× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ফেনী সীমান্ত হাটে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট অব্যাহত, ফিরে যাচ্ছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা

অনলাইন

ফেনী প্রতিনিধি
(৫ বছর আগে) জানুয়ারি ২২, ২০১৯, মঙ্গলবার, ১১:১১ পূর্বাহ্ন

ফেনী সীমান্ত হাটে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছেন ব্যবসায়ীরা। অসম বাণিজ্য ও ভারতীয় ক্রেতাদের হাটে প্রবেশে সেদেশের কড়াকড়ি আরোপ করায় এ ধর্মঘট পালন করছেন বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা। ধর্মঘটের দু’সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়নি হাট পরিচালনায় গঠিত দু’দেশের কর্মকর্তারা। এদিকে হঠাৎ বাজার বন্ধ থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে হাটে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা।


ফেনী সীমান্ত হাট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউর রহমান জানান, সীমান্তবাসীদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ানো ও বাণিজ্য প্রসারের লক্ষ্যে বাংলাদেশের মধুগ্রাম ও ভারতের শ্রীনগর সীমান্তে ২০১৫ সালের ১৩ই জানুয়ারি চালু হয় দেশের তৃতীয় সীমান্ত হাট। প্রতি মঙ্গলবার বসা এ হাটে শুরুতে দু’দেশের আশপাশের ৫ কিলোমিটারে বসবাসরত ১৫’শ করে তিন হাজার গ্রামবাসীদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বেচাকেনার মুল লক্ষ্য ছিলো। তবে চার বছরের মাথায় এসে মানা হচ্ছে না সেই নীতিমালা। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়াকড়িতে সেদেশের ক্রেতারা হাটে তেমন না আসলেও হাটে ওঠে চুক্তি বহির্ভূত ভারতীয় পণ্য।
বাংলাদেশী একটি চক্র বিজিবি সদস্যদের ম্যানেজ করে ভারতীয় এসব পণ্য চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করাচ্ছে। সেদেশের ক্রেতারা বাজারে না আসায় ও অসম্য বাণিজ্যের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশীয় ব্যবসায়ীরা। প্রতি হাটে বাংলাদেশি ২৭ দোকানির গড়ে ৫ হাজার টাকার বিপরীতে ভারতীয় ২৭ দোকানি বিক্রি করছে গড়ে ৫ লাখ টাকারও বেশি পণ্যদ্রব্য।


ফেনী সীমান্ত হাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. রফিক মিলন জানান, উভয় দেশের ক্রেতারা সর্বোচ্চ দুইশ’ ডলার মুল্যে পণ্য ক্রয়ের সীমাবদ্ধ থাকলেও ভারতীয় ক্রেতারা ৫ কেজির বেশি পণ্য কিনলে বিএসএফ পণ্য রেখে দেয়। বিপরীতে বাংলাদেশী ক্রেতারা তিন চারশ’ ডলার মুল্যের পণ্য কিনলেও বিজিবি তাতে বাধা দেয় না। এতে করে বাংলাদেশী বিক্রেতারা অব্যাহত লোকসানে থাকায় গত ১৫ই জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয় তারা।


ব্যবসায়ীরা টানা দু’সপ্তাহ অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করছে। ধর্মঘট থাকায় সীমান্তে বাজারের ফটক বন্ধ রেখেছে বিজিবি। এদেশের ব্যবসায়ীরা বাজারে না প্রবেশ করায় ক্রেতা শুণ্য থাকায় ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও হাটে আসতে পারছে না। দু’দেশের সুনির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্ত না হলে এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ব্যবসায়ী নেতারা।


হাটে আসা ক্রেতা জাহাঙ্গীর জন্স জানান, আমি প্রতি হাটের দিন কেনাকাটা করতে যাই। তবে হাটে ভারতীয় অংশে কোন ধরনের খুচরা পণ্য বিক্রি হয় না। হরলিক্স, গুড়োদুধ, প্যামপাসসহ ভারতীয় সকল প্রসাধনী কার্টুনে বিক্রি হওয়ায় আমার মতো সাধারণ ক্রেতারা পণ্য কিনতে না পেরে ছোট খাট জিনিস কিনে ফিরতে হয়। হাটের নির্দিষ্ট পণ্যের বাইরেও বিক্রয় নিষিদ্ধ পণ্য নিয়মিত বিক্রি হলেও কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয় না। ভারতীয় মেয়াদোত্তীর্ণ বেশিরভাগ পণ্য স্বল্পমূল্যে অসাধু ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে পরবর্তীতে দেশীয় মুদি ও মনোহরি দোকানে বিক্রি করায় গ্রামীন ক্রেতারা ঠকছে।  


এদিকে হাট বন্ধ থাকায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দূর-দূরান্ত থেকে আগত ক্রেতা দর্শনার্থীরা পড়েছে বিপাকে। ক্রেতা-দর্শনার্থীরা দ্রুত সমস্যার সমাধান আশা করছেন। হাটে চোরাচালের বিষয়টি অস্বীকার করে ফেনীস্থ ৪ বিজিবি’র পরিচালক লে. কর্নেল শামীম ইফতেখার বলেন, বাংলাদেশ অংশে কোন ধরেনর চোরাচালান হয় না। সীমান্ত বাজারে আসতে সেদেশের (ভারত) নাগরিকদের কড়াকড়ি করেছে বিএসএফ। তাই বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সমস্যটি দ্রুত সমাধান হবে বলে তিনি আশা করছেন।


ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মেছবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল বলেন, হাট পরিচালনায় গঠিত কমিটির যৌথ মিটিং হলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। ফেনী জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান জানান, যেহেতেু হাটে অসম্য বাণিজ্য হচ্ছে সেহেতু ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশীয় ব্যবসায়ীরা। হাট চালু থাকলে লাভবান হয় ভারতের ব্যবসায়ীরা। আর বন্ধ থাকলেও তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ভারত থেকে যতক্ষণ না আমাদের সঙ্গে বিষয়টি সামাধানের জন্য বসতে রাজি হবে ততদিন আমরাও এটি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবো না। আমাদের ব্যবসায়ীরাও এ বিষয়ে একমত হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর