× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সেচ সুবিধা নেই /শ্রীমঙ্গলে অনাবাদি ৮ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমি

বাংলারজমিন

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
২১ জানুয়ারি ২০১৯, সোমবার

মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সেচ ব্যবস্থার সুবিধা না থাকার কারণে বছরের পর বছর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে ৮ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের জমি চাষাবাদ সম্ভব হচ্ছে না। দিনের পর দিন এসব ফসলি জমি বোরো ফসল চাষবাদের আওতায় নিয়ে আসার কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান দেখা যাচ্ছে না। ফলে কৃষিবিভাগেরও উপর কৃষকগণ কোনো ভরসা পাচ্ছেন না।
তবে স্থানীয় কৃষকদের দাবি কৃষিমন্ত্রণালয় যদি সরকারি ডিপটিউবয়েলের মাধ্যমে সেচের সুব্যবস্থা করে দেয় তাহলে পুরো জমি বোরো আবাদের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে ধানের উৎপাদনও বাড়বে অনেক বেশি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সেচ সুবিধা না থাকায় উপজেলার ৮হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে এবছরও বোরো আবাদ হচ্ছে না। বিগত কয়েকবছর যাবত ১নং মির্জাপুর ইউনিয়ন আংশিক কিছু গ্রাম যাত্রাপাশা, বৌলাশি, মির্জাপুর, পাচাউন ও ২নং ভূনবীর ইউনিয়নে শাসন,কুমিল্লাপাড়া, গর্ন্ধবপুর, আলীসারকুল, লইয়ারকুল, পাত্রীকুল, রাজপাড়া এবং ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নে নোয়াগাঁও, ইছবপুর, উত্তর ভাড়াউড়া, পশ্চিম ভাড়াউড়া, উত্তর উত্তসুর,দক্ষিণ উত্তসুররাধানগর, ৪নং সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের কঞ্জবন, বনগাঁও, হুহলীয়া, ষাড়েরগঞ্জ, গাজীপুর, ইজরাগাঁও, মন্দির গাঁও, চিরিগাঁও, জানাউড়া ৫নং কালাপুর ইউনিয়নে মাইজদিহি, কালাপুর, ভাগলপুর, সিরাজনগর, লামুয়া, রাজাপুর, কাকিয়াছড়া ও ৬নং আশিদ্রোন ইউনিয়নের খোশবাস, দত্ত গ্রাম, তিতপুর গ্রামের জমিতে পানির অভাবে বোরো চাষাবাদ না হচ্ছে না।
গত শুক্রবার  সরেজমিন শ্রীমঙ্গল উপজেলার কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, যদি সেচের পানির ব্যবস্থা করা যায় তাহলে জমিগুলো পতিত না রেখে চাষাবাদ করা যেত। তারা জানান, পতিত থাকা জমিগুলোতে আশেপাশের খাল, নালা থেকে কিছুটা পানি ফেলেও তা দিয়ে চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না।
৬নং আশিদ্রোন ইউনিয়নের সাইটুলা গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, ‘আমরার ক্ষেত করবার লাগি পানির কোনো সুবিধা নাই। এই বন্দে অনেক জমি আছে। ৫ থেকে ৭০০ কেয়ার অইব।
যদি সরকার থাইক্যা ডিপকলের ব্যবস্থা করে দিত তা হলে আমরা বোরো ক্ষেত করতে পারতাম’।
৪নং সিন্দুরখান ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের কৃষক আব্বাস আলী বলেন, ‘আমরার এলাকাত ছড়া নাই, নদী নাই, পানির অভাবে বোরো হয় না। যে সাইটে ছড়া আছে সে স্থানগুলোতে বোরো ক্ষেত কিছুটা হয়। সরকার থাকি বড় একটা ডিপকল উজানে বসালে বোরো ক্ষেত করা যেত। একই ইউনিয়নের কুঞ্জবন গ্রামের কৃষক রাজ কুমার বললেন, আমরা তো বোরো করতাম চাই, পানি না পাইলে কই থাকি করতাম। পাম্প থাকলে গাঙ্গ থাকি পানি তুলিয়া কোনো রকম বোরোর আবাদ করতাম পারতাম। ৩নং ইউনিয়নের ভাড়াউড়া গ্রামের চদর মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর গ্রাম থেকে বস্তা সংগ্রহ করে বালু ভরিয়া ছড়ায় বাঁধ দিয়া নালা কইরা পানি এনে বোরো ক্ষেত করি। সরকার থেকে শুনছি পাম্প দেয়া হয়, আমরা গ্রামও পাম্প থাকলে সব জমিত বোরো করতাম পারতাম। একই কথা বললেন ওই গ্রামের কৃষক মোস্তফা মিয়া,আল-আমিন মিয়া। ৫নং কালাপুর ইউনিয়নের কালাপুর গ্রামের রসিদ মিয়া বলেন, উঁচু এলাকা হওয়ায় আমরার গ্রামে বোরো হয় না। আমরা এই সময় আলু, ধনিয়া পাতা, টমেটো চাষ করি’।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২০১৭-২০১৮ সালে হাওরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬৯৭ হেক্টর, হাওর বর্হিভূত বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮৯৮ হেক্টর। ওই বছরে হাওরে অর্জিত বোরো আবাদের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৪৪৭ হেক্টর, হাওর বহির্ভূত বোরো আবাদ হয়েছিল ৬৩৫৫ হেক্টর। উৎপাদন ছিল ৩৬,৪৪১ টন।
কৃষি অফিস জানায়,চলতি ২০১৮-২০১৯ সালের মৌসুমে হাওরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬১৭ হেক্টর, হাওর বর্হিভূত বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৫২ হেক্টর, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ৩৮ হাজার ২০৭ টন। এর মধ্যে গত ১৭ই জানুয়ারি পর্যন্ত হাইল হাওরে অর্জিত বোরো আবাদ হয়েছে হাইব্রিড ৭ হেক্টর, উফশী ৩ হাজার ৩১০ হেক্টর। হাওর বর্হিভূত বোরো আবাদ হাইব্রীড ১৫ হেক্টর ও উফশী ৪৫০ হেক্টর ফসলি জমিতে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বাকি জমিতে বোরো আবাদের প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
কৃষি বিভাগের এসএএও মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘গত বছরের ডিসেম্বর মাসের ২৬ তারিখে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব স্যার শ্রীমঙ্গল আসছিলেন। তখন উনার সঙ্গে এবিষয়ে আমাদের কথা হয়’।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর