অ্যালেক্স হেলস যখন ৫৪ তখন ১০ বলে ৪ রানে ব্যাট করছেন ক্রিস গেইল। বিপিএল’র চলতি আসরটা বেশ খারাপই যাচ্ছিলো টি-টোয়েন্টি দানবের। কাল হঠাৎ করেই জেগে উঠলো তার ব্যাট। আউট হওয়ার আগে খেললেন ৪০ বলে ৫৫ রানের ইনিংস। আগের ৫ ম্যাচে গেইলের সব মিলিয়ে সংগ্রহ ছিল ৩৯ রান। কিন্তু সেই গেইলের ব্যাটে চড়ে জয়ের কক্ষপথে থাকলো রংপুর রাইডার্স। শেষ ওভারে খানিকটা উত্তেজনা ছড়িয়ে ছিল ম্যাচে। মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে রংপুর রাইডার্সের জিততে ছয় ওভারে প্রয়োজন ছিল সমান ৬ রান।
ইয়াসির শাহ্র বলে প্রথম বলেই আউট হলেন মোহাম্মদ মিঠুন। কিন্তু ম্যাচের তিন বল বাকি থাকতেই বিশাল ছ’য়ের মার হাঁকিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিলেন রাইলি রুশো। ৮ ম্যাচে ৪ জয়ে দলটি উঠে এসেছে পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে। অন্যদিকে সমান সংখ্যক ম্যাচে ৭টিতেই হেরেছে খুলনা টাইটান্স।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমেছিল খুলনা টাইটান্স। হারের বৃত্ত থেকে বের হতে দারুণ মরিয়া ছিল দল। ব্যাট করতে নেমে তাই মরিয়া ছিল বড় সংগ্রহ তুলতে। কিন্তু দুই ওপেনার আবারো ব্যর্থ। প্রথমে আল আমিন ৪ রানে আউট হন। এরপর দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী জুনায়েদ আউট হন ১৩ রানে। তবে দলের হাল ধরেন টানা ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত। এই তরুণকে সঙ্গ দেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটার ব্রেন্ডন টেইলর। খুলনার হয়ে চলতি আসরে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৩২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের ব্যাট থেকে আসে ৩২ রানের ইনিংস। তবে দলের ৭৮ রানের সময় তাকে সাজঘরের পথ দেখান ক্রিস গেইল। এরপর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন শান্ত। কিন্তু ২০ বলে ২৯ রান করে মাহমুদুল্লাহ আউট হন ফরহাদ রেজার বলে। এরপর ফরহাদের তৃতীয় শিকার হন ৪৮ রান করা শান্ত। ৩৫ বলের ইনিংসে খেলেন ২ চার ও ৩ ছ’য়ের মার। এরপর ব্যর্থতার ধারা অব্যাহত রেখে দলের ১৫৪ রানের সময় আউট হন আরিফুল হক (৬)। ফরহাদ তুলে নেন তার চতুর্থ শিকার। কিন্তু সেখান থেকে ঝড় তোলেন ভিসা। ১৫ বলে ৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ৩ চার ও ২ ছ’য়ের সাহায্যে।
অ্যালেক্স হেল, ক্রিস গেইল, এবি ডি ভিলিয়ার্সরা যে দলের টপ অর্ডারে। সেখানে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৮২ রানের লক্ষ্যটাও কঠিন নয়। হলোও তাই, ওপেন করতে গেইলকে এক পাশে দাঁড় করিয়ে রেখে ঝড় তুলেন ইলিশ ক্রিকেটার হেলস। রংপুরের হয়ে আগের ৪ ইনিংসে ছিল তার সব মিলিয়ে ৪৮ রান। গতকাল ২৯ বলে ৮ চার ও ৩ ছ’য়ে খেলেন ৫৫ রানের ইনিংস। বিপিএল-এ এটি তার প্রথম ফিফটি। এরপরই তিনি আউট হন। তখন গেইলের নামের পাশে ২৩ রান তাও ১৭ বলে। সেখান থেকে দলকে একটু একটু করে এগিয়ে নিতে থাকেন গেইল। তার সঙ্গে যোগ দেন আরেক ঝড় ভিলিয়ার্স। ৩ চার ও চার ছ’য়ের মারে পৌঁছে যান ৪১ রানে। দলের স্কোর বোর্ডে তখন ১২১ রান। কিন্তু ঠিক মনে হচ্ছিল দু’জনই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়বেন। কিন্তু ঠিক সেই সময় মাহমুদুল্লাহর বলে এলবি’র ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটিং জিনিয়াস। তবে গেইল এক প্রান্ত আগলে রাখেন। ১৮.৪ ওভারের সময় দলের জয়ের জন্য যখন ১১ রান প্রয়োজন তখন ৫৫ রানে আউট হন তিনি। হাঁকান ২ টি চার ৬টি ছ’য়ের মার। এরপর ১৫ রান করা মিঠুন আউট হরেও রুশো ১০ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন নাহিদুল ইসলামকে নিয়ে। চার উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন অভিজ্ঞ ফরহাদ রেজা।