চেম্বার জজ আদালতে প্রার্থিতা ফিরে পাননি বিএনপির ১০ জনসহ ১১ প্রার্থী। তাদের প্রার্থিতা স্থগিতের হাইকোর্টের আদেশ বহাল রয়েছে। শুনানি শেষে গতকাল চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন। চাঁদপুর-৪ আসনের প্রার্থী ঋণখেলাপির দায়ে মনোনয়ন হারিয়েছেন বাকি ১০ জন উপজেলা চেয়ারম্যান। ফলে তাদের ওই আসনগুলোতে প্রার্থী হওয়ার আশা শেষ হয়ে গেল। এছাড়া প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার করা আপিল আবেদনের শুনানি হয়নি।
আবেদনটি চেম্বার জজ আদালতের কার্যতালিকায় ছিল না। আসনগুলো হলো-জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের মো. ফরিদুল কবীর তালকুদার শামীম, জয়পুরহাট-১ আসনের (সদর-পাঁচবিবি) ফজলুর রহমান, ঝিনাইদহ-২ আসনের (সদরের একাংশ-হরিণাকুণ্ডু) অ্যাডভোকেট মো. আবদুল মজিদ, রাজশাহী-৬ আসনের (বাঘা-চারঘাট) মো. আবু সাঈদ চান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের (কসবা-আখাউড়া) ইঞ্জিনিয়ার মো. মোসলেম উদ্দিন ও বগুড়া-৭ আসনের মোরশেদ মিলটন।
এসব আসনে বিএনপির আর কোনো প্রার্থী নেই। ফলে আসনগুলো প্রার্থী শূন্যই থাকছে বিএনপির।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নেয়া ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে মাহমুদ হোসেন সমুন ও রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনে মো. আসাদুজ্জামান বাবুলের প্রার্থিতা স্থগিতের হাইকোর্টের আদেশেও নো অর্ডার করেছেন চেম্বার জজ আদালত।
এর মধ্যে ঢাকা-১ আসনের প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাক, ঢাকা-২০ আসনের তমিজউদ্দিন আহমেদ, চাঁদপুর-৪ আসনের মো. আবদুল হান্নান প্রার্থিতা স্থগিতে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতির আবেদন) করলে ‘নো অর্ডার’ দিয়ে আগামী ১০ই জানুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে এই তিনজন আর নির্বাচন করতে পারছেন না। তাদের আসনে বিএনপি প্রার্থী আর কেউ রইল না।
অন্যদিকে নীলফামারী-৪ আসনে বিএনপি দলীয় সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার ভজের মনোনয়ন গ্রহণের হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার জজ আদালত।
চেম্বার জজ আদালত রাজশাহী-৫ আসনে নাদিম মোস্তফার বদলে অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে ধানের শীষ বরাদ্দ দেয়ার এবং মানিকগঞ্জ-১ আসনে এসএ জিন্নাহ কবীরের পরিবর্তে অ্যাডভোকেট খন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলুকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়ার হাইকোর্টের আদেশে ‘নো অর্ডার’ করেন। ফলে এই দুই প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক পাচ্ছেন।
সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফিজ আহমদ মজুমদারের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে রিটটি করেছিলেন একই আসনের মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিন।
হাফিজ আহমদ মজুমদার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হলফনামায় এ তথ্য গোপন করেছেন অভিযোগ করে প্রার্থিতা বাতিল চাওয়া হয়েছিল। গতকাল বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ রিটটি সরাসরি খারিজের আদেশ দেন।
আদালতে প্রার্থীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা, ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী প্রমুখ। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক, মোতাহার হোসেন সাজু।