রংপুরে ধর্ষণ মামলায় ৪দিন ধরে জেলহাজতে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ইমরান। কারমাইকেল কলেজছাত্রী একতরফা প্রেম ও বিয়েতে ব্যর্থ হয়ে ইমরানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার নাটক সাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ইমরানের পরিবার। গতকাল রংপুর প্রেস ক্লাবে ইমরানের মা তালাত নাসরিনসহ অন্যরা অভিযোগ করে বলেন, কারমাইকেল কলেজের পিভিএস মাস্টার্সের ছাত্রী মনোয়ারা বেগম মিতু নগরীর ধাপ এলাকার কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে এসে ইমরানের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেই থেকে ইমরানের প্রতি তার দুর্বলতা চলে আসে এবং বিভিন্ন সময় মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়ে প্রেম নিবেদন করে। একপর্যায়ে সে গত বুধবার কোচিং সেন্টারে এসে তাকে বিয়ে করতে বলে। তা না হলে সে আত্মহত্যা করবে। এ সময় শিক্ষক ইমরান তাকে বোঝাতে ব্যর্থ হলে তার বন্ধুর পরামর্শে সে ওই ছাত্রীকে থানায় নিয়ে এসে বিষয়টি ওসিকে জানায়। ওসি দু’জনকে বোঝানোর চেষ্টা করলে ইমরান বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে মিতু বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
তাৎক্ষণিকভাবে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পুলিশ ইমরানকে আটক করে থানা হাজতে রাখে। এরই মধ্যে দুই পরিবারের অভিভাবকদের থানায় ডেকে বিষয়টি জানানো হয়। একপর্যায়ে পুলিশের মধ্যস্থতায় বিয়ের বিষয়ে সম্মতি দিলে দেনমোহর বাবদ ২০ লাখ টাকা ধার্য করে মেয়ের পরিবার। এতে বাদ সাধে ছেলের পরিবার। তারা তাদের সাধ্য অনুযায়ী দেনমোহর রাখার কথা বললে সমঝোতা না হওয়ায় মিতুর পিতা মেহেদুল হাসান বাদী হয়ে ইমরানের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মিথ্যা মামলা করে। মামলার পর গত শুক্রবার বিকালে পুলিশ ইমরানকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। ইমরানের মা দাবি করে বলেন, আমাদের কাছে মোবাইলে ওই মেয়ের মেসেজ রয়েছে। তারা মামলায় দিয়েছে আমার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের কোচিং সেন্টারে কোচিং করাকালীন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক মেলামেশা করে। এমনকি কোচিং সেন্টারে ধর্ষণ করে। কোচিং সেন্টারের আশপাশে রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ি। এখানে কোনো অনৈতিক ঘটনা ঘটলে তা সহজেই চোখে পড়বে। সরজমিন সুষ্ঠু তদন্ত করলে বোঝা যাবে। তিনি বলেন, আমার ছেলেকে মিথ্যাভাবে ফাঁসানো হয়েছে। যদি আমার ছেলে অপরাধী হতো তাহলে সে নিজেই তাকে থানায় নিয়ে যেত না এবং পুলিশকে বিষয়টি জানাতো না। এ ব্যাপারে রংপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিমের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে। তাদের মধ্যে মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। আমরা মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে ইমরানকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছি।