মোট ভোটারের চেয়ে বেশি ভোট পড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তার ঘোষণার ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন পেয়েছেন মানবজমিনের খুলনার স্টাফ রিপোর্টার মো. রাশিদুল ইসলাম। তাকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেয়া হয়েছে।
আগাম জামিন চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আজ সোমবার বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি মহী উদ্দিন শামীম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ জামিন দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম মাসুদ রানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল রাফি আহমেদ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গত ৩০ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯ টায় খুলনার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হেলাল হোসেন খুলনা-১ আসনের (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) বেসরকারী ফলাফলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পঞ্চানন বিশ্বাস ২,৫৩,৬৬৯ ভোট এবং ধানের শীষের প্রার্থী আমীর এজাজ খান ২৮,১৭৭ ভোট পেয়েছেন বলে ঘোষণা দেন। যা মোট ভোটারের চেয়ে ২২,৪১৯ ভোট বেশী ছিল।
পরে রাতেই রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল সংশোধন করে ঘোষণা দেন নৌকা প্রতীক পেয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ১৫২ ভোট। ধানের শীষ পেয়েছে ২৮ হাজার ৩২২ ভোট।
তার এই সংশোধনের আগেই মানবজমিন, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বাংলা ট্রিবিউন ও সময় টিভিসহ অন্যন্য গণমাধ্যমে প্রথম বার ঘোষিত ফল প্রকাশ করে। পরের দিন মানবজমিনে রিটার্নিং কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত ফলাফল প্রকাশ হয়েছিল।
এ ঘটনায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী বাদী হয়ে বাংলা ট্রিবিউনের খুলনা প্রতিনিধি হেদায়েত হোসেন মোল্লা ও মানবজমিনের খুলনার স্টাফ রিপোর্টার মো. রাশিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর হেদায়েত হোসেন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি খুলনার আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারা মুক্ত হন।
তখন বেশি ভোট পড়ার অডিও ভিডিও এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনা দেশে ও বিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল।
এই মামলাতেই আগাম জামিন পেলেন মো. রাশিদুল ইসলাম।
তিনি ন্যাশনাল নিউজ পেপার রিপোর্টার্স ফোরাম খুলনার সভাপতি ও খুলনা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি।