জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মৌসুমী বলেছেন, আমি কোনো দলের সঙ্গে কখনো কাজ করিনি। তারকাদের নানা সময় নানা জায়গায় যেতে হয়। অনেক অনুষ্ঠানে গিয়ে ছবি তুলতে হয়। আমিও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়েছি। তার মানে এই না যে, আমি নির্দিষ্ট করে কোনো দল করেছি। তবে এটা ঠিক যে, প্রকাশ্যে আমি রাজনীতি না করলেও মন থেকে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে আসছি। এ কারণেই একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি।
গতকাল এফডিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন মৌসুমী।
এরপর অন্য একটি দলের নেতাদের সঙ্গে তার অতীতের একটি ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকে এর সমালোচনাও করেন। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে মৌসুমী বলেন, আমি এটা নিয়ে ভাবছি না। মনোনয়ন দেবেন তো প্রধানমন্ত্রী, তাই এটা নিয়ে আমি চিন্তিত না। কারণ প্রধানমন্ত্রী খুব ভালো করে জানেন, কে কি করছে, কে কি ভাবছে। উনার বোঝার মতো সুন্দর একটি মন আছে।
মৌসুমী বলেন, আমি সুন্দর একটা সময়ের জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। এবার নির্বাচনের সময়ে কারো কারো সঙ্গে আলাপও করে রেখেছিলাম যে, এবার নির্বাচন সুন্দরভাবে হলে আমি সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনবো। অবশেষে ফরম কিনলাম। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে নির্বাচনের পর রাজনীতিতে যে সুষ্ঠু পরিবেশ দেখলাম তা আমাকে আকৃষ্ট করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি কথা আমার খুব ভালো লেগেছে। তা হচ্ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোনো রকম তদবির ছাড়া নিজে এই সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন দেবেন।
এই বিষয়টি আমাকে খুব আকৃষ্ট করেছে। আমার কাছে এটি খুব পজিটিভ মনে হয়েছে। এটাই আমার বেস্ট টাইম মনে হয়েছে। এই অভিনয় জীবনের পঁচিশ বছরে জনগণের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। এবার জনগণকে দেয়ার সময় আমার। আর কোনো দলের হয়ে কাজ করার সময় এসেছে বলে মনে হয়েছে আমার। আর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করার যদি সুযোগ হয় সেটা তো আরো পজিটিভ হয় আমার জন্য। সে চিন্তা থেকেই মূলত এই মনোনয়ন কেনা। মৌসুমী আরো বলেন, নারী ও শিশুবিষয়ক সংগঠনের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন কাজ করেছি। ‘ইউনিসেফ’ ছাড়াও নিজের সংগঠন থেকে নারী ও শিশুদের নিয়ে আমি কাজ করেছি। সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে যে দল ক্ষমতায় আছে সে দল সুন্দরভাবে আমাকে যদি সাপোর্ট দেয় এবং সেই দলের হয়ে যদি আমি কাজ করি তাহলে আমি আমার কাজগুলোকে আরো বড় পরিসরে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। সরকার থেকে এখন নারী উন্নয়নের জন্য অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।
যেটা খুবই পজিটিভ। মৌসুমীকে প্রশ্ন করা হয় যে, মনোনয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ দলের উচ্চপর্যায় থেকে শোনা যাচ্ছে যে, দলের দুঃসময়ে যারা যুক্ত ছিলেন তাদেরকে মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়া হবে। তাহলে আপনি কিভাবে সংরক্ষিত আসনে এবার নির্বাচিত হবেন বলে মনে করছেন? উত্তরে মৌসুমী বলেন, দলের দুঃসময়ে যারা ছিলেন তাদেরকে অব্যশই আগে সুযোগ দেয়া উচিত। তার মানে এই না, যারা গতকাল জন্মগ্রহণ করেছেন দলে তাদের মেধাকে গুরুত্ব দেয়া যাবে না। আর প্রধানমন্ত্রী সেটা ভাবেন না বলে মনে করি আমি। কারণ এবারের নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভায় এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী সেই চমক দেখিয়েছেন। যাদের মেধা ও জনপ্রিয়তার পাশাপাশি সুন্দর স্বপ্ন আছে, ভালো পরিকল্পনা আছে তাদেরকে মনোনয়ন কেনার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। আর আমাদের ফিল্মে কী হয়, বেশি সময় কাজ করার পর সরে দাঁড়ায় একজন শিল্পী এবং নতুনদের কাজের সুযোগ করে দেয়। তার মানে এই না যে, আমি ফিল্ম থেকে ভ্যানিশ হয়ে গেছি। আমার কাজ নতুনদের সাপোর্ট দেয়ার এবং আমার জায়গা থেকে যতটুকু কাজ করার আমি করে যাবো- এই তো। রাজনীতিতেও তাই। ফিল্মের মতো রাজনীতিতেও মানুষের মন বুঝে জনগণের সেবা করতে হবে। সততার সঙ্গে নিষ্ঠার সঙ্গে, ভালোবাসার সঙ্গে জনগণের জন্য যে কাজটা করবেন তারই তো রাজনীতিতে আসা উচিত।