× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চট্টগ্রামে সোহেল হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বন্ধু ফারুক!

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৬ জানুয়ারি ২০১৯, বুধবার

চট্টগ্রামে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. মহিউদ্দিন সোহেল হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বন্ধু রিদোয়ান ফারুক রাজীব। পুলিশ ইতিমধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মহিউদ্দিন সোহেলকে হত্যার পুরো পরিকল্পনা রিদোয়ান ফারুক জানতেন। কিলিং স্কোয়াডের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড হাতে আসার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে তার নাম মামলার এজাহারে নেই।

সোমবার গভীর রাতে ফারুককে নগরীর পাহাড়তলী বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সময়ে যুবদল সভাপতি শওকত খান রাজুকে সিটি গেইট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে।
এদিকে মঙ্গলবার বিকালে ফারুককে আদালতে হাজিরের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম জানালেও যুবদল সভাপতি শওকত খান রাজুকে গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করছে না পুলিশ। তাকে আদালতেও তোলা হয়নি বলে জানান রাজুর পরিবার।

গত ৭ই জানুয়ারি সকালে পাহাড়তলী বাজারে মহিউদ্দিন সোহেলের মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর পুলিশ ও বাজারের ব্যবসায়ীরা জানায়, চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনতা মিলে মহিউদ্দিন সোহেলকে গণপিটুনি দেয় এবং এতেই তার মৃত্যু হয়।

তবে পরদিন তার পরিবারের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মহিউদ্দিন সোহেল কোনো ছিঁচকে চাঁদাবাজ কিংবা সন্ত্রাসী ছিলেন না। জন্মস্থান পাহাড়তলীকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করার কাজে হাত দিয়ে তিনি কাউন্সিলর সাবের সওদাগর ও ওসমান খানের রোষানলে পড়েন।
ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, হত্যাকাণ্ডের আগেরদিন মামলার আসামিদের কয়েকজনের সঙ্গে ফারুকের কথা হয়। সেই তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে আছে। কিলিং স্কোয়াডের কয়েকজনের সঙ্গে কনভারসেশনের একটি অডিও আমরা পেয়েছি। সার্বিকভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই আমরা তাকে গ্রেপ্তার করেছি।
সূত্র জানায়, হত্যার পরিকল্পনার কথা জেনে মহিউদ্দিন সোহেলকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন ফারুক। পরিকল্পনাকারী একজনের নাম উল্লেখ করে ফারুক বলেছিলেন, ওই ব্যক্তি সোহেলের উপর খুবই ক্ষুব্ধ। ফারুকের কথা শুনে হত্যার আগের রাতে মহিউদ্দিন সোহেল তার অনুসারী কয়েকজন যুবককে পাঠিয়ে ওই পরিকল্পনাকারীর উপর হামলাও করান। পরদিন সকালেই মহিউদ্দিন সোহেল খুন হন।

সূত্রমতে, পাহাড়তলী বাজারের আশপাশে মাদকের আখড়া হিসেবে ব্যবহৃত কয়েকটি দোকান উচ্ছেদে ভূমিকা রাখেন মহিউদ্দিন সোহেল। উচ্ছেদ করা দোকানের মধ্যে রিদোয়ান ফারুকেরও দোকান ছিল। দোকান উচ্ছেদের পর বন্ধু হলেও মহিউদ্দিন সোহেলের প্রতিপক্ষ হয়ে যান ফারুক।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা রিদোয়ান ফারুককে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করবো। তবে সে হত্যার পুরো পরিকল্পনা জানতো- এটা আমরা নিশ্চিত। হত্যাকাণ্ডের পর সে পাহাড়তলী বাজারে গিয়েছিল। সোহেলের জানাজায়ও সে অংশ নিয়েছিল।
এর আগে ৮ই জানুয়ারি রাতে মহিউদ্দিন সোহেলের ছোটভাই শাকিরুল ইসলাম শিশির বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলায় পাহাড়তলী বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক সাবের আহমদ সওদাগর ও সদস্য ওসমান খানসহ ২৭ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। পরদিন পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওসমান খান এবং পরবর্তীতে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
নিহত মহিউদ্দিন সোহেল চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের প্রাক্তন সাধারণ সমপাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সমপাদক ছিলেন। তিনি একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটিরও নেতা ছিলেন।

এদিকে যুবদল নেতা শওকত খান রাজুকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দিপ্তী জানান, সোমবার রাতে ঢাকায় যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠতে গেলে সিটি গেইট থেকে ডবলমুরিং পুলিশ রাজুসহ ৩ জনকে আটক করে। পরে দু’জনকে ছেড়ে দিলেও রাজুকে নিয়ে যায়। কিন্তু গতকাল সারাদিন পুলিশ তার পরিবারের কাছে রাজুকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি স্বীকার করেনি। আমরা জানতে পেরেছি তাকে দিনভর আদালতে হাজির করা হয়নি। তাকে থানায় রাখা হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর