এতদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকই কেবলমাত্র সাধারণ মানুষের ফোন কল এবং ই মেইলে প্রয়োজনে নজরদারি চালাতো। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বৃহষ্পতিবার এক নির্দেশিকা জারি করে দেশের ১০ তদন্তকারী সংস্থাকে দেশের যে কোনও মানুষের কম্পিউটারে যে কোনও ধরণের নজরদারি চালানোর অবাধ ক্ষমতা দিয়েছে। নির্ধারিত ১০টি সংস্থার গোয়েন্দারা ইচ্ছে করলেই যে কোনও কম্পিউটারে উঁকি দিতে পারবেন। যে ১০ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে এই নজরদারি চালানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সেগুলি হল, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি), রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র), নারকোটিকস কন্ট্রোল বোর্ড, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্সেস, ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স, সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই), ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ), দিল্লির কমিশনার অব পুলিশ এবং ডিরেক্টরেট অব সিগনাল ইন্টেলিজেন্স।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী এখন থেকে মোবাইল কল বা ই-মেলের পাশাপাশি বিভিন্ন কম্পিউটারের তথ্য খতিয়ে দেখার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এই সব তদন্তকারী সংস্থাকে । প্রয়োজনে তারা বাজেয়াপ্ত করতে পারবে যে কোনও কম্পিউটার বা যন্ত্র। শুধু তাই নয়, যে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা এখন থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তার বা তাদের কম্পিউটারের তথ্য দেখাতে বাধ্য। অন্যথায় জরিমানা অথবা সাত বছরের কারাদন্ডের মুখোমুখি হতে হবে।
ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা শুক্রবার জানার পর প্রবল সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এই সিদ্ধান্তকে বিপজ্জনক বলে টুইটারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কেন্দ্রীয় নজরদারির প্রতিবাদ জানিয়ে সিপিআইএম সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, দেশের মানুষকে অপরাধী ভাবার কারণ কী ? অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের ঘটনা বাড়তে পারে। এই নির্দেশিকা জারির পক্ষে স্বরাষ্টমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতের সার্বভৌমত্ব, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা এবং বন্ধুদেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত।