× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অদম্য কাউসার হামিদ

ষোলো আনা

পিয়াস সরকার
১৮ জানুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার

ক্যাম্পাসের সবার প্রিয় কাউসার ভাই। পুরো নাম কাউসার হামিদ। মুখে তার সবসময় হাসি লেগেই থাকে। এই সদা হাস্যোজ্জ্বল ভাইটির সঙ্গী ‘হুইল চেয়ার’। কারণ তার চলার ক্ষমতা নেই। তবে এই দুর্বলতাকে পিছু হটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন নিরবচ্ছিন্ন গতিতে।

কাউসার হামিদের জন্ম চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জে। জন্মের তিন মাসের মাথায় টাইফয়েডের কারণে শক্তি হারিয়েছেন ডান পায়ে। আর বা পায়েও নেই পুরোপুরি শক্তি।
শিক্ষক দম্পতীর ঘরে জন্ম হয় কাউসারের। বাবা-মা দিয়েছেন সামনে এগিয়ে যাওয়ার মন্ত্র। মাধ্যমিক পাসের পর লেখাপড়া শেষ হওয়ার উপক্রম হয় তার। কিন্তু বড় খালার সহযোগিতায় আশার আলো দেখতে পান। খালার বাসায় থেকে চাঁদপুরের হাজিগঞ্জে ভর্তি হন উচ্চ মাধ্যমিকে। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার পর ফের পড়েন বিপাকে। অদম্য সাহসী কাউসার ছোট মামার সহযোগিতায় ভর্তি হন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটিতে। শুরু হয় ঢাকার সংগ্রাম। থাকা শুরু করেন মামার বাড়িতে। মামা-মামীর সহযোগিতায় ২০১৪ সালে পেরিয়ে যান অনার্স। বর্তমানে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সে চাকরি করছেন। আবার পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সেও অধ্যয়নরত আছেন।

কাউসার হামিদ বলেন, আমি মানুষের ব্যাপক সহযোগিতা পাই। আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। তবে কিছু সময় কিছু ব্যঙ্গাত্মক কথাও শুনতে হয়। আবার তা এত ভালো মানুষের ভিড়ে খবুই সামান্য। আমি বলব, আমি ভাগ্যবান। আমি শিক্ষিত ঘরে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার বাবা-মা শিক্ষিত না হলে আমি হয়তো পরিবারের বোঝা হয়েই থাকতাম। আর আমি ভাগ্যবান খালা-মামা-মামীর মতো অভিভাবক পেয়েছি।

কাউসার নিজের চলাফেরার পাশাপাশি পরিবারের পাশে এসেও দাঁড়িয়েছেন। আবার সম্প্রতি কিনেছেন তিন চাকার স্কুটার। আগে চলাফেরার জন্য রিকশা ছিল একমাত্র সম্বল। তবে এখন স্কুটারে করে যেতে পারছেন যেখানে খুশি সেখানে। আবার কমে গেছে যাতায়াতের খরচও।

তার স্বপ্ন জানতে চাইলে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষার সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে আরো তৎপর হওয়া প্রয়োজন। যাতে তারা বাধাহীনভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে। শিক্ষা নিশ্চিত হলে তারা নিজেরাই নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে নিতে পারবে। আর নিজেকে এমন স্থানে নিয়ে যেতে চাই। যাতে আমার মতো যারা আছেন, তারা আমাকে দেখে উৎসাহিত হন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর