয় পার্টিকে আসন ছাড় দেয়ায় আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ নেই। এখন বিএনপির প্রার্থী লুনাও আইনি জটিলতায় আটকে যাওয়ায় বিএনপি নির্বাচনে নেই। ফলে এ আসনে ভোটের উৎসব তেমনটি নেই। বিএনপি শরিক দলকে সমর্থন দিলে শেষ পর্যন্ত দুই শরিকের লড়াই হবে এ আসনে। আর যিনি বিজয়ী হবেন তিনিও শরিক থেকেই হবেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর