× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ড্রেনে স্বামীর মৃতদেহ, অতঃপর...

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৫ বছর আগে) জানুয়ারি ২২, ২০১৯, মঙ্গলবার, ৩:৪৭ পূর্বাহ্ন

রোববার। ভারতের গুরগাঁওয়ের বাজঘেরা এলাকায় একটি ড্রেনের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হলো একজন ট্যাক্সি চালকের মৃতদেহ। এ নিয়ে তদন্ত শুরু হলো। তদন্তে বেরিয়ে এলো তার স্ত্রী আরেক নারীসহ ৬ জন প্রতিবেশীর সহায়তায় হত্যা করেছে তার স্বামীকে। এরপর তিনিই ১৭ই জানুয়ারি থানায় গিয়ে স্বামী নিখোঁজের অভিযোগ করেন। পুলিশ তদন্তে দেখতে পেয়েছে, নিহতের স্ত্রীই একটি মোটরসাইকেলে করে স্বামীর মৃদতেহ ১৫ই জানুয়ারি বহন করে ফেলে গেছে ওই ড্রেনে। মোটরসাইকেলটিও সেখানে ফেলে গেছে।
ভারতের উত্তর প্রদেশের বুলান্দশাহরের অধিবাসী এই স্বামী স্ত্রী।
স্ত্রীর নাম সুইটি। তার স্বামী যোগিন্দর। তিনি ট্যাক্সি চালাতেন। তাদের ৫-৬ বছরের দাম্পত্য জীবন। শীতলা কলোনিতে ৫ বছর বয়সী একটি ছেলে ও ৩ বছর বয়সী একটি মেয়ে নিয়ে তারা একই বাড়িতে বসবাস করছিলেন। যোগিন্দরের সম্পদ বলতে ছিল একটি ট্যাক্সি ও কিছু সহায় সম্পদ। শেষের দিকে একে অন্য নারীর সঙ্গে যোগিন্দরের সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ হতে থাকে সুইটির। এতে তিনি স্বামী ও তার সম্পদ হারাবেন এ ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এ ঘটনায় নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড কমলের সঙ্গে যোগাযোগ করে সুইটি। তাতে আস্থায় আনে। দু’মাসের মধ্যে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পুলিশ বলেছে, টিভিতে প্রচারিত ক্রাইম পেট্রোল সিরিজ দেখে তা থেকে উৎসাহিত হয়েছে সুইটি। এই হত্যা মিশনে যোগ দেয় কমলেশের স্বামী কান্যাইয়া ওরফে কানি। তিনিই উত্তর পূর্ব দিল্লির জাগেরাম, মথুরার বিকাশ, নয়ডার যোগেশ ও বুলান্দশহরের প্রতাপের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদেরকে হত্যা পরিকল্পনায় যুক্ত করে। এসব মানুষের সবাই শীতলা কলোনিতে দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে।
হত্যা মিশন সম্পন্ন করার জন্য সুইটি তাদেরকে মোট ১৬ লাখ রুপি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। অগ্রিম হিসেবে পরিশোধ করে ২৫ হাজার রুপি। পরিকল্পনামতো, ১৫ই জানুয়ারি তার মিশনের সবাইকে মধ্যরাতে তার বাড়িতে ডেকে নেয়। এ সময় তার স্বামী ছিলেন গভীর ঘুমে। তারা এ সময় একটি বালিশ দিয়ে যোগিন্দরের মুখ-নাক চেপে ধরে তার শ্বাসরোধ করে। কাঠের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে প্রহার করে হত্যা করে। আগে থেকেই এসব ঘরের ভিতর নিয়ে রাখা ছিল। এই হত্যা মিশনের সময় সব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করছিল সুইটি।
এরপর তারা মৃতদেহকে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে ফেলে। তা তুলে দেয় একটি মোটরসাইকেলে। মোটরসাইকেলে করে তা টেনে নিয়ে যাওয়া হয় বাজঘেরা এলাকায়। সেখানে একটি ড্রেনের ভিতর ফেলে দেয়া হয় যোগিন্দরের মৃতদেহ। এর দুইদিন পরে সুইটি সেক্টর ৫ পুলিশ স্টেশনে গিয়ে তার স্বামী নিখোঁজ হওয়ার একটি অভিযোগ দাখিল করে। এতে তিনি দাবি করেন, যোগিন্দর কিছু না জানিয়ে ১৫ই জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। ওইদিন তিনি কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।
২০ শে জানুয়ারি পুলিশ বাজঘেরা এলাকায় একটি ড্রেনের ভিতর থেকে আঘাতের চিহ্নসম্বলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে। তারা এর পাশে থেকে উদ্ধার করে একটি মোটরসাইকেল। পুলিশের মুখপাত্র সুভাষ বোকান বলেছেন, মোটর সাইকেল পাওয়ায় তারা এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন। যোগিন্দরের পরিবারের বিবৃতির ওপর ভিত্তি করে তারা এগুতে থাকেন। যোগিন্দরের ভাই রাজপাল সংশয় প্রকাশ করেন তার ভাবিকে নিয়। এর ফলে সুইটিকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুইটিই সব কিছু স্বীকার করে নেয়। সোমবার সকালে কমলেশ, কান্নি ও অন্য চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদেরকে দু’দিনের পুলিশি রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। পুলিশ বলেছে, হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করতে পারবে বলে আশা করছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর