মুন্সীগঞ্জের মেঘনায় তেলবাহী জাহাজের ধাক্কায় শ্রমিক নিয়ে ডুবে যাওয়া মাটিভর্তি ট্রলার শনাক্ত করতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। সন্ধানও পাওয়া যায়নি ট্রলারের নিখোঁজ ২০ শ্রমিকের। মেঘনার গভীররতা বেশি (১২০ ফুট) এবং ডুবে যাওয়ার ট্রলারের নির্দিষ্ট স্থান না জানায় বুধবার সারাদিন অভিযান চালানোর পর সন্ধ্যায় উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বিআইডব্লিউটিএ’র এক্সপার্ট টিম এনে পুনরায় অভিযান চালানো হবে। এদিকে, গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মুন্সীগঞ্জের চরঝাপটার মেঘনা নদীতে তেলবাহী ট্রলারের ধাক্কায় মাটিভর্তি ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারের থাকা ৩৪ যাত্রীর মধ্যে ১৪ জন যাত্রী সাঁতরিয়ে তীরে উঠতে পারলেও ২০ শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কুয়াশাচ্ছন্ন গভীর রাতের এই ঘটনায় দুর্ঘটনার স্থান চিহ্নিত করতে সমস্যা হচ্ছিল। বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের নিয়ে এখন দুর্ঘটনার স্থান এবং দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
ঘটনাস্থলে মুন্সীগঞ্জের প্রশাসন ছাড়াও পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ ও ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। জীবত শ্রমিকদের বরাত দিয়ে জানান, কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ট্রলারে মাটি তুলে ৩৪ জন শ্রমিক নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বক্তাবলী নিয়ে যাচ্ছিল। বিপরীত দিক থেকে আসা একটি তেলবাহী জাহাজ ট্রলারটিকে ধাক্কা দিয়ে চাঁদপুরের দিকে চলে যায় এবং ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় ট্রলারে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে ১৪ জন সাঁতারে প্রাণে বাঁচলেও ট্রলার চালক হাবিবুর রহমান, ইঞ্জিনম্যান সিরাজসহ ট্রলারে ঘুমন্ত ২০ শ্রমিকের ভাগ্যে কি হয়েছে এখনও জানা যায়নি। এদের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। ১৭ জনের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গা উপজেলায় এবং একজনের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান সাদিক জানান, রাতে ঘটনা হওয়ার কারণে কেউ কাছাকাছি লোকেশন বলতে পারছে না। ২-৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আমাদের খুঁজতে হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে একটু সময় লাগছে। নৌপুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাহবুব জানান, নদীর গভীরতা ১২০ ফুট। এতা গভীরতা হওয়ায় কাজ করতে একটু সমস্যা হচ্ছে। তারপরও আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। ট্রলারটি উদ্ধার করতে পারলে, ট্রলারের ভেতরে কেউ থেকে থাকলে তাদের উদ্ধার করতে পারবো। ইতোমধ্যে নিখোঁজদের কেউ সাঁতরিয়ে বা অন্য কোন উপায়ে উঠে গিয়ে থাকে-সেটাও আমরা দেখছি। নদীতে কেউ মারা গেলে, ৭২ ঘন্টার মধ্যে লাশ ভেসে উঠে। এ রকম লাশ ভেসে উঠলে নদীর দুইদিকের ফাঁড়িগুলোকে বলে দেয়া হয়েছে, কোন লাশ দেখতে পেলে আমাদের খবর দিতে এবং তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে গিয়ে আমরা ব্যবস্থা নেবো।