× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সহযোগিকে মিথ্যা স্বাক্ষ্য দিতে বলেছিলেন ট্রাম্প

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৫ বছর আগে) জানুয়ারি ১৯, ২০১৯, শনিবার, ৯:৫৫ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তার ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি যাতে কংগ্রেসের কাছে মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেন। বাজফিড নিউজে প্রকাশিত এই খবরে দুই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যের বরাতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে ট্রাম্প টাওয়ার বানানোর পরিকল্পনার বিষয়ে কংগ্রেস প্রশ্ন করলে মিথ্যা জবাব দিতে কোহেনকে নির্দেশনা দেন ট্রাম্প। এই বিস্ফোরক সংবাদের পরপরই বিষয়টি তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতারা। অপরদিকে ট্রাম্প বলছেন, নিজের সাজা কমাতে তদন্তকারীদেরকে মিথ্যা বলছেন কোহেন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

বাজফিড নিউজের প্রতিবেদনে কী বলা হয়েছে?
প্রতিবেদনটি মূলত দুইজন বেনামী তদন্তকারী কর্মকর্তার বরাতে করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ট্রাম্প যখন নির্বাচনে লড়ছিলেন, তখন রাশিয়ায় কোনো ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন। অথচ, তখনই ট্রাম্প মূলত মস্কোতে একটি সুউচ্চ দালান নির্মাণের বিষয়ে কোহেনের কাছ থেকে অন্তত ১০ বার হালনাগাদ তথ্য পেয়েছেন। ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ও ছেলে ডনাল্ড জুনিয়রও এই ব্যাপারে অবগত ছিলেন।
কংগ্রেসের শুনানিতে কোহেন মস্কোতে ট্রাম্প টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনার সময়সীমা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেন।
তিনি কংগ্রেসকে বলেন, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি নাগাদ এই পরিকল্পনা বজায় ছিল। কিন্তু বাস্তবে ওই পরিকল্পনা অন্তত ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত বহাল ছিল। বাজফিডের খবরে বলা হচ্ছে, তারিখ নিয়ে এই মিথ্যা কথা বলতে ট্রাম্পই নির্দেশ দিয়েছিলেন, এমনটাই তদন্তকারীদেরকে বলেছেন কোহেন। কারণ হলো, নির্বাচনী প্রচারণা চলার সময় রাশিয়ায় ট্রাম্পের ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা ছিল, এমনটা প্রকাশ হলে প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন।
শুধু কোহেনের বক্তব্যই নয়। রাশিয়া কেলেঙ্কারি তদন্তে নিয়োজিত বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলারের হাতে অন্যান্য প্রমাণও রয়েছে, যা থেকে কোহেনের দেওয়া বক্তব্যের প্রমাণ পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্প নির্বাচন চলাকালে রাশিয়ায় বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে খুবই সক্রিয় ছিলেন। এমনকি তিনি কোহেনকে বলেছিলেন, রাশিয়ায় একটি সফরের ব্যবস্থা করতে, যাতে ট্রাম্প সেখানে গিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ¬াদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ওই টাওয়ার নির্মাণের কাজ এগিয়ে নিতে পারেন। ওই টাওয়ারে পুতিনের জন্য ৫ কোটি ডলার মূল্যের একটি প্যান্টহাউজ বরাদ্দ থাকবে বলেও কোহেন ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতারা কী বলছেন?
প্রতিনিধি পরিষদের ইন্টেলিজেন্স কমিটি এই প্রতিবেদনের দাবি তদন্ত করবে বলে জানিয়েছেন কমিটির ডেমোক্রেট দলীয় চেয়ারম্যান অ্যাডাম শিফ। তিনি বলেছেন, এই অভিযোগ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগসমূহের একটি। প্রতিনিধি পরিষদের জুডিশিয়ারি কমিটির প্রধান জ্যারল্ড ন্যাডলার বলেছেন, এই ঘটনার শেষ অবদি দেখে ছাড়বে তার কমিটি। কয়েকজন ডেমোক্রেট দলীয় সদস্য প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের দাবিও তুলেছেন। প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য টেড লিউ টুইটে বলেছেন, এই অভিযোগ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে ট্রাম্প স্পষ্টতই বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের মনোনীত নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল প্রার্থী উইলিয়াম বার তার মনোনয়ন শুনানিতে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, কোনো স্বাক্ষীকে যদি মিথ্যা বলতে নির্দেশ দিয়ে থাকেন প্রেসিডেন্ট, তাহলে তা নিশ্চিতভাবেই বিচার প্রক্রিয়ায় বাধাগ্রহণের শামিল হবে।
টেক্সাসের ডেমোক্রেট দলীয় আইনপ্রণেতা জ্যাকুইন ক্যাস্ত্রো বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে, অথবা তাকে অভিশংসিত হতে হবে।

রিপাবলিকানরা যা বলেছেন
এই খবর প্রকাশের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি ফক্স নিউজের এক প্রতিবেদকের টুইটকে উদ্ধৃত করেন। সেখানে লেখা ছিল, ভুললে চলবে না যে, কোহেন কিন্তু নিজেই মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেওয়া ও প্রতারণার অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত। এই বক্তব্য উদ্ধৃত করে ট্রাম্প যোগ করেন, (কোহেন) মিথ্যা বলছে নিজের সাজার মেয়াদ কমানোর জন্য।
শুক্রবার প্রেসিডেন্টের বর্তমান ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি জিলানি এক বিবৃতিতে বলেন যে, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মাইকেল কোহেনকে মিথ্যা বলতে পরামর্শ দিয়েছেন এমন ইঙ্গিত সম্পূর্ণ মিথ্যা।’ এর আগে জিলানি ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া এক বক্তব্যে কোহেনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। হোয়াইট হাউজের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি হোগান জিডলে ফক্স নিউজকে বলেছেন, বাজফিডকে বিশ্বাসযোগ্য ভাবাটা ‘হাস্যকর।’ তিনি বলেন, এই ‘অপ্রমাণিত’ প্রতিবেদনের মতো বহু ভুয়া সংবাদ প্রেসিডেন্ট ও তার দলকে প্রতিনিয়ত মোকাবিলা করতে হয়। তিনি আরও বলেছেন, কোহেন অতীতে মিথ্যাবাদী বলে প্রমাণিত হয়েছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর