সাভারে ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে মাছ ও মুরগির খাদ্য তৈরির ৬টি কাখানায় অভিযান পরিচালনা করেছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসব কারখানা থেকে ১১ হাজার টনেরও বেশি পরিমাণ ভেজাল খাদ্য জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া এ কাজের সঙ্গে জড়িত থাকায় আট ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা প্রদান করা হয়েছে। গতকাল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ঢাকা কার্যালয় এবং র্যাব-৪ এর যৌথ উদ্যোগে সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের মোগড়াকান্দা এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। সাজাপ্রাপ্তরা হলো- দুটি কারখানার ম্যানেজার জানু মিয়া মানিক (৩৫) ও আজিজুল (৪০) এবং সাধারণ কর্মচারী মিজান (২১), সেনু মিয়া (৩৫), শাহাবুদ্দিন (৩০), আবুল হোসেন (৪০), আনু মিয়া (২৭) ও মনির (২১)। ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, এ ধরনের বিষাক্ত ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে এখানে মাছ এবং মুরগির জন্য যে খাবার তৈরি করা হচ্ছে তা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কারণ এসব মাছ এবং মুরগিতে যে পরিমাণ ক্রোমিয়াম রয়েছে তার আট শ’ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায়ও নষ্ট হয় না। সেখানে আমরা মাত্র এক শ’ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রান্না করে খাচ্ছি।
এ থেকে ক্রোমিয়াম মানবদেহে প্রবেশ করে লিভার, লাঞ্চ, কিডনি এবং ব্রেনের সমস্যা হবে এবং আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারাবে। অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, আইন অনুযায়ী হাইকোর্টের আদেশ রয়েছে কোনোভাবেই ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে পোল্ট্রিফিড তৈরি করা যাবে না। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে পোল্ট্রি ফিড তৈরি করে পোল্ট্রি শিল্পকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়ার পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্যকেও বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। আমরা বলতে চাই জাতীয় স্বার্থে এ ধরনের অপরাধ যেন ভবিষ্যতে কেউ না করে। এখান থেকে ১১ হাজার টনেরও বেশি পরিমাণ বিষাক্ত পোল্ট্রিফিড জব্দ করা হয়েছে। যা এ যাবৎকালের অভিযানের মধ্যে পরিমাণে সবচেয়ে বেশি। আজকে ৮ জনকে আটক করে দুই জনকে এক বছর করে বিনাশ্রম কাড়াদণ্ড এবং বাকি ৬ জনকে এক মাস করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনার সময় র্যাব-৪ এর নবীনগর ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর আব্দুল হাকিম, সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফজলে রাব্বী মণ্ডলসহ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।