× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কক্সবাজারে অপহরণের পর শিশুর লাশ উদ্ধার ঘাতক নারী আটক

এক্সক্লুসিভ

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
২৩ জানুয়ারি ২০১৯, বুধবার

কক্সবাজারের চকরিয়ায় পৌরসভার সুবজবাগ আবাসিক এলাকা থেকে অপহরণের ১৮ ঘণ্টা পর আড়াই বছর বয়সী শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকাল ১০টার দিকে মাতামুহুরীর ব্রিজের দক্ষিণ পাশের সবজি ক্ষেত থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। পুরো কক্সবাজারজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মুন্নী আক্তার নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আটককৃত মুন্নি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাটাখালী খোন্দকার পাড়ার খলিলুর রহমানের মেয়ে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত ২ বছর ৬ মাস বয়সী শিশুর নাম মো. আল ওয়াসী।
সে চকরিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সবুজবাগ আবাসিক এলাকার ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিন ও রুনা আক্তারের পুত্র।

শিশু ওয়াসীর পিতা সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘সোমবার বিকাল ৪টার দিকে ওয়াসী ও তার চারবছর বয়সী বড় বোন বাড়ির উঠানে খেলা করছিলো। এ সময় বোরকা পরিহিত এক মহিলা ওয়াসীর হাতে একটি চিপসের প্যাকেট দিয়ে তাকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। ছেলেকে বাড়িতে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর স্থানীয়দের সূত্রে জানতে পারি এক মহিলা ওয়াসীকে নিয়ে গেছে। পরে বিষয়টি চকরিয়া থানার ওসি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে শিশু অপহরণের ঘটনাটি অবহিত করি।’

তিনি আরো বলেন, ‘ছেলেকে না পাওয়ার খবর বাড়িতে এসে জানতে পারি। পরে স্থানীয়দের দেয়া তথ্যমতে পৌর এলাকার খোন্দকারপাড়ার মুন্নি আক্তার নামের এক মহিলা ওয়াসীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় নিশ্চিত হই।
ওয়াসীর পিতা দাবি করেন, অপহরণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত মুন্নি আক্তারের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন আগে পারিবারিকভাবে বিবাহের কথাবার্তা হয়েছিল। পরে নানা কারণে আটককৃত মুন্নির সঙ্গে বিবাহ না হওয়ায় প্রতিশোধের অংশ হিসেবে আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ পূর্বক হত্যা করেছে।’

    কান্না ও বিলাপ করতে করতে শিশু ওয়াসীর মা রুনা আক্তার বলেন, ‘পাড়ার শিশুদের মধ্যে সবার প্রিয় ছিল ওয়াসী। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সে ছোট। প্রতিদিন বিকালে পাড়ায় নিয়মিত খেলা করতো। বিকাল হলেই বাসায় কোনোভাবেই বেঁধে রাখা যেত না। বড় বোনকে নিয়ে ছুটত বাড়ির পাশে খেলার মাঠে। ওয়াসী খেলতে না  গেলেই যেন মন ভরতো না। পাড়ার ছোট-বড় সবার কাছে ওয়াসী খুব আদরের ছিল। তিনি এভাবে কথাগুলো বলছিলেন।

     রুনা আক্তার বলেন, ‘ওয়াসীর বড় বোন স্কুল থেকে এসে ভাইকে নিয়ে খেলতো। তখন আমি সাংসারিক কাজ করতাম। ওকে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল। প্রথম ছেলে সন্তান। এতটুকু ছেলেকে কেমনে মারছে। বুক কাঁপল না ওর। এখন কাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখবো? এখন ওয়াসী নেই আমাদের স্বপ্নও বিলীন হয়ে গেল। জীবনের এখন সব শেষ হয়ে গেছে।’
নিহত শিশু ওয়াসীর নিকট আত্মীয় ও চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেজাউল করিম বলেন, ‘ওয়াসী আমার নিকট আত্মীয়। ওয়াসীর এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড দেখে চোখের জল আর ধরে রাখতে পারছিলেন না। তাকে নিয়ে ওর পরিবারের অনেক স্বপ্ন ছিল। এখন ওর পরিবারের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।’

ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে কাউছার উদ্দিন কছির লিখেন, ‘কোমলমতি নিষ্পাপ শিশু ওয়াসীকে যারা হত্যা করেছে তারা মানুষের কাতারে নেই। এমন নিষ্ঠুর হত্যাকারীর বিচার না হলে  কোনো শিশুরই নিরাপত্তা থাকবে না।’
 হাফিজ আল আসাদ নামের একজন লেখেন, এমন ববর্রতা মানা যায় না, যেখানে আমরা উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, সেখানে মানুষ প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে আড়াই বছরের নিষ্পাপ শিশু হত্যা করে! এই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা পুরো সমাজকে কলঙ্কিত করে।’

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ওয়াসীকে অপহরণের কয়েক ঘণ্টা পর ভুক্তভোগীদের বর্ণনা অনুযায়ী মুন্নী আক্তার নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে সকালে মাতামুুহুরীর ব্রিজ এলাকা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর